প্রথমবারের মতো ব্লাকহোলের প্রকৃত ছবি ধারণ

বিশ্ববাসী প্রথমবারের মতো ব্লাকহোলের প্রকৃত ছবি দেখতে পাবে। এযাবত যেসব ছবি প্রকাশ করা হয়েছে- সেগুলোতে শিল্পীর কল্পনা এবং কম্পিউটারের ব্যবহার করা হয়েছে।

আজ বুধবার গ্রীনিচমান সময় ১৩০০টায় বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বিজ্ঞানীরা ৬টি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই ছবি প্রচার করবে। ইভেন্ট হরাইজোন টেলিস্কোপ (ইএইচটি) এই ছবি তুলেছে।

গত ৫০ বছর ধরে জ্যোতি বিজ্ঞানীরা ব্লাকহোলের ছবি তোলার চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। এএইচটি এই প্রথম সরাসরি ব্লাকহোলের ছবি ধারণ করেছে। ডার্ক এনার্জি ও ডার্ক ম্যাটার এবং ব্লাকহোলসহ মহাবিশ্বের সব শক্তি উৎস মানুষের চোখে দেখা ও জানা সম্ভব হয়নি। ব্লাকহোল সরাসরি দেখার প্রাণান্তকর চেষ্টায় শেষ পর্যন্ত এর ছবি ধারণ সম্ভব হয়েছে।

ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি এবং ব্লাকহোল সনাক্তকরণে এলআইএসএ’র (লেসার ইন্টারফেরোমিটার স্পেস এন্টেনা) প্রজেক্ট সায়েন্টিস্ট পল ম্যাকনামারা বলেছেন, ‘বহুবছর ধরে আমরা পরোক্ষভাবে বস্তুসমূহের পুঞ্জিভূত অবস্থার প্রমাণ পেয়েছি’ এলআইএসএ মিশন এখন মহাকাশের ম্যাসিভ ব্লাকহোল সনাক্ত করবে।

২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের লিগো (এলআইজিও,লেসার ইন্টারফেরোমিটার গ্রাভিটেশনাল- ওয়েভ অবজারভেটরি) গভীর মহাকাশে দুইটি ব্লাক হোলের সংঘর্ষ ও একীভূত হওয়ার ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে।

ম্যাকনামারা বলেন, সরাসরি দেখতে না পেলেও একসঙ্গে রেডিও ওয়েব, লাইট এবং গ্রাভিটেশনাল ওয়েব ব্লাকহোলের অস্তিত্ব নিশ্চিত করে,যদিও আমরা তা কখনোই সরাসরি দেখতে পাইনি।’

এই প্রথম আমাদের মিল্কি-ওয়ে গ্যালাক্সির কেন্দ্রে প্রচন্ড উজ্জ্বল ও ঘণীভূত এলাকায় সরাসরি ব্লাকহোল প্রত্যক্ষ করা সম্ভব হয়েছে।

ব্লাকহোলের চারদিকে ঘূর্ণায়মান বস্তুপুঞ্জের ভর আমাদের সূর্যের চেয়ে চল্লিশ লাখ গুণ বেশি এবং এই বস্তুপুঞ্জ ২৪ মিলিয়ন কিলোমিটার জুড়ে ছড়িয়ে আছে। গ্যালাক্সির ওই কেন্দ্র থেকে পৃথিবীর দূরত্ব ২৬ হাজার আলোকবর্ষ (২৪৫ ট্রিলিয়ন কিলোমিটার)। পৃথিবীর টেলিস্কোপ থেকে গ্যালাক্সির কেন্দ্রে ঘণিভূত বস্তুপুঞ্জের মাঝে ব্লাকহোল ছবিতে হবে চাঁদের ওপর একটি গলফ বল।

ম্যাকনামারা বলেন, ব্লাকহোলের সরাসরি ছবি তোলার মাধ্যমে আলবার্ট আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্বের ধারণা প্রমাণিত হলো।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top