নাইটদের ভরাডুবিতেও তাণ্ডব রাসেলের

চিপকে সুপার কিংসকে মাত্র ১০৯ রানের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁড়ে দেওয়ার পর জয়ের স্বপ্ন দেখেননি অতি বড় নাইট সমর্থকও। স্বল্প রানের পুঁজি নিয়ে যা হওয়ার তাই হল। ১৬ বল বাকি থাকতে নাইটদের হারিয়ে আইপিএলের পঞ্চম জয় তুলে নিল চেন্নাই সুপার কিংস। একইসঙ্গে ফের লিগ টেবিলের শীর্ষে চলে গেল ধোনিব্রিগেড।

চিপকে এদিন টস জিতে নাইটদের প্রথমে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান চেন্নাই দলনায়ক ধোনি। প্রথম তিন ওভারে ক্রিস লিন, সুনীল নারিন ও নীতিশ রানার উইকেট হারাতেই ললাটলিখন একপ্রকার স্পষ্ট হয়ে যায়। বল হাতে জ্বলে ওঠেন সুপার কিংস পেসার দীপক চাহার। পাশপাশি হরভজন-তাহির এবং জাদেজা এই স্পিন ত্রয়ীর সামনে কার্যত থরহরি কম্প নাইট ব্যাটসম্যানরা মাথা তুলেই দাঁড়াতে পারেননি।

নাইট ব্যাটসম্যানদের হারাকিরির মাঝে ব্যাট হাতে একমাত্র উজ্জ্বল ক্যারিবিয়ান আন্দ্রে রাসেল। ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ফের একবার নাইট শিবিরে ভরসার স্থলপাত্র হয়ে উঠলেন দ্রে রাস। একাদশতম ওভারে ক্রিজে নেমে শেষ অবধি নাইট শিবিরে ভরসা জোগালেন তিনি। তাঁর ৪৪ বলে অপরাজিত ৫০ রানে ভর করে কোনক্রমে ১০০’র গন্ডি পার করে নাইট রাইডার্স। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১০৮ রান তোলে তারা। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের পাশাপাশি ৩ উইকেট তুলে নেন চাহার। দু’টি করে উইকেট নেন হরভজন ও তাহির। একটি উইকেট দখল করেন জাদেজা।

লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে শুরুতেই মারমুখী হয়ে ওঠে ওয়াটসন। তবে ৯ বলে ১৭ রান করে নারিনের শিকার হন তিনি। ক্রিজে জাঁকিয়ে বসার আগে রায়নাকেও দ্রুত ডাগ-আউটে ফেরান ক্যারিবিয়ান স্পিনার। কিন্তু তৃতীয় উইকেটে ডু’প্লেসি-রায়ডুর ৪৬ রানের পার্টনারশিপে ভর করে ধীরে ধীরে লক্ষ্যমাত্রার দিকে এগিয়ে যায় চেন্নাই। অন্যদিকে স্বল্প রানের পুঁজি নিয়ে ম্যাচ জয়ের জন্য নাইটদের প্রয়োজন ছিল দ্রুত উইকেট। সেই লক্ষ্যপূরণে ব্যর্থ হয় তারা।

রায়ডু ২১ রানে ফিরলেও ৪৩ রানে অপরাজিত থেকে দলকে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান ডু’প্লেসি। ৮ রানে অপরাজিত থাকেন কেদার যাদব। ফলস্বরূপ হাইভোল্টেজ দ্বৈরথকে কার্যত একপেশে পরিণত করে সহজ জয় তুলে নেয় ধোনিব্রিগেড। ব্যাটে-বলে দুরন্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে ফের লিগ শীর্ষে ইয়েলো ব্রিগেড।

আন্দ্রে রাসেল যদি ৪৪ বলে অপরাজিত ৫০ রানের ইনিংস না খেলতেন তাহলে আরও লজ্জায় পড়ত কেকেআর। রাসেল পাঁচটি বাউন্ডারি ও তিনটি ওভার বাউন্ডারি হাঁকান। তবে বিগত ইনিংসগুলির মতো আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে পারেননি রাসেল। পিচ ব্যাটিং সহায়ক ছিল না। বল টার্ন করছিল। তার উপর একের পর এক উইকেট পড়তে থাকায় পুরো চাপটা গিয়ে পড়েছিল রাসেলের কাঁধে। প্রবল চাপ উপেক্ষা করেও রাসেল নিজের সেরাটা মেলে ধরে চিপকে উপস্থিত দলের অন্যতম মালিক শাহরুখ খানের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করেন। তবে আট রানে রাসেলের আকাশ ছোঁয়া উচ্চতায় ওঠা ক্যাচ হরভজন সিং যদি না ফেলতেন তাহলে এক শ’র অনেক আগেই থেমে যেত কেকেআরের ইনিংস। ত্রয়োদশ ওভারে ইমরান তাহিরের দ্বিতীয় ডেলিভারিতে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ব্যাটে-বলে সঠিকভাবে সংযোগ ঘটাতে পারেননি রাসেল। অনেক উঁচুতে ক্যাচ তোলার পরেই হতাশায় মাথা নিচু করে নেন কেকেআরের ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডারটি। কিন্তু হরভজন সিং ক্যাচের নাগাল পাননি। রাসেল জীবন পাওয়ার পর স্বস্তি ফেরে কেকেআর শিবিরে। সেই রাসেলই কেকেআরকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top