ফেনীর পরীক্ষা কেন্দ্রে দগ্ধ শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিয়ার অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার পর থেকে শুরু হয়ে অস্ত্রোপচার চলে দুপুর ১২টা পর্যন্ত।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান প্রফেসর ডা: আবুল কালাম। তিনি বলেন, মেয়েটির যেহেতু অনেকাংশ পুড়ে গেছে তাই তার শ্বাস–প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। সে যাতে স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে পারে সেজন্য এই অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।
আবুল কালাম জানান, বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তার একটি অস্ত্রোপচার করা হবে। সেই সিদ্ধান্ত সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকদের জানালে তারা একমত পোষণ করেন। এখন সে আগের থেকে একটু ভালো আছে।
তিনি জানান, অস্ত্রোপচারের সর্বশেষ রিপোর্ট ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আবার সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে। পাঠানো এসব বিষয় নিয়ে বিকেলে আবার তাদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে কথা হবে।
এদিকে, অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় নুসরাতকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আপাতত সিঙ্গাপুরে নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। অবস্থা স্থিতিশীল হলে তখন তাকে সেখানে নেয়া যেতে পারে বলে মত দিয়েছে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় নুসরাতের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকদের সাথে কথা বলেছেন ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটের চিকিৎসকরা।
এরপর সকাল ১০টায় এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা: সামন্তলাল সেন।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমরা নুসরাতের চিকিৎসা-সংক্রান্ত সমস্ত ডকুমেন্ট আদান-প্রদান করেছি। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা তা দেখে আপাতত নুসরাতকে সেই দেশে নেয়াটা ঝুঁকিপূর্ণ বলে মত দিয়েছেন। এ কারণে এই মুহূর্তে তাকে সিঙ্গাপুর নেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
এর আগে গতকাল সোমবার সামন্ত লাল সেন জানিয়েছিলেন, সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নুসরাতকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তার অবস্থা ভালো না। শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। ভর্তি হওয়ার পর থেকেই নুসরাতকে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল, এখন লাইফ সাপোর্ট আছে।’
শ্লীলতাহানির মামলা তুলে না নেয়ায় ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলা তার অনুসারীদের দিয়ে গত ২৭ মার্চ নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা চালান বলে মেয়েটির স্বজনদের অভিযোগ।