নগরীর ডেমরায় অপহরণের দুই দিন পরে মো. মনিরুল ইসলাম (৭) নামে এক ছেলে শিশুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে ডেমরা থানা পুলিশ। সোমবার বিকালে ডেমরার বাঁশেরপুল ডগাইর এলাকার নূরে আয়েশা সিদ্দিকিয়া মাদ্রাসার নির্মাণাধীন মসজিদ থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। মৃত মনিরুল ইসলাম ওই মাদ্রাসার ছাত্র ও ডেমরার ডগাইর নতুনপাড়া এলাকার সামসু মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া মো. সাইদুল হকের ছেলে। তাদের গ্রামের বাড়ী বি-বাড়িয়ার শরাইল থানার বিটগর গ্রামে। এ ঘটনায় ওই মসজিদের ঈমামসহ তার ছেলে ও মসজিদের মুয়াজ্জিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
মৃতের পরিবার, প্রত্যক্ষদর্শী ও ডেমরা থানা পুলিশ সুত্রে জানা যায়, রোববার সকাল ৭টায় মনিরুল যথারীতি মাদ্রাসায় যায়। তারপর থেকেই ছেলেটিকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এ ঘটনায় মৃতের পরিবার রোববার রাতে এলাকায় মাইকিং করেন। পরে ওই দিন রাত ৮টার দিকে মৃতের বাবার কাছে অজ্ঞাত মোবাইল নম্বর থেকে ফোন আসে। এ সময় অপরহরণকারী মনিরুলের বাবার কাছে তার মুক্তিপণ হিসেবে ৩ লাখ টাকা দাবি করেন। আর দাবিকৃত টাকা ওই মসজিদের খাটিয়ার নিচে রাখতে বলেন।
আরো জানা যায়, রোববার দিনগত রাত ২টার দিকে বাবা সাইদুল হক তার ভাইসহ নূরে আয়েশা সিদ্দিকিয়া মাদ্রাসার ঈমামের কাছে এক লাখ টাকা রেখে আসেন। এ সময় তারা ঈমামের কাছে সব ঘটনা খুলে বলেন, যাতে টাকা নেয়ার সময় ঈমাম অপহরণকারীকে চিনতে পারেন। তবে ওই রাতে অপহরণকারীরা টাকা নিতে আসেনি। এ ঘটনায় সোমবার বিকালে কালবৈশাখী ঝড়ের পর অপহরণকারীরা মৃতের বাবার মোবাইলে ফোন করে ছেলের লাশের খবর জানায়। পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ ওই মসজিদের দোতলার সিঁড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করে। এ সময় শিশুটির মুখ দিয়ে রক্ত দেখা গেছে। তার পরনে ছিল সাদা-নীল রঙের ছাপা পাঞ্জাবি ও ফুল প্যান্ট।
এ ঘটনায় ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। সোমবার সন্ধার পরে এলাকার শত শত মানুষ শিশু মনিরুল ইসলাম হত্যায় খুনির ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে।
এ বিষয়ে ডেমরা জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. রবিউল ইসলাম বলেন, মুক্তিপণ না পেয়ে শিশুটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। সুরতহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য লাশ নগরীর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। এ বিষয়ে অবশ্যই হত্যা মামলা দায়ের করা হবে।