জামালপুর-৩ (মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য সাবেক বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেছেন, আমরা যেহেতু রাজনীতি করি, তাই ক্ষমতা আর জেলখানা খুব কাছাকাছি। ক্ষমতাচ্যুত হলেই জেলখানা আবার জেলখানা থেকে বের হয়ে এসেই মন্ত্রীত্বের শপথ নেই।
তিনি বলেন, আমরা যারা রাজনীতি করি তাদের দ্বিতীয় ঠিকানা হলো ওই জেলখানা। তাই আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছি, অনতিবিলম্বে জামালপুরের জেলখানাটি সংস্কার করে দিবেন, যা হবে অত্যাধুনিক, উন্নতমানের এবং আন্তর্জাতিক মানের। আমাদের যদি কখনো জেলখানায় যেতে হয়, তবে যেন আরাম-আয়েশে থাকতে পারি। চোর-ডাকাত আর খুনির জন্যই তো শুধু জেলখানা না, রাজনীতিবিদদেরও ওই জেলখানায় যেতে হয়।
জামালপুর শহরের পলাশগড় এলাকায় রোববার রাতে মাসব্যাপী তাঁত বস্ত্র ও কুটির শিল্প মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা সন্ত্রাসীদের ঘৃণা করবো, আমরা মাদককে ঘৃণা করবো, আমরা জঙ্গিবাদকে ঘৃণা করবো। সন্ত্রাস, মাদক ও জঙ্গিবাদ যেন আমাদের স্পর্শ করতে না পারে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, আমাদের মাঝেই আছে জঙ্গি, আমাদের মাঝেই আছে সন্ত্রাসী এবং আমাদের মাঝেই আছে মাদক ব্যবসায়ী। আমি পুলিশ প্রশাসনকে বলবো সন্ত্রাসী যেই হোক, তার যেই পরিচয়ই থাকুক, যেই চাঁদাবাজ হোক, তার বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জিরো টলারেন্স’। আমরা আওয়ামী লীগের যে মূল নেতৃত্ব আপনাদের সহযোগিতা দেব। আওয়ামী লীগের যে সহযোগী সংগঠনের মূল নেতৃত্ব আপনাদের সহযোগিতা দিবে এবং আপনাদের সাহস যোগাবে। ওইসব বিষয়ে আপনারা (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) কখনো কম্প্রোমাইজ করবেন না।’
সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও যুবদের সহায়তায় জামালপুর অপরাজেয় বাংলাদেশের আয়োজনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে বক্তৃতাকালে জামালপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মো: মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, ‘শুধু জামালপুর শহর নয় পুরো জেলাকে মাদকমুক্ত করবো। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে আমার কাছে মাদকের সংবাদ আসে। এরপর পুলিশকে বললে অ্যাকশনে যায় তারা। কিন্তু পুলিশ সব জানে, কোথায় মাদক বিক্রি হয়। আপনারা অ্যাকশনে যান, মাদক বিক্রেতাদের ধরুন, তবেই আমরা বুঝবো আপনারা কাজ করছেন। এক কথায়, পুলিশী অ্যাকশন না থাকায় দিন দিন মাদক আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাদকের ব্যাপারে আমি কঠোর। মাদকের কারণে দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে এবং আগামী দিনে আমরা কোন ভালো ছেলে পাব না। সন্ত্রাস দমন করা যায়। কিন্তু মাদক যেভাবে সমাজে প্রসারিত হয়েছে, তা বন্ধ করা না হলে যুব সমাজ শেষ হয়ে যাবে। মূলত আমাদের রাজনৈতিক ছত্রছায়ার এগুলো আরো বেশি হয়। অনেক ব্যবসা আছে, সেসব ব্যবসা করেন, মাদকের ব্যবসা কেন করতে হবে? আসুন আমার সবাই মিলে জেলা আওয়ামী লীগ এবং মির্জা আজম সাহেবের নেতৃত্বে মাদকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই। এজন্য শক্ত হাতে মাদকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে এবং পুলিশী অভিযান অব্যাহত থাকতে হবে।’
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী রেজাউল করিম হীরা। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ বাছির উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট বাকী বিল্লাহ, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুম রেজা রহিম, সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার চন্দ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মেলা পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ছরোয়ার হোসেন শান্ত।