জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তান এবং স্বাধীনতাকামীদের দ্বন্দ্বের ইতিহাস অনেক পুরনো। কিন্তু দীর্ঘ ইতিহাসে, চলতি বছর এখনো শেষ হয়নি; কিন্তু গত তিন মাসেই সহিংসতায় নিহত হয়েছেন ১৬৩ জন। একটি মানবধিকার প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে আনাদোলু এজেন্সি ও তথ্য জানিয়েছেন।
একটি সূত্র জানায়, গত তিন দশকে স্বাধীনতাকামীদের চেয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী নিহত হয়েছে সবচেয়ে বেশি। গত তিন মাসে ৮৪ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছে। ভারতীয় জাওয়ানসহ স্বাধীনতাকামী ৫৮ জন ও বেসমারিক ২১ জন নিহত হয়েছে।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়মায় ভারতীয় একটি আধাসামরিক বাহিনীর ওপর কাশ্মীরের এক বিদ্রোহীর আত্মঘাতী হামলায় ৪৮ জন নিহত হয়। ১৮ ফেব্রুয়ারি ফের স্বাধীনতাকামী বিদ্রোহীদের হামলায় মেজরসহ পাঁচ ভারতীয় সেনা নিহত হয়। এছাড়াও আত্মহত্যা করে মারা যায় সাত জাওয়ান। অন্তঃকোন্দলে নিহত হয় আরো তিন সেনা সদস্য।
বেসামরিক লোকদের মধ্যে ঢুকে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের হামলায় নিহত হয় ৭ জন। সীমান্তে গুলি বিনিময়ে ছয়জন এবং গ্রেনেড ও আইইডি বিস্ফেরণে আরো চারজন নিহত হয়।
সর্বশেষ, ৬ মে ছুটিতে থাকা এক সেনা সদস্যকে ঘরে ঢুকে গুলি করে হত্যা করেছে স্বাধীনতাকামীরা।
পৃথিবীর ভূ-স্বর্গখ্যাত, অখন্ড কাশ্মীরকে নিজেদের বলে দাবি করছে ভারত-পাকিস্তান। কাশ্মীরের ৪৩ অংশ রয়েছে ভারতের দখলে, পাকিস্তানের কাছে রয়েছে ৩৭ ভাগ। ছোট একটি অংশ দখল করে আছে চীন।
১৯৪৭ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত তিনটি যুদ্ধের মুখোমুখি হয় ভারত-পাকিস্তান। এর মধ্যে দু’টি যুদ্ধ ছিল কাশ্মির নিয়েই। ১৯৪৮ সালে প্রথম এবং ১৯৬৫ সালে দ্বিতীয়বার যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে দেশ দুটি। ১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধেও জড়ায় দুই দেশ।
দেশ ভাগের পর থেকেই ভারত-পাকিস্তানের দাবার ঘুঁটি হয়ে আছে এই ভুখণ্ডটি। দুই দেশের মাঝখানে পড়ে ভারতীয় সেনাদের হাতে প্রতি বছর নৃশংস নির্যাতনের শিকার হতে হয় শত শত কাশ্মীরি নারী-পুরুষদের। এই নৃশংসতা রেহাই পায় না শিশুরাও।