ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নকারী শিক্ষককে চাকরিচ্যুতির দাবিতে ক্যাম্পাস উত্তাল

বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সাযেন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক মোঃ আক্কাস আলীকে চাকরিচ্যুত ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার করাসহ পাঁচদফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

রোববার সকাল থেকে বিশ্বাবিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ শুরু করেন। পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশ অব্যাহত রাখেন। এসময় দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।

শিক্ষার্থীদের অন্যান্য দাবিগুলো হলো- ভূক্তভোগী ছাত্রীদের যাতে আর কোনো হয়রানি না করা হয় তার নিশ্চয়তা দেয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক কার্যদিবস ব্যতীত অফিস ছাড়া অন্য কোথাও ছাত্রীদের ডাকতে পারবেন না, কোনো শিক্ষার্থীকে শিক্ষক প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করার হুমকি দিতে পারবেন না। এরকম কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করতে হবে। ডিপার্টমেন্ট ভিত্তিক ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিতে হবে।

উল্লেখ্য, শনিবার অভিযুক্ত শিক্ষক কর্তৃক দুই ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অডিও রেকর্ড ভাইরাল হওয়ায় ক্যাম্পাসে তোলপাড় শুরু হয়। পাশাপাশি ক্যাম্পাস জুড়ে সৃষ্টি হয় চাপা ক্ষোভ ও উত্তেজনার।

এর আগে গত ২৪ জানুয়ারী অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠলে তাকে সতর্ক করে দেয়া হয় এবং ক্যাম্পাস ছুটির দিনে কোনো শিক্ষার্থীকে থিসিস জমা দেয়া-নেয়া বা কোনো কারণে অফিস বা বাসভবনে ডাকা যাবে না বলে সিদ্বান্ত নেয় কতৃপক্ষ।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আশিকুজ্জামান ভূইয়া জানান, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও অভিযোগের প্রেক্ষিতে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক মোঃ আক্কাস আলীকে সকল প্রকার কার্যক্রম থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে।

আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা জানায়, সকল অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরেও আক্কাস আলীর বিরুদ্ধে প্রশাসন কোনোরূপ ব্যবস্থা নেয়নি। এ কারণে আমরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছি, কোনো যৌন হয়রানিকারীকে আমরা শিক্ষক হিসেবে মানব না।

শিক্ষার্থীরা আরও জানান, যেখানে একজন শিক্ষার্থী বাস সংকট, আবাসন সংকট নিয়ে কথা বললেও বহিষ্কার হতে হয়, যেখানে শিক্ষার্থীদের সামান্য ফেসবুক পোস্টের জন্য বহিষ্কার হয় সেখানে একজন শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী যৌন হয়রানির জন্য চাকরিচ্যুত করা হবে না কেন?

এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইন বিভাগের ডিন মোঃ আব্দুল কুদ্দুস মিয়া জানান, আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে এবং অতি দ্রুত আমরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

উল্লেখ্য, অভিযুক্ত শিক্ষকের অধীনে থিসিস করতে থাকা ওই বিভাগের দুই ছাত্রী গত মাসে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগ করেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top