ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ তথা আইপিএলে ব্যাটসম্যানদের রাজত্বের মধ্যেই শনিবার বল হাতে স্বপ্নের অভিষেক হলো এক ক্যারিবিয়ানের৷
আইপিএল অভিষেকেই টুর্নামেন্টের রেকর্ডবুকে নাম তুলে ফেললেন মুম্বইয়ের ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান বিদেশি আলজারি জোসেফ৷ প্রথমবারের জন্য আইপিএলের মেগা মঞ্চে পা রেখেই বল হাতে বিপক্ষ ব্যাটিংয়ে ধস নামালেন বছর ২৩-এর পেসার৷ সানরাইজার্সের বিরুদ্ধে ম্যাচে মাত্র ১২ রান খরচ (একটি মেডেনসহ) করে ৬টি দামি উইকেট তুলে নেন আলজারি৷ আর এতেই আইপিএলের রেকর্ডবুকে নাম তুললেন নবাগত পেসার৷
এর আগে আইপিএলের সর্বকালীন সেরা স্পেল ছিল পাকিস্তানি ক্রিকেটার সোহেল তানভিরের৷ আইপিএলের প্রথম মরশুম অর্থাৎ ২০০৮ সালে জয়পুরে চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে ম্যাচে রাজস্থানের হয়ে ১৪ রানে ৬ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন তানভির৷ ১১ বছর আগের সেই রেকর্ডই এদিন ভেঙে দিলেন আলজারি৷ ম্যাচে ১২ রানে খরচ করে ৬ উইকেট পান ডানহাতি পেসার৷ উপ্পলে শনিবার রাতে সানরাইজার্সের বিরুদ্ধে তার স্পেলই এখন আইপিএলের ইতিহাসের সর্বকালীন সেরা বোলিং রেকর্ড৷
মুখ থুবড়ে পড়ল হায়দরাবাদ
টানা দুরন্ত পারফর্মেন্স এ বার জোড় ধাক্কা খেল মুম্বইয়ের সামনে। ঘরের মাঠে মুম্বইয়ের কাছে রীতিমতো নাস্তানাবুদ হতে হলো সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে। প্রথমে ব্যাট করে শেষ বেলায় মুম্বইকে ১৩৬ রানে পৌঁছে দিয়েছিলেন কেরন পোলার্ড। ২৬ বলে ৪৬ রান করে অপরাজিত থাকলেন তিনি। না হলে মুম্বইয়ের ব্যাটিংও এ দিন ব্যর্থ। শেষ তিন ম্যাচের পারফর্মেমেন্সের বিটারে হায়দরাবাদের জন্য এই লক্ষ্য তেমন কিছু বড় বিষয় ছিল না। কিন্তু দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও জনি বেয়ারস্টো ব্যর্থ হতেই শেষ হয়ে গেল হায়দরাবাদের সব লড়াই। ১৭.৪ ওভারে ৯৬ রান করে শেষ হয়ে গেল সানরাইজার্সদের ইনিংস। ৪০ রানে হারের মুখ দেখতে হলো।
টস জিতে মুম্বইকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল হায়দ্রাবাদ। শুরুটা ভালো হয়নি মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের। ১৪ বলে ১১ রান করে ফিরে যান রোহিত শর্মা। আট বলে সাত রান করার পর আউট হলেন সূর্যকুমার যাদব। পাঁচ ওভারের শেষে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ২৮-২। ব্যাট করছেন কুইন্টন ডে কক ও ইশান কিষান। কিন্তু বেশিক্ষণ টানতে পারলেন না দে কক। ১৮ বলে ১৯ রান করেন তিনি। ১৩ বলে ছয় রান করে আউট হন ক্রুনাল পাণ্ড্যে। ১০ ওভারেই ৫২ রানে তিন উইকেট চলে গিয়েছিল মুম্বইয়ের।
১৭ রান করে রান আউট হয়ে যান ইশান কিষান। কেউই এদিন এখন পর্যন্ত মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ব্যাটিংকে ভরসা দিতে পারেননি। ১০০ রানের গণ্ডি পেরনোর আগেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলে মুম্বই। ১৫ ওভারে মুম্বই ৭৫-৫। শেষ ভরসা ছিলেন হার্দিক পাণ্ড্যে। কিন্তু তিনিও সেটা দেখাতে পারলেন না এদিন। দিনটি আসলে মুম্বইয়ের ব্যাটসম্যানদের ছিল না। ১৪ বলে ১৪ রান করে রশিদ খানের বলে প্যাভেলিয়নে ফিরলেন হার্দিক পাণ্ড্যে।
১৭ ওভারের শেষে মুম্বই ৯২-৬। ১৯তম ওভারে সিদ্ধার্থ কলকে পর পর ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলের রানকে কিছুটা গতি দেন পোলার্ড। সিদ্ধার্থ কলের শেষ ওভারে ২০ রান আসে মুম্বইয়ের ঘরে। ২৬ বলে ৪৬ রান করে অপরাজিত থাকেন কেরন পোলার্ড। ২০ ওভারে ১৩৬-৭-এ শেষ হয় মুম্বইয়ের ইনিংস।
১৩৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমেছেন ডেভিড ওয়ার্নার ও জনি বেয়ারস্টো। কিন্তু এই ম্যাচে এই ওপেনিং জুটির সেই পারফর্মেন্স দেখা গেল না। ১৫ রানে ওয়ার্নার ও ১৬ রানে বেয়ারস্টো আউট হয়ে গেলেন। পাঁচ ওভারে হায়দ্রাবাদ ৩৩-২। তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ৫ রানে আউট হয়ে যান বিজয় শঙ্করও।মণীশ পাণ্ড্যে ফিরলেন ১৫ রানে।
১০ ওভারে হায়দরাবাদ ৫৯-৩। কোনো রান না করেই ফিরে যান ইউসুফ পাঠান। ১৫ ওভারের শেষে হায়দরাবাদ ৮৪-৫। এর পর দীপক হুদা ২০, মহম্মদ নবি ১১, রশিদ খান ০, ভুবনেশ্বর কুমার ২ রানে আউট হয়ে যান। ১৭.৪ ওভারে ৯৬ রানে শেষ হয়ে যায় হায়দ্রাবাদের ইনিংস। ৪০ রানের হারে মুখ দেখতে হল হায়দ্রাবাদকে।
সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ : ডেভিড ওয়ার্নার, জনি বেয়ারস্টো, বিজয় শঙ্কর, মণীষ পাণ্ড্যে, দীপক হুদা, ইউসুফ পাঠান, মহম্মদ নবি, রশিদ খান, ভুবনেশ্বর কুমার, সন্দীপ শর্মা, সিদ্ধার্থ কল।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স : কুইন্টন ডে কক, রোহিত শর্মা, সূর্যকুমার যাদব, ইশান কিষান, হার্দিক পাণ্ড্যে, কেরন পোলার্ড, ক্রুনাল পাণ্ড্যে, জেসন বেহেনড্রফ, রাহুল চাহার, আলজারি জোসেফ, জসপ্রিত বুমরা।