নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সংসদ সদস্য একে এম শামীম ওসমান হুশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘বেশী খেইলেন না, নারায়ণগঞ্জে আগুন জ¦লবো’। তার ভাষায় ‘আমার কোনো নেতাকর্মীদের অযথা হয়রানি করা হয় তাহলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। কোনো টেনশনের দরকার নাই। এরপরও যদি কেউ খেলতে চায় তাহলে খেলা হবে। আগ্নি দেখেছেন অগ্নির স্ফুলিঙ্গ কিন্তু দেখেন নাই। এরপরও যদি খেলা হয় তাহলে ২৪ ঘণ্টা না ৬ ঘণ্টার নোটিশ দেব। তবে, চিন্তা কইরেন না। খেলাখেলির দরকার নাই। খেলার আগেই খেলা শেষ হবে ইনশাল্লাহ ’।
শামীম ওসমান যখন এ বক্তব্য দিচ্ছেন তখন তার কর্মীরা নারায়ণগঞ্জের এসপি হারুন অর রশিদের প্রত্যাহার দাবী করে শ্লোগান দিতে থাকে। তাদের শ্লোগনের ভাষা ছিল, ‘ঘুষ খোর এসপির প্রত্যাহার চাই। মুক্তিযোদ্ধাদের নারায়ণগঞ্জ গাজীপুর হতে দিবো না’।
শনিবার বিকেল ৪টায় ফতুল্লা ইসদাইরে অবস্থিত বাংলা ভবন কমিউমিটি সেন্টারে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ব্যানারে আয়োজিত এক জরুরী কর্মীসভায় তিনি এ কথা বলেন। মাদক মামলায় শামীম ওসমানের আপন শ্যালক তানভীন আহমেদ টিটুকে জড়ানো, অন্যতম সহচর শাহ নিজামের বিরুদ্ধে পুলিশের জিডি , আরেক সহচর নাজমুল আলমের বিরুদ্ধে অপহরন মামলাসহ সম্প্রতি কয়েকট ঘটনায় পুলিশের শামীম ওসমানের দুরত্ব তৈরী হওয়ার মধ্যে জরুরী কর্মী সভার ডাক দেন তিনি।
শামীম ওসমান বলেন, নারায়ণগঞ্জের পরিস্থিতি নাকি অনেক জটিল। আবার নেতাকর্মীরাও দেখলাম খুব উত্তেজিত। আল্লাহর রহমত, আমি ২০১১ এর শামীম নই, থাকলে আমিও উত্তেজিত হইতাম। হওয়াটাই স্বাভাবিক। বয়সের সাথে সাথে সব কিছুর পরিবর্তন হয়।
নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন,‘আপনার কি ভাবছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারায়ণগঞ্জ সম্পর্কে জানেন না? অবশ্যই জানেন। আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যে টের পাবেন। কারো পদত্যাগ করতে হবে না, দরকার হলে আমি একা করবো।’
শামীম ওসমান বলেন,‘পর্দার আড়ালেও খেলা থাকে। হুট কইরা কাউরে ভুল বুইঝেন না। বাইরে থেইকা আইসা কেউ হয়তো এই খেলায় পা দিয়া ফেলছে। পর্দার আড়ালে অনেক খেলা হচ্ছে। আমি কারো নাম বলবো না। আমি এগুলারে গুণায় ধরি না। জামায়াতের সাথে তার (আইভীর)কানেকশন ফাঁস হইলো। তদন্ত হইলো। এরপরই শুরু হইলো এই খেলা।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে আরেকজন আছে মহিলা। যার সাথে জামায়াতের সম্পর্ক জড়িত। সেই কথা প্রকাশ হয়েছে। সেই তিনি হুমকি দেন মামলা করবেন। তয় করেন না ক্যান? ও সাংবাদিক ভাইয়েরা তারে গিয়া বলেন না, মামলা করতে। দেখি না কতটুকু সৎ সাহস থাকে তাহলে যেন মামলা করে।
তিনি বলেন, কেউ যদি মনে করে কাউকে ব্যবহার করে নারায়ণগঞ্জের শান্তিপূর্ণ অবস্থা নষ্ট করবেন, তা হবে না। এখানে যারা ব্যবসা করে তারা তো বিদেশী না। এখানকার স্থানীয়। আমাদেরই ভাইব্রাদার। এখন তাদেরকে কেউ ফোন করে বলবেন, দেখা করেন। আমি বলবো, দেখা করার সময় শেষ এটা হচ্ছে শেখ হাসিনার বাংলাদেশ।
শামীম ওসমান বলেন, শাহ নিজামের বিরুদ্ধে জিডি হইসে, টিটুর নামে মামলা হইসে, সজলের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন? কর্মীরা ভয়ে থরথর করে কাঁপছে, আমরা ভীত? না। যুবলীগ, ছাত্রলীগ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। কাউকে ভয় পায় না। কেউ যদি খেলতে চান, ডোন্ট প্লে, নারায়ণগঞ্জে খেইলেন না। সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করবে তাকে জুয়ার মামলার আসামী বানায়ে দিবেন। আমার আত্মীয় স্বজনকে মদের সাপ্লায়ার বানায়ে আমারে কাবু করতে চাইবেন, কইরেন না। আমারে কাবু করা যাবে না। অপেক্ষা করেন, আগামী ১০/১২দিনের মধ্যে টের পাবেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মো. বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা, সহ সভাপতি চন্দন শীল, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফুল্লাহ বাদল, সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী, বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ রশিদ, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন সাজনু, জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম চেঙ্গিস, সাবেক জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এহসানুল হাসান নিপু, সাফায়েত আলম সানি প্রমুখ।