গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম বলেছেন, ‘পুরান ঢাকাকে দ্রুত সংস্কার করে ঝুঁকি মুক্ত করা সম্ভব নয়। পুরান ঢাকার অবস্থা এতই নাজেহাল, ভবনের একটি ইটে আঘাত করলে গোটা বিল্ডিং ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রাস্তা এতই সংকীর্ণ যে, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশ করতে হলেও ভাঙতে হবে অনেক দালান।’
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া পুরান ঢাকার চুরিহাট্টা ও বনানীর এফ আর টাওয়ারে আগুনের ভয়াবহতার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘ইমারত নির্মাণে সরকারের দায়িত্ব ও নাগরিকের করণীয়’ শীর্ষক মিট দ্য প্রেস কনফারেন্সে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘পুরান ঢাকাকে পুনরায় উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এই প্রকল্পের আওতায় পাঁচ কাঠা জায়গার ওপর যদি তিনটি ভবন থাকে, সেগুলো আমরা ভেঙ্গে পরিবেশসম্মত, বিল্ডিং কোড অনুযায়ী ভবন তৈরী করে দেব এবং রেশিও (অনুপাত) অনুযায়ী ওই ভবন মালিকদের ফ্ল্যাট দেব।’
এ সময় ভবনকে নিরাপদ ও মানুষের জীবন রক্ষার্থে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নেয়া প্রাথমিক পর্যায়ের পরিকল্পকনা তুলে ধরেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা শহরে অনেক ভবন রয়েছে একটির সঙ্গে আরেকটি লাগোনো। এগুলো ভেঙে ফেলা হবে, তবে খুব দ্রুতই তা সম্ভব না। অগ্নিনির্বাপক নেই অনেক ভবনে। তাদের আমরা একটি নির্দারিত সময় বেঁধে দেব, এই সময়ের মধ্যে বিল্ডিং কোড অনুযায়ী অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা সম্পৃক্ত করতে হবে। চেক করার জন্য আমরা পরিদর্শনে লোক পাঠাবো। তারা দেখে সনদ দেওয়ার পরে সেই বিল্ডিংকে ব্যবহারের উপযোগী হিসেবে ঘোষণা করবো।’
পরিদর্শন ও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিলেও তা আলোর মুখ দেখে না- এমন অভিযোগের বিষয়ে রেজাউল করিম বলেন, ১এদেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি অভিযোগটা সত্য। তবে এবার কোন ইমারতের কী কী সমস্য আছে, তা আমরা ইনকুয়ারি ও পরিদর্শনের প্রতিবেদন জাতীয় দৈনিক ও ইলেট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশ করবো। প্রয়োজন হলে বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রকাশ করবো। কারণ এসব মানুষের আসল রূপ সকলের জানা উচিত। অনেক প্রভাবশালী রজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, আইনজীবী ও চিকিৎসক রয়েছেন যারা অবৈধ ভবন নির্মাণ করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। তাদের চেহারা উন্মোচন করতে চাই।’
ভবন পরিদর্শনের জন্য জন্য ইতোমদ্যে ২৪ টি পরিদর্শন দল গঠন করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবেরে নেতৃত্বে গঠন করা হয়েছে একটি দল। যেখানে সিটি কর্পোরেশনের প্রতিনিধি দল রয়েছে। রাজউক থেকে একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। আমরা সব প্রতিবেদনগুলো নিয়ে একসঙ্গে বসবো।
তিনি আরো বলেন, ‘যদি মন্ত্রণালয়ের এবং রাজউকের কেউ যদি অনিয়মে জড়িত থাকে, তবে তাদেরকে নূন্যতমও ছাড় দেওয়া হবে না। আমি দায়িত্বপ্রাপ্তমন্ত্রী হিসেবে বলছি, অতীতে কি হয়েছে তা আমি জানি না। ইনশা আল্লাহ আমার সময়ে কেউ পার পাবে না।’