২০০৪ সালে গৃহযুদ্ধকবলিত সোমালিয়া থেকে পালিয়ে চলে এসেছিলেন ইংল্যান্ডে। থাকতেন ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামের কাছে। ফুটবল দেখতে দেখতে স্বপ্ন তৈরি ছিল রেফারি হওয়া। তার স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। তিনিই ব্রিটেনে প্রথম হিজাব পরা রেফারি। নাম তার জাওয়াহের রুবেল।
জাওয়াহেরকে সেখানে একজন আশ্চর্যজনক মানুষ হিসেবেও দেখা হয়। কারণ একজন মানুষ যে একই সাথে নারী, শরণার্থী কৃষ্ণাঙ্গ, মুসলিম এবং হিজাব পরিহিতা- সে অবলীলায় ফুটবলের মতো গতিশীল একটি খেলায় রেফারির দায়িত্ব পালন করে চলছে।
অথচ গৃহযুদ্ধের কারণে তিনি সোমালিয়ার মোগাদিসু থেকে পালিয়েছিলেন পিতামাতা ও আট ভাইয়ের সাথে। কিন্তু তাই বলে তার লক্ষ্যে শিথিলতা আসেনি। তিনি ফুটবল শিখেছেন, শিখিয়েছেন এবং পরবর্তী সময়ে রেফারির উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিয়ে নেমে পড়েছিলেন মাঠে।
জাওয়াহেরই ব্রিটেনের প্রথম মুসলিম নারী রেফারি, তিনি হিজাব নিয়েই মাঠে নামেন। হিজাব নিয়েই খেলা পরিচালনা করেন। তিনি বলেন, আমার ধর্ম আমার অস্তিত্বের অংশ এবং আমি এটাকে ভালবাসি।
জাওয়াহের বলেন, যখন আমি প্রথম ম্যাচে রেফারি হিসেবে হিজাব পরে মাঠে নেমেছিলাম, তখন ছেলেরা আমাকে দেখে হেসে ফেলেছিল। বলেছিল, এর পক্ষে রেফারির দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়। কিন্তু আমি দেখাতে পেরেছি, প্রমাণ করতে পেরেছি যে আমি একজন ভাল রেফারি হতে পারি।
নারীদের ব্যাপারে জাওয়াহের বলেন, আমি মেয়েদের সম্পর্কে ভুল ধারণাগুলো দূর করার জন্য এখানে এসেছি। মেয়েরা ফুটবল খেলা করতে পারে। এমনকি তারা যা করতে চায় তাই তারা করতে পারে। আবার আমার ধর্ম আমার অস্তিত্বের অংশ এবং আমি এটি পছন্দ করি।
কর্মক্ষেত্রে পর্দার ব্যাপারে জাওয়াহের বলেন, মূলত একজন মুসলিম হচ্ছে একজন ভাল মানুষ। মধ্যপন্থি থাকা এবং সবার মনে সুখ আনা তার দায়িত্ব। আমি মনে করি যে আমি এ সবই করছি। কিন্তু ধর্মের সাথে সংস্কৃতিকে মিশিয়ে ফেললে কখনো কখনো সেটি আরো বিভ্রান্তিকর হয়ে পড়ে। কারণ কখনো কখনো সংস্কৃতি খুব কঠোরভাবে কাজ করে এবং মানুষ ধর্মের সাথে সেটাকে গুলিয়ে ফেলে।
নিজের লক্ষ্য সম্পর্কে তার মন্তব্য, আমি আগামী ১০ বছরে একজন পেশাদার রেফারি হতে চাই এবং বিভিন্ন লিগে রেফারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে চাই।