প্রধান শিক্ষকের ধর্ষণের ফলে ৫ম শ্রেণীর এতিম শিশু অন্তঃসত্ত্বা

ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের খুশিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের লালসার শিকার হয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে ওই স্কুলের ৫ম শ্রেণির এক ছাত্রী। ঘটনা জানাজানি হলে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আবদুল করিম (৫৫) কে আটক করে।

এনিয়ে এলাকায় ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর আগে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে ওই স্কুলের ৪র্থ শ্রেণির এক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষে ধর্ষণের শিকার হয়। পরে ওই ধর্ষক মুসা আলম মাসুদ র‌্যাবের সাথে ‘কথিত’ বন্দুকযুদ্ধে মারা যায়।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, ওই ছাত্রী গত কিছুদিন ধরে অসুস্থ হয়ে বিদ্যালয়ে অনিয়মিত হয়ে পড়ে। স্থানীয় গ্রাম ডাক্তারের চিকিৎসায় উন্নতি না হওয়ায় ১ এপ্রিল ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক অন্তঃসত্ত্বার আলামত দেখে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পরামর্শ দেন। তারা পাশ্ববর্তী প্রাইভেট ক্লিনিকে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে আল্ট্রাসনোগ্রামে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা বলে নিশ্চিত হয়।

ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রথম পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়ার পরও যেহেতু বিষয়টি স্পর্শকাতর মনে করে তারা ওই মেয়েটিকে খবর দিয়ে এনে দ্বিতীয়বারও পরীক্ষা করেন।

পরবর্তীতে বাড়ী ফিরে স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ ঘটনাটির সাথে জড়িত বলে স্বীকারোক্তি দেয় মেয়েটি। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এক কান-দুই কান হয়ে খবর পৌছে যায় থানা পুলিশেও।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শিশুটিকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুলিশ অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আবদুল করিমকে আটক করে। তিনি একই এলাকার মৃত হাজী আলতাফ আলীর ছেলে।

নির্যাতিতা শিশুটি ৪ বোনের মধ্যে সবার ছোট। গত প্রায় ১০ বছর আগে তার বাবা মারা যান। বাড়ির একটি পরিবার এতিম এ শিশুটির দেখাশোনা করেন। তবে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে একটি প্রভাবশালী মহল শুক্রবার দিনভর নানা চেষ্টা-তদবীর করেন।

পুলিশ সুপার এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার বিষয়টি অবগত হলে তিনি মামলা রেকর্ড করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। তিনি বিষয়টি অধিকতর তদন্তে সহকারি পুলিশ সুপার সাইকুল আহমেদ ভূঁইয়াকে দায়িত্ব দিয়েছেন।

সহকারি পুলিশ সুপার সাইকুল আহমেদ ভূঁইয়া জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রধান শিক্ষক ঘটনাটি স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় তাকে আসামী করে মেয়েটির মা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

পুলিশ সুপার এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার জানান, স্পর্শকাতর বিষয়টি নিশ্চিত হতে পুলিশের কিছুটা সময় লেগেছে। আজ শনিবার সদর হাসপাতালে আবারো মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষা করা হবে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top