টঙ্গীতে পরকীয়ার জেরে খুন হন ছাত্রলীগ কর্মী

গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীতে ছাত্রলীগ কর্মী প্রিন্স মাহমুদ নাহিদ (২৫) হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি সাদ্দাম হোসেনসহ (১৯) তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১ এর সদস্যরা। র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে আসামিরা।

র‌্যাবের ভাষ্য, এক নারীর সাথে পরকীয়ার জের ধরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। অপর দুই আসামি হলো, মামলার প্রধান আসামি টঙ্গী পূর্ব থানার বৌবাজার এলাকার আব্দুল মোতালেব খলিফার ছেলে আলাউদ্দিন রাফি (২৭) ও নরসিংদীর জেলার হাজীপুর এলাকার মো: বেদন মিয়ার ছেলে মো: আহাদুল ইসলাম রনি (২০)।

বৃহস্পতিবার রাতে টঙ্গী ও ঢাকায় অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি মো: আলাউদ্দিন রাফিসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১ সদস্যরা।

শুক্রবার দুপুরে র‌্যাব-১-এর পোড়াবাড়ি ক্যাম্পে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১ এর সহকারি পরিচালক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: কামাল উদ্দিন জানান, ভিকটিম প্রিন্স এবং গ্রেফতারকৃত রাফি এক সময় খুব ঘনিষ্ঠ ছিল এবং তারা একই গ্রুপের সদস্য ছিলেন। গত প্রায় দুই বছর আগে জনৈক এক মহিলার সাথে পরকীয়ার জেরে তাদের সম্পর্কের অবনতি হয় এবং উভয়ের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এই ব্যাপারে তৎকালীন টঙ্গী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়।

এদিকে স্থানীয়রা জানান, এক প্রবাসীর স্ত্রী আলোচিত ওই নারীর সাথে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল ছাত্রলীগকর্মী নাহিদের। পরে নাহিদের মাধ্যমে ওই নারীর সাথে পরিচয় হয় তারই (নাহিদের) এক সময়ের ঘনিষ্ট বন্ধু রাফির। তাদের পরিচয়ের এক পর্যায়ে ওই নারী নাহিদকে বাদ দিয়ে রাফির সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলে। এ নিয়ে রাফির সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটে নাহিদের।

একপর্যায়ে তারা দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে একে অন্যের প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা চালায়। এরই মধ্যে গত ১ মার্চ নাহিদ বিকেলে টঙ্গী পূর্ব থানাধীন স্থানীয় ভরান মুন্সিপাড়া রোডে তার শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার সময় ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় কিছু ছেলেদের মারধর করতে দেখে। এ ঘটনায় তার ঘনিষ্ঠ ছোটভাই জনৈক রিফাতকে রাফির গ্রুপের লোকজন মারধর করে।

নাহিদ সন্ধ্যা ৭টার দিকে রিফাতকে তার বাড়িতে দেখতে যান এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রিফাতদের বাড়ি থেকে বের হলে পূর্বশত্রুতার জের ধরে পূর্ব থেকে ওঁৎপেতে থাকা রাফির নেতৃত্বে ১০/১২ জনের একটি সন্ত্রাসীদল তার গতিরোধ করে এবং মারধর করতে থাকে।

এক পর্যায়ে রাফির নির্দেশে গ্রেফতারকৃত আসামি মো: সাদ্দাম হোসেন (১৯) ভিকটিম নাহিদকে তার হাতে থাকা সুইচ গিয়ার (চাকু) দিয়ে বুকের ডান পাশে আঘাত করে গুরুতর জখম করে। স্থানীয়রা নাহিদকে চিকিৎসার জন্য টঙ্গী শহিদ আহসান উল্লাহ মাস্টারজেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। নাহিদের স্বজনরা তাকে ঢামেকে নেয়ার পথে তার অবস্থা সংকটাপন্ন হলে পথিমধ্যে তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পরদিন ২ মার্চ আলাউদ্দিন রাফিকে প্রধান আসামি করে নিহতের বাবা জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে টঙ্গী পূর্ব থানায় মামলা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে র‌্যাব-১-এর পোড়াবাড়ি ক্যাম্পের ইনচার্জ লে. কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন ও র‌্যাব-১ এর সহকারী পরিচালক এএসপি মো: সালাহ উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top