দলের চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিএনপি।
আজ শুক্রবার সকাল ১১টায় জাতীয়তাবাদী যুবদলের কয়েকশ’ নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে একটি বিক্ষোভ মিছিল নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে আবারো বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।
মিছিলে নেতৃত্ব দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। মিছিলে বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. আব্দুস সালাম আজাদ, জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোরতাজুল করিম বাদরু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রফিকুল আলম মজনু, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা শাহীন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
মিছিল শেষে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন ও চারবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতা ক্রমান্বয়ে চরম অবনতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। দেশনেত্রীকে চিকিৎসা দেয়ার নামে নানা টালবাহানা ও জনগণকে ধোকা দেয়ার চেষ্টা করছে সরকার। সরকার আমাদের দাবি উপেক্ষা করে বেগম জিয়ার পছন্দের হাসপাতালে চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে বরং বারবার বিএসএমএমইউ-তে চিকিৎসা দেয়ার নামে দেশনেত্রীকে এনে তিনি সুস্থ আছেন বলে মিথ্যার বেস্যাতি করে যাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।’
তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে আর কষ্ট দেবেন না, তাকে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিন, দেশনেত্রীর পছন্দের বিশেষায়িত ইউনাইটেড হাসপাতালে সুচিকিৎসার সুযোগ দিন। কারণ আপনার নির্দেশেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে।’
রিজভী বলেন, ‘দেশের কারাগারগুলো এখন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত লোহার খাঁচায় পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা যাকে অপছন্দ করেন তাকেই সেই খাঁচায় যতদিন ইচ্ছা আটকে রাখেন। অভ্রান্ত কোনো আইন কানুনের দ্বারা এখন কারো সাজা হয় না, এখন হয় প্রতিহিংসার সাজা। জনগণের চাপা ক্ষোভ আপনি আন্দাজ করতে পারছেন না বলেই বিএনপি চেয়ারপার্সনকে মুক্তি না দিয়ে তাকে তিলে তিলে নিঃশেষ করার চেষ্টায় উঠেপড়ে লেগেছেন। কিন্তু আপনার লোহার খাঁচা ভেঙ্গে ফেলার জন্য জনগণ এখন প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশে ভয়াবহ দুঃশাসনসহ সড়কে এবং বিভিন্ন ভবনে আগুনে পুড়ে প্রতিদিনই মানুষের নির্মম মৃত্যু ঘটছে, চারিদিকে নিহতদের স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে, আপনি এখন চারিদিক দিয়েই ব্যর্থ। আপনার দুঃশাসনকে এখন প্রতিরোধ করার জন্য মানুষ পথে পথে প্রস্তুত হয়ে রয়েছে।
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা আরো বলেন, পৃথিবীর অতীত ইতিহাস ভুলে যাবেন না, কোনো স্বৈরাচারী শাসক এভাবে দেশের মানুষকে শাসন করে জনগণের ক্ষোভের আগুন থেকে রেহাই পায়নি। যুগে যুগে বিশ্বে স্বৈরাচারদের পরিণতির মতোই আপনাকেও সেই পরিণতি ভোগ করতে হবে। আমি আবারো অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তার পছন্দের হাসপাতালে সুচিকিৎসার সুযোগসহ নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।’
মিছিলে নেতাকর্মীরা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দেন।
এছাড়া জাতীয়তাবাদী যুবদল ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে একই দাবিতে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল মগবাজার থেকে শুরু হয়ে হাতিরঝিলে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে অংশ নেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান, উত্তরের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টনসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীরা। নেতাকর্মীরা দেশনেত্রীর মুক্তির দাবিতে মুহুর্মূহু শ্লোগান দেন।