রান করেও নির্বাচকদের মন গলাতে পারেননি ওমর আকমল

তার ব্যাটে রান আছে। পরপর দুই ম্যাচে অপরাজিত ১৩৬ ও ৬৬ বলে ৯৯ রানের দুটি ইনিংস খেলার পরই জানতে পারলেন পাকিস্তানের সম্ভাব্য বিশ্বকাপ দলে তার জায়গা নেই। ইতোমধ্যেই ২৩ জনের একটি দলকে ফিটনেস পরীক্ষার জন্য ডেকে পাকিস্তানের নির্বাচক মণ্ডলি। এই ২৩ জনের দল থেকেই চূড়ান্ত করা হবে বিশ্বকাপের ১৫ সদস্যের দল। আগামী ২৩ এপ্রিল বিশ্বকাপের দল ঘোষণার শেষ তারিখ।

দীর্ঘ ২ বছর পর পাকিস্তান জাতীয় দলে ডাক পেয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। ওমর আকমলের ব্যাট এই সিরিজে অবশ্য হাসেনি। সিরিজের ৫ ম্যাচ খেলে রান করেছেন ১৫০। পাকিস্তান সুপার লিগের এবারের মৌসুমটি তার ভালোই গেছে। ৩৪ গড়ে ২৭৭ রান করে ডাক পেয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে। কিন্তু আবরো ছিটকে গেলেন। তবে রানের চেয়েও এবার অবশ্য অন্য কারণে তাকে দলে রাখা হয়নি বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অস্ট্রেলিয়া সিরিজের পর দেশে ফিরে ঘরোয়া ক্রিকেটেও পেয়েছেন রানের দেখা। ঘরোয়া পাকিস্তান কাপে বালুচিস্তান দলের হয়ে দুইটি ৫০ ওভারের ম্যাচ খেলে করেছেন ১৩৬* ও ৯৯ রান। এর মধ্যে শেষ ম্যাচে ৯৯ রান করেছেন ৬৬ বলে। এমন পারফরম্যান্সের পর আসা করেছিলেন বিশ্বকাপ দলে ডাক পাওয়ার কিন্তু নির্বাচকরা তার ওপর আস্থা রাখেননি। কারণটা শৃঙ্খলাজনিত বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

মাত্র ১৯ বছর বয়সে পাকিস্তান জাতীয় দলে অভিষেক হওয়া ওমর আকমলকে ভাবা হতো পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের ভবিষ্যত স্তম্ভ; কিন্তু ধারাবাহিকতার অভাব ও একের পর এ শৃঙ্খলাবিরোধী কাণ্ড ঘটিয়ে বারবারই শিরোনামে আসেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। সর্বশেষ ২ বছর আগে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল থেকে তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে। কোচ মিকি আর্থারের সাথে সবার সামনে তর্কে লিপ্ত হওয়ার কারণে সৌভাগ্য হয়নি পাকিস্তানের হয়ে ওই টুর্নামেন্টের শিরোপা জয়ী দলে থাকার। এরপর টানা দুই বছর দলের বাইরে থাকার পর অস্ট্রেলিয়া সিরিজে কয়েকজন নিয়মিত খেলোয়াড়কে বিশ্রাম দেয়ায় তার সুযোগ আসে জাতীয় দলে ফেরার।

কিন্তু আবারো শৃঙ্খলা ভঙ্গে অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। ৫ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচের আগে রাত করে হোটেলে ফেরার কারণে তাকে জরিমানা করে টিম ম্যানেজমেন্ট। ম্যাচ ফির ২০ শতাংশ জরিমানা করা হয় তার। সেই সাথে দেয়া হয় কড়া সতর্কতা। যদিও ওমর আকমল সাথে সাথেই তার ভুল শিকার করে ক্ষমা চেয়েছেন।

কিন্তু যে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে ২ বছর আগে দল থেকে বাদ পড়েছিলে, দলে ফিরে আবার সেই কাজ করার কারণেই হয়তো তাকে বিশ্বকাপের প্রাথমিক দলে রাখার মতো ভরসা পায়নি ইনজামাম উল হকের নির্বাচক কমিটি। এমনিতেই পাকিস্তান দেলে শৃঙ্খলা ভঙ্গের ঘটনা একটু বেশিই ঘটে। সাম্প্রতিক সময়ে তাই টিম ম্যানেজমেন্ট এ বিষয়ে বেশ কঠোর।

আবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজেও চোখে পড়ার মতো কিছু করতে পারেননি। দেশে ফিরে ঘরোয়া ক্রিকেটে রান করে গেলেও তা নির্বাচনকদের মন গলাতে পারেনি।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top