বিশ্বজুড়ে মানুষের মৃত্যু ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরির অন্যতম কারণ বায়ুদূষণ। দূষিত বায়ু গ্রহণের কারণে হৃদযন্ত্রের অসুখ, শ্বাসকষ্টজনিত জটিল সমস্যা, ফুসফুস সংক্রমণ ও ক্যানসারের মতো রোগে ভুগছে মানুষ। বিশ্বে যেসব কারণে মানুষের মৃত্যু ঝুঁকি তৈরি হয় বায়ুদূষণ তার মধ্যে পঞ্চম। ২০১৭ সালে ৪৯ লাখ মানুষ দূষিত বায়ুর কারণে মারা গেছ। মোট ১৪.৭ কোটি বছর সুস্বাস্থ্যে কাটানোর সুযোগ হারিয়েছে।
একটি দেশের বায়ু স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপযোগী তা পরিমাপ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-ডাব্লিউএইচও। সে অনুযায়ী ৯০ ভাগ মানুষই এমন অঞ্চলগুলোতে বাস করে যেখানকার বায়ু সুস্বাস্থ্যের উপযোগী নয়। ডাব্লিউএইচও-র সবচেয়ে নীচের লক্ষ্যমাত্রাটিও পূরণ করতে পারছে না এমন এলাকায় বাস করে অর্ধেকের বেশি মানুষ।
বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বায়ু দক্ষিণ এশিয়ায়। ডাব্লিউএইচও’র মাত্রা অনুযায়ী ২০১৭ সালে সবচেয়ে দূষিত বায়ু ছিল নেপালে। এরপর রয়েছে ভারত, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। এই অঞ্চলে সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর বায়ু আছে ভুটানে। ডাব্লিউএইচওর নীচের মাত্রাটির কাছাকাছি তাদের অবস্থান। অঞ্চল ভিত্তিতে মাত্রাতিরিক্ত বায়ুদূষণে দক্ষিণ এশিয়ার পরে আছে সাব সাহারা আফ্রিকা।
ডাব্লিউএইচওর মানদণ্ড অনুযায়ী বিশ্বের যেসব দেশের শতভাগ মানুষ মাত্রাতিরিক্ত বায়ুদূষণের মধ্যে বাস করছে তার একটি বাংলাদেশ। একই পরিস্থিতি পাকিস্তান, ভারত, চীন, নাইজেরিয়া ও মেক্সিকোতেও।
দূষিত বায়ুর কারণে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হওয়া শীর্ষ ৫টি দেশের একটি বাংলাদেশ। ২০১৭ সালে ১ লাখ ২৩ হাজার মানুষ বায়ুদূষণে মারা গেছে। প্রথম চারটি দেশের মধ্যে আছে চীন, ভারত, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়া।
বায়ুদূষণের কারণে স্বাস্থ্যহানি আর মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ছে। প্রতিবেদন বলছে এখন বিশ্বে যেসব শিশু জন্ম নিচ্ছে, গড়ে তারা কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ মাস কম আয়ু পাচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ায় যা ৩০ মাস। দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা গেলে তাই গড় আয়ুও বাড়বে।
স্বাস্থ্যকর বায়ু নিশ্চিত করার সবচেয়ে বেশি সুফল পাবে বাংলাদেশ। জন্ম নেয়া শিশুদের গড় আয়ু তখন ১.৩ বছর বেড়ে যাবে। এমন সুবিধা পাওয়া দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের পরে থাকবে ভারত, নাইজেরিয়া ও পাকিস্তান। তাদের গড় আয়ু ১ বছর বেড়ে যাবে।