সুন্দরী নারীর প্রলোভ‌ন দেখিয়ে ডাক্তারকে অপহরণ, গ্রেফতার ৬

সুন্দরী নারীর প্রলোভন দেখিয়ে রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বর থেকে ডাঃ মোনায়েমুল বাশার (৪০) নামে এক হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসককে অপহরণ করে টাঙ্গাইলের মধুপুর ভাওয়াল বনে নিয়ে যায় একটি অপহরণ চক্র।

ডাক্তারের চোখ মুখ বেঁধে বনের ভেতর আটকিয়ে হত্যার ভয় দেখিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে অপহৃতের পরিবারের মোবাইল ফোনে চিৎকার ও কান্নার শব্দ শুনিয়ে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। বৃহস্পতিবার ভো‌রে অভিযান চালিয়ে নগদ ২৭ হাজার পাঁচশ টাকাসহ অপহরণ চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করে র‍্যাব-৪।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. ফয়েজ উদ্দিন (৩২), মো. আলমগীর হোসেন (১৮), মো. বিল্লাল হোসেন (৩৮), মো. আব্দুল হালিম (৫২), মো. ফয়সাল আহমেদ (১৮) ও মো. আব্দুস সালাম (৫৫)।

বৃহস্পতিবার দুপু‌রে কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাব-৪ এর অধিনায়ক চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির।

তিনি বলেন, অপহরণ চক্রের নারী সদস্য পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রোগী সেজে ডাক্তারের চেম্বারে এসে মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে ডাক্তারের সাথে দীর্ঘদিন মোবাইলে কথা বলে। একপর্যায়ে ডাক্তারকে সুন্দরী নারীর প্রলোভন দেখিয়ে গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তাকে অপহরণ করে টাঙ্গাইলের মধুপুর ভাওয়াল বনের নির্জন এলাকায় নিয়ে যেয়ে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।

চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির বলেন, ডাক্তারের স্ত্রী ও শ্যালকের সাথে মোবাইলে কথা বলে অপহরণ চক্র বিকাশের মাধ্যমে কিছু টাকা নেয়। এরপর সন্ধ্যা থেকে আটকে রেখে মুক্তিপণের দাবিতে সারারাত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ ভোর সাড়ে ৬টার দিকে অভিযান চালিয়ে ডাঃ মোনায়েমুল বাশারকে উদ্ধার করে গ্রেফতার করা হয় অপহরণ চক্রের ছয় সদস্যকে।

অপহরণ চক্রের সদস্যদের বরাত দিয়ে র‍্যাব কর্মকর্তা বলেন, চক্রটি এ পর্যন্ত কাউকে হত্যা করেনি। অপহরণ চক্রটি গত দশ বছর ধরে বিভিন্ন পন্থায় মাঝারী ব্যবাসী, পেশাজীবী ও চাকুরীজীবীদের টার্গেট করে মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে নারীদের মাধ্যমে প্রেমের ফাঁদ পেতে অপহরণ করে। অপহরণের পর সুন্দরীদের প্রলোভন দেখিয়ে নির্জন জঙ্গলে নিয়ে যেয়ে মোটা অংকের টাকা মুক্তিপণ দাবি করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে।

তিনি বলেন, অপহরণ চক্রটি পাঁচ লাখ, দশ লাখ টাকা মুক্তিপণ হিসেবে দাবি করলেও ত্রিশ কিংবা পঞ্চাশ হাজার পেলেই অপহৃতকে ছেড়ে দেন। তারা সব সময় মধ্যবিত্তদের টার্গেট করে অপহরণ করে।

তিনি আরও বলেন, চক্রটির আদিবাসী সুন্দরী নারীরা প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে কৌশলে মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে ডলার বিক্রির কথা বলেও জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় করে।

এছাড়াও ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও ময়মনিংহ জেলার গুরুত্বপূর্ণ বাস স্টেশন থেকে যাত্রীদের জোর করে মাইক্রোবাস বা প্রাইভেটে উঠানোর সাথে সাথে যাত্রীবেশে চলন্ত গাড়িতে হাত পা বেঁধে অজ্ঞান করে মধুপুর ভাওয়াল বনে নিয়ে যেয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা মুক্তিপণ আদায় করত।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top