ণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়দে সাকি বলেছেন, দুর্নীতি অপচয় বন্ধ না করে লুটেরাদের স্বার্থে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি জনগণ মানবে না। তিনি অবিলম্বে স্থলে ও সমুদ্রে গ্যাস উত্তোলনের যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান। গণসংহতি আন্দোলনের উদ্যোগে গ্যাসের অযৌক্তিক মূল্য বৃদ্ধির অপতৎপরতা বন্ধের দাবিতে জ্বালানী মন্ত্রণালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি একথা বলেন।
এর আগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে মিছিল নিয়ে জ্বালানী মন্ত্রণালয়ের সামনে যেতে চাইলে পুলিশী বাধার মুখে পড়ে গণসংহতি আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। সেখানে পুলিশের সাথে গণসংহতি আন্দোলনের নেতাকর্মীদের কিছুক্ষণ বাদানুবাদ চলে।
পরে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে জোনায়দে সাকি আরো বলেন, সরকার কথায় কথায় বিএনপির সমালোচনা করলেও জ্বালানী বিষয়ে বিএনপির গণবিরোধী নীতিগুলোর ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে নিষ্ঠার সাথে। বর্তমান সরকার মাটির নিচে গ্যাস ফেলে রেখে গ্যাসের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে রেখেছে। সংকটের দোহাই দিয়ে এলএনজি আমদানির পথ খোলাসা করা হচ্ছে। কেননা সরকারের কাছের কিছু ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান এলএনজি আমদানির তৎপরতা শুরু করেছে। তাদের ব্যবসার স্বার্থে জনগণের ওপর বাড়তি খরচের বোঝা চাপিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
অথচ বর্তমান সরকারের উদ্যোগেই যুক্তরাষ্ট্র ও নরওয়ের বিশেষজ্ঞরা জরিপ করে দেখিয়েছেন বাংলাদেশের মাটির নিচে এবং সাগরের নিচে প্রায় ৪২ টিসিএফ গ্যাস মজুত রয়েছে। ক্রমবর্ধমান ব্যবহার হিসাব করলেও এ গ্যাস দিয়ে অন্তত ২০ বছর চলা সম্ভব। ২০ বছর পরে এলএনজির হিসাব আসতে পারে। ২০ বছর পরের খরচের বোঝা কেন এখন চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে জনগণের ওপর।
তিনি আরো বলেন, ২০১২ সালে সমুদ্র বিজয় করা হলো। অগভীর ও গভীর সমুদ্র মিলে ২৬টি ব্লকে ভাগ করে অনুসন্ধান করার কথা থাকলেও আজ পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ঘটেনি। অথচ মিয়ানমার তাদের সীমানার গ্যাস উত্তোলন তো করছেই ইতোমধ্যে তা রপ্তানীও শুরু করেছে। সাগরের তলায় যদি অভিন্ন বেসিন থেকে তারা গ্যাস উত্তোলন করে থাকে তাহলে হয়তো আমরা যখন শুরু করবো তখন আর কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না।
জোনায়েদ সাকি আরো বলেন, জনগণ গ্যাস উন্নয়ন তহবিলে অর্থের যোগান দিচ্ছেন তাদের বিল পরিশোধ করার সময়। কথা ছিল উন্নয়ন তহবিল দিয়ে বাপেক্সকে শক্তিশালী করা হবে; গ্যাস অনুসন্ধানে বিনিয়োগ করা হবে। কিন্তু সরকার নির্লজ্জের মতো এ টাকা অন্য খাতে ব্যবহার করেছে, লুটপাট করা হয়েছে।
সমাবেশে কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য ফিরোজ আহমেদ বলেন, এ উপমহাদেশের মধ্যে আমাদের দেশের অর্থনীতি সবচেয়ে বড় লুটের অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। মেগা প্রকল্পের নামে মেগা লুটপাট চলছে। ব্যাংক ঋণের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে, পাচার করা হয়েছে। এর মধ্যেও ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তারা উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর চেষ্টা করছেন, রপ্তানী আয় বৃদ্ধি করছেন।
সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য ফিরোজ আহমেদ, তাসলিমা আখ্তার, কেন্দ্রীয় সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, মনির উদ্দীন পাপ্পু, জুলহাসনাইন বাবু।