আধুনিক বিশ্বায়নের যুগে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সামাজিক মাধ্যমের জনপ্রিয়তা দিনকে দিন বাড়ছেই। এই মাধ্যমের সুবিধা যেমন আছে অসুবিধাও কম নয়। সামাজিক মাধ্যম‘ফেসবুক’এই অসুবিধার দিকেই বেশি নজর দিচ্ছে। তাই এখন থেকে খবর দেয়ার ক্ষেত্রে আরোপ করা হবে কড়াকড়ি। এরই মধ্যে তৈরী হয়েছে ‘নিউজ ট্যাব’। ফেসবুকের নতুন এই ফিচারে পাওয়া যাবে দিনের সর্বশেষ তাজা খবর। স্থানীয়-জাতীয়-আন্তর্জাতিক সব অঙ্গনের খবর এখানে থাকবে; তবে অবশ্যই নিখুঁত সম্পাদনার পড়ে।
বিভিন্ন সময় মিথ্যা, ভুয়া, আপত্তিকর বার্তা রুখতে সব বিষয়কেই নিচে ফেলতে চাইছে ফেসবুক। চুলচেরা বিশ্লেষণে ঠিক হবে কোন খবর নিউজ ফিডে দেখানো হবে, আর কোনটা নয়। নিউজ ট্যাবের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়। খবরের সত্যতা যাচাই করেই সেটা যাবে ট্যাবে।
নির্ভরযোগ্য এবং অবশ্যই বিশ্বাসযোগ্য সাংবাদিকতাকে জনগণের সামনে তুলে ধরতে চায় ফেসবুক। এমনটাই জানিয়েছেন ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ।
মার্ক জুকারবার্গ বলেন, এতদিন নিউজ ফিড ঘাঁটলেই দেশ-বিদেশের খবর মিলত। পছন্দের মিডিয়া পেজে লাইক করা থাকলে, সেই মিডিয়ার প্রকাশ করা সমস্ত আপডেট নিউজ ফিডেই পেতেন ব্যবহারকারীরা। তবে সমস্যা হচ্ছে, নিউজ ফিড জায়গাটা যেহেতু পাঁচমিশেলি, সেখানে খবর ছাড়াও ব্যক্তিগত পোস্ট, ফ্রেন্ড জোনের শেয়ার করা পোস্ট ইত্যাদি সবকিছুই মিলেমিশে থাকে। চটজলদি খবর জানতে হলে ব্যবহারকারীকে নিউজ ফিডের এডিটেড অপশনে গিয়ে নিজের পছন্দ বেছে নিতে হয়।
তিনি বলেন, ফেসবুকে অন্তত ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ব্যবহারকারী রয়েছেন যারা নিত্যদিনের খবর জানতে চান। রাজনীতি, অর্থনীতি, খেলা, ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে সফট, টেকনিক্যাল নিউজ সব বিষয়েরই আলাদা আলাদা ব্যবহারকারী রয়েছে। সকলের কথা ভেবেই তাই এই নিউজ ট্যাবের সিদ্ধান্ত।
ইউরোপের অন্যতম ডিজিটাল পাবলিশিং হাউস অ্যাক্সেল স্প্রিংগারের সাথে ইতিমধ্যেই কথাবার্তা চালাচ্ছে ফেসবুক।
জুকারবার্গ বলেন, অ্যাক্সেল স্প্রিংগারের সিইও ম্যাথিয়াস ডপফিনারের সাথে আলোচনা করেছি। কী ভাবে নিউজ ফিডকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে তার একটা রূপরেখা ঠিক হয়েছে। আমরা অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য খবর চাই, যেটা ডিজিটাল পাবলিশিং হাউসগুলোর জন্য যেমন লাভজনক হবে তেমনি লাভ হবে ব্যবহারকারীদের।
তবে নিউজ ট্যাবে চাইলে যে কোনো খবর প্রকাশ করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে কড়া নজর রাখবে ফেসবুক।
এ প্রসঙ্গে জুকারবার্গ জানিয়েছেন, এই ফিচারের জন্য আলাদা করে কোন সাংবাদিক রাখা হবে না। তবে পরিচালক থাকবেন। যার দায়িত্ব হবে জমা করা খবর থেকে বাছাই করে সেরা খবরগুলো ট্যাবে প্রকাশ করা। সে ক্ষেত্রে চাইলেই যে কোনো ডিজিটাল মিডিয়া ফেসবুকের পার্টনার হতে পারে। তবে তাদের খবর নেওয়ার আগেও কড়া নজরদারি চালাবে ফেসবুক।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়ে ফেসবুকসহ সোশ্যাল মিডিয়ার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ভুয়া খবর আটকাতে ব্যর্থ হয় ফেসবুক। ভোটে প্রভাব খাটানোর অভিযোগও ওঠে। সে সময় ফেসবুককে মার্কিন সেনেটে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়।