ইস্তাম্বুলের ভোটের ফল আটকে আছে যে কারণে

তুরস্কের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দেশটির ঐতিহাসিক নগরী ও সাবেক রাজধানী ইস্তাম্বুলের ৮টি এলাকার ভোট পুনরায় গোনা হবে বলে জানিয়েছে দেশটির শীর্ষ নির্বাচন বোর্ড(ওয়াইএসকে)। নির্বাচনী ফলাফলের বিষয়ে একে পার্টির পক্ষ থেকে আপত্তির পর এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। নির্বাচন বোর্ডের প্রধান সাদি গুভেন বুধবার বলেছেন, একেপির আবেদনের প্রেক্ষিতে নগরীর ৮ এলাকার ভোট পুনরায় গোনা হবে।

রোববার তুরস্কের স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে বেশি সংখ্যক নগরীতে জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন দল। তবে রাজধানী আঙ্কারা ও ইজমিরেরর মেয়র পদে হেরে গেছে দলটি।

সাবেক রাজধানী ইস্তাম্বুলের মেয়র পদের নির্বাচনের ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি বুধবার পর্যন্ত। নির্বাচনে যে কয়টি কেন্দ্রের ফল ঘোষণা করা হয়েছে তাতে সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে আছে বিরোধী দল। এমন অবস্থায় কয়েকটি এলাকার ভোট পুনরায় গোনার দাবি জানিয়েছে প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের দল জাস্টিস এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (একেপি)।

রাজধানী আঙ্কারায় নির্বাচন বোর্ডের প্রধান গুভেন সাংবাদিকদের বলেন, পুনরায় গোনার ক্ষেত্রে নষ্ট হওয়া ভোটগুলোর দিকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে। তিনি বলেন, এটি বিরল কোন ঘটনা নয়। ভোট পুনরায় গোনা হতেই পারে। তবে ভোটে এগিয়ে থাকা বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির(সিএইচপি) প্রার্থী একরাম ইমামগলু দাবি করেছেন তাকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হোক। তিনি এখন পর্যন্ত এগিয়ে আছে। ইমামগলু বলেছেন, ছোটখাট ত্রুটি ধরা পড়লেও ফলাফল পরিবর্তন হবে না। তাই আমাকে মেয়র নির্বাচিত ঘোষণা করা হোক।

সোমবার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সিতে প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, দুটি বড় শহর আঙ্কারা ও ইজমিরে হেরে গেছে ক্ষমতাসীন দল। ইস্তাম্বুলেও এগিয়ে আছে বিরোধী প্রার্থী। যা এরদোগানের দলের জন্য একটি ধাক্কা। ইস্তাম্বুল তুরস্কের সবচেয়ে বড় নগরী। এখানে এক কোটি ৬০ লাখ লোকের বাস।

এ অবস্থায় দেশটির নির্বাচন বোর্ড দলগুলোকে তিনদিন সময় দিয়েছে আপিল আবেদনের জন্য। এই নিয়ম মেনেই ইস্তাম্বুলের মেয়র পদের ভোট পুনরায় গোনার আবেদন করেছে একেপি। দলটির হয়ে ইস্তাম্বুলের মেয়র পদে প্রার্থী ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম।

গত দুই বছর ধরে তুরস্কের অর্থনীতি কিছুটা অস্থির সময় পার করছে। দেড় যুগ ধরে এরদোগানের দল তুরস্কের সব সেক্টরে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করলেও গত দুই বছর ধরে মুদ্রার মান কমতে শুরু করে। ক্ষমতাসীন দলের অভিযোগ পশ্চিমা বিশ্বের বিরোধীতার কারণে তাদের অর্থনীতি সঙ্কটের মুখে। নির্বাচনের আগেই ধারণা করা হয়েছিল এই বিষয়টি নির্বাচনে দলটির জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিতে পারে। হয়েছেও তাই। বড় তিনিটি নগরীতেই বিরোধী দল ভালো করেছে।

সারাদেশে ক্ষমতাসীন দল জয়ী হলেও বড় তিনটি নগরীর ভোটের চিত্র বলছে, অর্থনীতির এই সমস্যাকে বড় করে দেখেছেন ভোটাররা। মুদ্রার মান স্থিতিশীল রাখতে না পারার কারণে তাই বিরোধীরা রাজধানী আঙ্কারা ও ইজমিরে জয়ে হয়েছেন বলে সংবাদ মাধ্যমে বলা হচ্ছে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top