গণতন্ত্র ও জনগণের স্বাধীনতার স্বার্থে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি কামনা করেছেন সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের বিদায়ী সভাপতি জয়নুল আবেদীন।
আজ বুধবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে সমিতির বিদায়ী কমিটির সংবাদ সম্মলনে তিনি এ মুক্তির দাবি জানান।
অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তিতে সরকারের সদিচ্ছা নেই। রাজনৈতিক মামলা দিয়ে তাকে দীর্ঘদিন ধরে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে। তাকে দিন দিন মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
আগাম জামিনের বিষয়ে নিজের সফলতা তুলে ধরে জয়নুল আবেদীন বলেন, রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলায় যেন সর্বোচ্চ আদালত জামিন দিতে পারে সেজন্য প্রধান বিচারপতির সাথে দেনদরবার করেছি এবং আজকে সকল বেঞ্চেই আগাম জামিন দিচ্ছে এবং বিচারপ্রার্থী মানুষ বিচার পাচ্ছে।
তিনি বলেন, কোনো মামলায় খালেদা হাইকোর্ট জামিন দিলেও সরকারের পক্ষ থেকে বার বার জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হয়। অ্যাটর্নি জেনারেল রাষ্ট্রের জন্য কাজ না করে সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে কাজ করছেন।
এদিকে প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে বারের সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলছেন, খালেদা জিয়া এবং তার পরিবার কোনো আবেদন করেনি। এমনকি সরকারের পক্ষ থেকেও প্যারোলে মুক্তি দিতে কোনো প্রস্তাব দেয়া হয়নি। প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি শুধু গণমাধ্যমেই আমরা জেনেছি।
খোকন বলেন, বেগম জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নিতে এটা একটা কৌশল হতে পারে। বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করে খালেদা জিয়াকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে নেয়ার ষড়যন্ত্র চলছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সুপ্রিম কোর্ট বারের বিদায়ী সভাপতি তার শেষ বক্তব্যে বলেন, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় দীর্ঘদিন জেলখানায় কারাবন্দি আছেন। তিনি দিন দিন শারীরিকভাবে অসুস্থ হচ্ছেন। তাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে তিনি পিজিতে (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) চিকিৎসাধীন আছেন। তাই আজ বিদায় প্রাক্কালে গণতন্ত্র, আইন এবং বিচার জনগণের স্বাধীনতার স্বার্থে খালেদা জিয়ার আশু মুক্তি কামনা করছি।
সভাপতি থাকাকালে বিচারবিভাগের ওপর হওয়া অনেক হামলা প্রতিহত করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় ছিলো ঐতিহাসিক। পরবর্তীতে ষোড়শ সংশোধনী রায়ের কারণে বিচার বিভাগের ওপর আরো কঠিন হামলা এসেছে। তখন প্রধান বিচারপতিকে জোর করে দেশের বাইরে পাঠানো এবং পদত্যাগ করানোর মাধ্যমে সেই সময়কার হামলা সকলের মনে আছে। তবুও এত কিছুর মধ্যেও আইনজীবী সমিতির উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে এগিয়ে গিয়েছি।
সংবাদ সম্মেলনে সমিতির বিদায়ী সহ-সভাপতি ড. মো: গোলাম রহমান ভূঁইয়া ও এম. গোলাম মোস্তফা, কোষাধ্যক্ষ নাসরিন আক্তার, সহ-সম্পাদক কাজী জয়নুল আবেদীন ও মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক, সদস্য মাহফুজ বিন ইউসুফ, সাইফুর আলম মাহমুদ, ব্যারিস্টার আশরাফুল হাদী, শাহানা পারভীন, শেখ মোহাম্মদ মাজু মিয়া, মো: আহসান উল্লাহ ও মোহাম্মদ মেহদী হাসান উপস্থিত ছিলেন।