বাংলাদেশে বর্তমান জাতীয় সংসদে নির্বাচিত বিএনপি-র নির্বাচিত ছয়জন সদস্য যদি এমপি হিসেবে শপথ নিয়ে সভায় আসেন, তাহলে তারাও পার্লামেন্টে কথা বলার যথেষ্ট সুযোগ পাবেন বলে মন্তব্য করেছেন স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী।
‘তারা শপথ নেবেন কি না সে ব্যাপারে আমার কিছু বলার নেই। কিন্তু যদি নেন, তাহলে আমি এটুকু আশ্বস্ত করে বলতে পারি তারা অবশ্যই ফ্লোর পাবেন। সংখ্যার আনুপাতিক হারে সভায় তাদের যতটা শক্তি, তার চেয়ে হয়তো অনেক বেশিই পাবেন’, বাংলা ট্রিবিউনের কাছে মন্তব্য করেছেন তিনি।
গত সপ্তাহে এক সরকারি সফরে ভারতের রাজধানীতে দিল্লিতে তিনদিনের এক সফরে এসেছিলেন বাংলাদেশের স্পিকার। সেখানেই এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন স্পিকার।
গণফোরাম থেকে নির্বাচিত সুলতান মহম্মদ মনসুর এর আগেই এমপি হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন, আজ বুধবার গণফোরামের আর এক বিজয়ী সদস্য মোকাব্বির খানকেও শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী। ফলে জাতীয় সংসদে শপথ নেওয়ার ক্ষেত্রে বাকি রয়ে গেলেন কেবল বিএনপি-র সদস্যরাই।
বিএনপি-র সেই ছজন বিজয়ী সদস্যকে পার্লামেন্টে আনার ক্ষেত্রে স্পিকার কি নিজে থেকে কোনও উদ্যোগ নেবেন? এ প্রশ্নের জবাবে দিল্লিতে শিরিন শারমিন চৌধুরী বলে গেছেন, ‘দেখুন বিএনপি শপথ নেবে কি নেবে না, সেটা তাদের দলীয় সিদ্ধান্ত। রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা থেকেই তারা নিশ্চয় সেটা স্থির করবেন, সেখানে আমার কিছু বলার থাকতে পারে না।’
‘তবে তারা যদি মনে করে থাকেন, মাত্র পাঁচ-ছজন এমপি নিয়ে পার্লামেন্টে গিয়ে কোনও লাভ নেই – আমাদের বক্তব্য সঠিকভাবে তুলে ধরা যাবে না – সেক্ষেত্রে আমি কিন্তু বলব তাদের দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই,’যোগ করেন তিনি।
‘অন্যতম বিরোধী দল হিসেবে তারা যাতে ফ্লোর পান এবং নিজেদের বক্তব্য পেশ করার সুযোগ পান সেটা আমি অবশ্যই নিশ্চিত করব’, বিএনপিকে আগাম এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন স্পিকার শিরিন শারমিন।
স্পিকার তথা জাতীয় সংসদের অভিভাবক হিসেবে তিনি যে সভায় বিএনপি-র সক্রিয় যোগদান চান, সে কথাও খোলাখুলি জানিয়েছেন শিরিন শারমিন চৌধুরী।
কিন্তু বিএনপি-র এই নেতারা শপথ না-নিলে কতদিন তাদের সদস্যপদ বহাল থাকবে?
স্পিকার জানাচ্ছেন, ‘দেখুন, আমাদের বর্তমান সংসদের প্রথম অধিবেশন বসেছে এ বছরের ৩০ জানুয়ারি। নিয়ম বলছে, ওই তারিখ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচিত সদস্যদের এমপি হিসেবে শপথ নিতে হবে – নইলে তাদের সদস্যপদ বাতিল হয়ে যাবে।’
‘এর মধ্যেই তাদের একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা শপথ নেবেন কি না! না নিলে আপনা থেকেই তাদের এমপি হওয়ার সুযোগ খারিজ হয়ে যাবে’, বলছেন শিরিন শারমিন চৌধুরী।
স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী ভারত সফরে এসেছিলেন বাংলাদেশের সংসদ সদস্যদের একটি বড়সড় প্রতিনিধিদলকে নিয়ে। সেই দলে আওয়ামী লীগ এমপি উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ-সহ বেশ কয়েকজন এমপি ছিলেন।
দিল্লিতে তিনি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হন। ২৬ মার্চ বাংলাদেশের দূতাবাস প্রাঙ্গণে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের অনুষ্ঠানেও যোগ দিয়েছিলেন তিনি।
পরদিন দিল্লিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী সফররত স্পিকার ও প্রতিনিধিদলের সম্মানে একটি নৈশভোজেরও আয়োজন করেন। সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন