পঞ্চম ও শেষ ওয়ানডেতে ২০ রানে জয়ী হয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে পাকিস্তানকে হোয়াইট ওয়াশ করেছে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। দুবাইয়ে রোববার হারিস সোহেলের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিও পাকিস্তানের হার এড়াতে পারেনি।
১২৯ বলে ১৩০ রান করা সোহেলের এটি ছিল ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি। প্রথমে ব্যাটিং থেকে ৭ উইকেটে অস্ট্রেলিয়ার করার ৩২৭ রানের ইনিংসের জবাবে পাকিস্তান ৭ উইকেটে ৩০৭ রানে ইনিংস শেষ করে। অস্ট্রেলিয়ান ইনিংসে উসমান খাজার ৯৮ ও ৩৩ বলে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ঝড়ো গতির ৭০রানই মূল ভূমিকা রেখেছে। এছাড়া শন মার্শ ৬১ ও অধিনায়ক এ্যারন ফিঞ্চের ব্যাট থেকে এসেছে ৫৩ রান।
এই সিরিজ জয়ের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়া টানা আটটি ওয়ানডেতে জয় তুলে নিল। এর মধ্যে রয়েছে ভারতের বিপক্ষে ৩-২ ব্যবধানের সিরিজ জয়। এছাড়া ২০০২ সালের পর পাকিস্তানের বিপক্ষে টানা ষষ্ঠ সিরিজ জয়। নিজেদের মাটিতে সর্বশেষ পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে পরাজিত হয়েছিল অসিরা।
এর আগে তিনবার পাকিস্তানকে হোয়াইট ওয়াশের লজ্জা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ১৯৯৮ সালে পাকিস্তানের মাঠে ৩-০, ২০১০ সালে অস্ট্রেলিয়ায় ৫-০ ও ২০১৪ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করেছিল অস্ট্রেলিয়া।
গত বছরের জানুয়ারি থেকে এ বছর মার্চের শুরুতে ভারতের বিপক্ষে প্রথম দুটি ম্যাচ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া ১৮টি ম্যাচের মধ্যে মাত্র তিনটিতে জয়ী হয়েছিল। কিন্তু এরপর একের পর এক ম্যাচ জয় ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপের আগে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের আত্মবিশ্বাস অনেকাংশেই বাড়িয়ে দিয়েছে।
১১টি বাউন্ডারি ও তিনটি ওভার বাউন্ডারির সহায়তায় সোহেলের করা সেঞ্চুরিটি শেষ পর্যন্ত কোন কাজে আসেনি। শন মাসুদের (৫৪ বলে ৫০) সাথে দ্বিতীয় উইকেটে সোহেল ১০৮ রান যোগ করেছেন। এরপর উমর আকমলের (৪৪ বলে ৪৩) সাথে করেছেন আরো ১০২ রান। কিন্তু ৪০ ও ৪১তম ওভারে মাত্র এক রানের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া আকমল ও সোহেলকে তুলে নিলে পাকিস্তানের পরাজয় সময়ের ব্যপার হয়ে দাঁড়ায়। অফ স্পিনার ন্যাথান লিঁও উমরের উইকেটটি তুলে নেবার এক রান পার সোহলেকে থামান কেন রিচার্ডসন। অস্থায়ী অধিনায়ক ইমাদ ওয়াসিম ৬টি বাউন্ডারি ও একটি ওভার বাউন্ডারির সহায়তা অর্ধ শতক রান করলেও তা শেষ পর্যন্ত কোন কাজে আসেনি। আগের ম্যাচে অভিষেকে সেঞ্চুরি তুলে নেয়া আবিদ আলিকে প্রথম ওভারেই শুন্য রানে হারায় পাকিস্তান।
দুটি সেঞ্চুরি ও দুটি হাফ সেঞ্চুরির কারনে অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক ফিঞ্চ সিরিজ সেরা মনোনীত হয়েছেন।
পাকিস্তানের বোলিং আক্রমনকে পাত্তাই দেননি খাজা ও ম্যাক্সওয়েল। শেষ ১০ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার ১০৭ রান যোগ হবার পিছনে ম্যাক্সওয়েলের ১০টি বাউন্ডারি ও তিনটি ওভার বাউন্ডারি সহায়তা করেছে। অবশেষে পেসার জুনায়েদ খানের শিকারে পরিণত হয়ে সাজঘরে ফিরেন ম্যাক্সওয়েল। জুনায়েদ ৬৩ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট।
অন্যদিকে খাজা ১১১ বলের ইনিংসে ১০টি বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন। ফিঞ্চের সাথে উদ্বোধনী জুটিতে তিনি ১৩৪ রানের শক্তিশালী ইনিংস গড়ে দিয়ে গেছেন। পেসার উসমান শিনওয়ারির বলে আউট হবার আগে তিনি সিরিজে সর্বোচ্চ ৪৫১ রানের ইনিংস উপহার দিয়েছেন। ২০১৩ সালে ভারতের বিপক্ষে কোন দ্বিপাক্ষিক সিরিজে জর্জ বেইলির করা ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের থেকে যা মাত্র ২৭ রান কম।
শারজায় অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম দুটি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া আট উইকেটে জয়ী হবার পর আবু ধাবীতে তৃতীয় ম্যাচে ৮০ রানে ও দুবাইয়ে চতুর্থ ম্যাচে ৬ রানে জয়ী হয়েছিল।