আলী আহমেদ চুনকা(মেয়র আইভীর বাবা) জামায়াতের সাথে সংশ্লিষ্ট ছিল এমন একটি অডিও রেকর্ড প্রচারে সহায়তার অভিযোগ এনে নারায়ণগঞ্জের এক ওসির বিরুদ্ধে মামলা করার কথা বলেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশেন মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী।
শামীম ওসমানের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেছেন, জামায়াাতের নারায়ণগঞ্জ আমিরের একটি অডিও প্রচারের মাধ্যমে এই শহরের নির্দেশদাতা, শহরের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় স্টুপিড লোক যিনি শহরে অরাজকতা তৈরি করার চেষ্টা করেন, সেই ভদ্র লোকের নির্দেশে যদি একজন ওসি বলেন, আলী আহম্মদ চুনকার জামায়াতের সাথে সংশ্লিষ্টতা ছিল। তাহলে আমি যাবো কোথায়? আমি ঐ ওসির বিরুদ্ধে মামলা করবো।
উল্লেখ্য জামায়াতের নারায়ণগঞ্জ মহানগর আমীর মাওলানা মাঈনউদ্দিন আহমেদ সম্প্রতি ফতুল্লা থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের সময় আইভীর বাবা মরহুম আলী আহমেদ চুনকার সাথে তাদের সম্পর্ক ছিল এমন বক্তব্য সম্মিলিত একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়। শামীম ওসমানের নির্দেশে ঐ অডিও প্রচারে সহায়তা করেন ওসি এমন অভিযোগ তোলেন মেয়র আইভী।
শনিবার রাতে নগরীর দেওভোগ দুই নং বাবুরাইল এলাকায় জনকল্যাণ সংসদের শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন।
মেয়র আইভী বলেন, আমার বাবা আলী আহম্মদ চুনকাকে এই শহরের এমন কোনো মানুষ নেই যে, না চিনত! আমি হয়তো আমার বাবাকে ভালো করে দেখতে পারি নাই, যেটা আপনারা দেখেছেন। আমি এই এলাকার মুরুব্বিদের কোলে পিঠে করেই বড় হয়েছি। আমি সেই সন্তান। এখন আপনাদের চোখের সামনে আমার নামে বিভিন্ন কথা বলা হয় ‘বলুক’ কিন্তু আলী আহম্মদ চুনকাকে নিয়ে যখন বলে যে, তিনি রাজাকারের পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। তখন তো এই শহরের দুই চার, পাঁচজন মানুষের উচিৎ নয় কী এ বিষয়ে কথা বলা! এত ভয় কেন?
মেয়র বলেন, ৪০ বছর আগে আমার বাবা পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। তিনি এ মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্ব দিয়েছেন। যারা মুক্তিযোদ্ধা আছেন, তাঁরা তো দেখেছে, তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্ব দিয়েছেন। কত রক্তপাত ঠেকিয়েছেন। আজ তার বিরুদ্ধেই কথা বলা হয়। আর আমরা চুপ করে থাকি!
মেয়র আইভী বলেন, একদিন এমন হবে যখন নিজেরা বিপদে পড়বেন তখন অন্য কেউ এগিয়ে আসবে না। আমি বলবো না যে, আপনারা আমার মতো রাস্তায় নামেন। অন্তত এর বিরুদ্ধে আল্লাহর কাছে তো প্রতিবাদ করতে পারেন। আল্লাহ যেন তাদের বিচার করে। আমার বাবা তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা তাকে রাজাকারের সাথে সংশ্লিষ্টতার কথা বলা হয়! তাহলে তো আমি মনে করি এই শহরের সকল মুক্তিযোদ্ধার রাজাকারের সাথে সংশ্লিষ্টতা আছে।
অনুষ্ঠানে মেয়র আইভী বলেন, হাজীগঞ্জ কেল্লা মামলা চলছে। আমরা ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে উচ্ছেদে যাবো। উচ্ছেদ বলতে পুলিশের সহযোগিতায়। মামলার রায় হয়েছে। আদালত একদম স্পষ্ট ভাবে অর্ডার দিয়েছে ডিসি এসপি নিয়ে উচ্ছেদ করে ওই জায়গা পরিষ্কার করে জনগণের ব্যবহারের সুযোগ তৈরি করে দিতে।
তিনি আরো বলেন, আমি যেই কাজটাই করি বাধা আসে! আপনারা ভাবেন মেয়র কেন এত ঝগড়া করে? আপনারা ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে দেখবেন, মেয়র যা কিছু করে সব সাধারণ মানুষের ভালোর জন্য করে। এই শহরে যত কঠিন কাজ আছে সব আমার জন্য, আর আমি মনে করি আমারে সব কঠিন কাজের জন্যই পাঠানো হয়েছে।
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক আব্দুর রাশেদ রাশু, নাসিকের সাবেক প্যানেল মেয়র হাজী ওবায়েদুল্লাহ, জনকল্যাণ সংসদের সাধারণ সম্পাদক খাবির আহমেদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলমাস আলী প্রমুখ।