রাজধানীর বনানীর এফ আর টাওয়ারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় ফায়ার সার্ভিস। উদ্ধার কাজে যোগ দেয় নৌ ও বিমান বাহিনীও।
তাদের সহযোগিতায় হাত বাড়িয়ে দেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাধারণ মানুষ। যে যেভাবে পেরেছেন সবাই উদ্ধারকারী বাহিনীকে সহযোগিতা করেন। এর মধ্যে রয়েছেন শিশুরাও।
এমনই একটি শিশুর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরছে। ছবিতে দেখা যায়, একটি শিশু পানির পাইপের ছিদ্র বন্ধ করার জন্য এর ওপর বসে আছে। এ ঘটনায় প্রশংসায় ভাসছে শিশুটি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার পক্ষে প্রশংসায় পঞ্চমুখ সবাই।
একজন লিখেছেন, ছোট, সামান্য কাজ বলে উড়িয়ে দেবো? সেই উচ্চতা আছে আমাদের! ওর উদ্বেগাকুল, কান্নাভরা চোখের দিকে তাকান, মুখটা ভাল করে দেখুন। অচেনা মানুষগুলোর জন্য কচিমুখটায় কত মায়া তাঁর। আমার আপনার আছে তা? আসুনতো দেখি, বুকে হাত দিয়ে বলি।
অভিনয় করছে, নাকি খেলছে! সাহস থাকলে বলেন দেখি অভিনয় করছে,নয়তো খেলছে। চুপ করে আছেন কেন? বলুন।
আমার সাহস নেই বলার, কারণ এই শিশুটির বুকটা অনেক বড়, অনেক।
তবে এই শিশুটির পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, রাজধানীর বনানীর এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এ পর্যন্ত ২৫ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৪টি লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
পুলিশের গুলশান বিভাগের ডিসি মোস্তাক আহমেদ আজ শুক্রবার সকালে এফআর টাওয়ারের সামনে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। এ সময় তিনি জানান, বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২৪টি লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আর এ পর্যন্ত মোট ২৫টি লাশ পাওয়া গেছে। বাকি একজনের লাশ ঢাকা মেডিকেলে আছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বনানীর ১৭ নম্বর রোডে ২২ তলা এফ আর টাওয়ারের নবম তলায় আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট কাজ করে। এদের সঙ্গে যোগ দেন সেনা, বিমান ও নৌবাহিনীর সদস্যরা। এলাকার সাধারণ মানুষও উদ্ধারকাজে অংশ নেন। উদ্ধারকাজে অংশ নেয় ৫টি হেলিকপ্টার। বালি-পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালানো হয়। হেলিকপ্টারগুলো বাতাস দিয়ে ধোঁয়া সরানোর চেষ্টা করে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ছয় ঘণ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
সন্ধ্যায় একাংশের আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর ফায়ার সার্ভিসকর্মী ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরে প্রবেশ করেন। সেখানে আহত ও নিহতদের উদ্ধার করে নিচে নামিয়ে আনেন।
এদের অনেকেই দগ্ধ হয়েছেন। ধোঁয়ার কারণে অজ্ঞান হয়েও মারা গেছেন কেউ কেউ। আবার জীবিতও অনেককে উদ্ধার করা হয়।
ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে গত রাতে নিহতের সংখ্যা ১৯ জন বলে জানানো হয়েছিল।
রাত সোয়া ৯টা পর্যন্ত বলা হয় ১৯ জন মারা যাওয়ার তথ্য দেয়া হয়। কিন্তু হঠাৎ ১১টা ১০ মিনিটে ঘোষণা দেয়া হয় মৃতের সংখ্যা ২৫। এ বিষয়ে সাংবাদিকরা কথা বলতে গেলে তারা দ্রুত মৃতের সংখ্যা গণনা শেষে ফের ঘোষণা দেন মৃত ১৯।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৭৩ জন।