প্রথম মেসি, দ্বিতীয় মেসি, তৃতীয় মেসি, চতুর্থ সার্জিও রবার্তো

প্রথম হলেই যে ক্লাসে একজন ছাত্রই থাকতে হবে সব সময় তা হওয়ার দরকার পড়ে না। মেসির বেলায় তো একেবারেই না। কারণ বার্সোলোনার ইতিহাস তো আর একদিনের নয়। পুরো দশটি যুগ অর্থাৎ একশ বিশ বছর কাটিয়ে ফেলেছে ১৮৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া দলটি।

সেই দলটি সম্প্রতি বার্সেলোনার সেরা গোলগুলো খুঁজে পেতে একটি অনলাইন ভোটের আয়োজন করেছিল। বার্সোলোনায় তো বিখ্যাত ফুটবলাররা আর কম দৌড়াননি বা কম গোল করেননি। তাই গত তিন মাস ধরে শোনা যাচ্ছিল সেরা গোল নিয়ে অনেক ধরনের কথাবার্তা। তারপরও যে ফলাফল এসেছে তা অবাক করার মতোই। এ তালিকার শীর্ষে থাকা গোলটি করেছেন ফুটবলের জীবন্ত কিংবদন্তি লিওনেল মেসি, দ্বিতীয়তে থাকা গোলটিও করেছেন মেসি, তৃতীয় গোলটিও এসেছে মেসির পা থেকেই। চতুর্থ স্থানটি দখলে নিতে পেরেছেন সার্জিও রবার্তো। অর্থাৎ ক্লাসে ছাত্র অনেকে থাকলেও প্রথম তিনটি স্থানই মেসির!

তিন গোলের মধ্যে প্রথম সেরা নির্বাচিত হয়েছে ২০০৬-০৭ মৌসুমে কোপা ডেল রের সেমিফাইনালে গেটাফের বিরুদ্ধে করা তার সেই আলোচিত গোলটি। তাতে মেসি বলটি আটকেছিলেন নিজেদের সীমানাতেই। তারপর দশ সেকেন্ডের ভেতর চার ডিফেন্ডারের জাল কেটে ৬০ মিটার দৌড়ে বক্সে ঢুকে পড়েন মেসি। তারপর গোলরক্ষককে একটু ডজ। তাতেই গোলরক্ষক চলে যান অনেকটা সামনে। মেসিও এগিয়ে যান আরেকটু। সেখান থেকে কাট করে বল জালে পাঠিয়ে দেন। ফিনিশিংয়ের আগ পর্যন্ত ১৩ বার বল টাচ করেন এই ফরোয়ার্ড। এ গোলটি পেয়েছে ৪৫ শতাংশ ভোট।

ম্যারাডোনা ৮৬ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের সাথে খেলা ম্যাচে অনেককে কাটিয়ে গোল দিয়ে ফুটবলমোদীদের চোখে ধাঁধা লাগিয়ে দিয়েছিলেন। মেসির গোলটিকেও এ গোলের সাথে তুলনা করা হয়।

বার্সার ইতিহাসে দ্বিতীয় সেরা গোলটি আসে ২০১৪-১৫ মৌসুমে, কোপা ডেল রের ফাইনালে। আতলেতিকো মাদ্রিদের জালে ঢোকানো মেসির এই গোলটি পেয়েছে ২৮ শতাংশ ভোট। তৃতীয় সেরা গোল ২০১০-১১ মৌসুমে, চির প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে। এই গোলটি পেয়েছে ১৬ শতাংশ ভোট। ৬০টি এলিমিনেটরি রাউন্ড শেষে মোট চারটি গোল গত সপ্তাহে চূড়ান্ত ভোটের জন্য নির্বাচিত হয়। চতুর্থ সেরা গোল নির্বাচিত হয় ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগে পিএসজির বিপক্ষে করা সার্জি রবার্তোর একটি গোল।

গত ডিসেম্বরে অনলাইনে এ বিষয়ে ভোট নেয়া শুরু করে বার্সেলোনা। তালিকায় ছিল ৬৩টি দুর্দান্ত গোল। এরপর গত তিন মাসে ১৬০টি দেশের প্রায় ৫ লাখ মানুষ ভোট দিয়ে এ চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করেন।

ক্যারিয়ারের শুরুতেই স্পেনের ক্লাব বার্সেলোনাতে ঢুকে পড়েন আর্জেটাইন কিংবদন্তি লিওনেল মেসি। তারপর থেকে বার্সেলোনার হয়ে রেকর্ড করেছে অসংখ্য। এতে নিজের ভাণ্ডার যেমন সমৃদ্ধ হয়েছে, তেমনি সমৃদ্ধ হয়েছে বার্সেলোনার ভাণ্ডার।

অন্য দলগুলো যেখানে নেইমার, রোনালদো দলে ধরে রাখার জন্য টেনশনের বড় একটি বরাদ্দ রাখে, তেমনটিও করার প্রয়োজন হয় না মেসির ক্ষেত্রে। বরং মেসি বলেন, ক্যারিয়ারের শেষ করতে চান বার্সেলোনাতেই। ফলে সব মিলিয়ে বার্সেলোনার জন্য বড় একটি স্বস্তির নাম লিওনেল মেসি।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top