এফআর টাওয়ারে আগুন : ঘটনাস্থলে মেয়র ও পূর্তমন্ত্রী

রাজধানীর বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ঘটনাস্থলে এসেছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম ও গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

আজ শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে তারা সেখানে যান।

এ সময় পূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, তদন্তে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হবে।

আর মেয়র আতিকুল বলেন, ‘আর কথা নয়, এবার আমরা অ্যাকশনে যেতে চাই।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সাত দিন সময় দিয়ে ভবন মালিকদের নোটিশ করবো। এর মধ্যে সমস্যাগুলো নিজ দায়িত্বে সমাধানের সময় দেব। এর পরেই আমরা অ্যাকশনে যাব। কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।’

মেয়র আরো বলেন, ‘আমাদের ইচ্ছার কোন ঘাটতি নেই। অবৈধ ভবনের মালিক যেই হোক না কেন তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে বনানীর ১৭ নম্বর রোডে ২২ তলা এফআর টাওয়ারের নবম তলায় আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট কাজ করে। এদের সঙ্গে যোগ দেন সেনা, বিমান ও নৌবাহিনীর সদস্যরা। এলাকার সাধারণ মানুষও উদ্ধারকাজে অংশ নেন। উদ্ধারকাজে অংশ নেয় ৫টি হেলিকপ্টার। বালি-পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালানো হয়। হেলিকপ্টারগুলো বাতাস দিয়ে ধোঁয়া সরানোর চেষ্টা করে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ছয় ঘণ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

বেলা ১টার দিকে ভবনটির ৯ তলা থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে ফায়ার সার্ভিস। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করে। পাশাপাশি বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার, সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর সদস্যরা আগুন নিভানোর কাজ করেন। বিকেল ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে ফায়ার সার্ভিস জানায়।

এফআর টাওয়ারে রয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অফিস ও ব্যাংক। গার্মেন্টে বায়িং হাউজ ছাড়াও বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের অফিস, বিক্রয় কেন্দ্র, রেস্তোরাঁ এবং একটি কনভেনশন সেন্টার রয়েছে ওই ভবনে। এ ছাড়া তৃতীয় তলায় রয়েছে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের একটি শাখা। সেসব প্রতিষ্ঠানে কত মানুষ কাজ করেন, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি।

সন্ধ্যায় একাংশের আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর ফায়ার সার্ভিসকর্মী ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরে প্রবেশ করেন। সেখানে আহত ও নিহতদের উদ্ধার করে নিচে নামিয়ে আনেন।

এদের অনেকেই দগ্ধ হয়েছেন। ধোঁয়ার কারণে অজ্ঞান হয়েও মারা গেছেন কেউ কেউ। আবার জীবিতও অনেককে উদ্ধার করা হয়।
ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে গত রাতে নিহতের সংখ্যা ১৯ জন বলে জানানো হয়েছিল।

রাত সোয়া ৯টা পর্যন্ত বলা হয় ১৯ জন মারা যাওয়ার তথ্য দেয়া হয়। কিন্তু হঠাৎ ১১টা ১০ মিনিটে ঘোষণা দেয়া হয় মৃতের সংখ্যা ২৫। এ বিষয়ে সাংবাদিকরা কথা বলতে গেলে তারা দ্রুত মৃতের সংখ্যা গণনা শেষে ফের ঘোষণা দেন মৃত ১৯।

এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৭৩ জন।

আজ শুক্রবার সকালে পুলিশের গুলশান বিভাগের ডিসি মোস্তাক আহমেদ এফআর টাওয়ারের সামনে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। এ সময় তিনি জানান, বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২৪টি লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আর এ পর্যন্ত মোট ২৫টি লাশ পাওয়া গেছে। বাকি একজনের লাশ ঢাকা মেডিকেলে আছে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top