‘খালেদা জিয়াকে কেরানীগঞ্জে স্থানান্তরের চিন্তাভাবনা চলছে’

তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কারাগার থেকে কেরানীগঞ্জের নতুন কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তরের চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

বুধবার আশুলিয়ার বঙ্গবন্ধু রোড এলাকায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারটি অনেক পুরাতন, এটা আমরা জাদুঘর হিসেবে রূপান্তর করতে যাচ্ছি। জাদুঘরের কাজ খুব শিগগিরেই শুরু হবে। কাজেই তখন জাদুঘরের কাজ শুরু হয়ে গেলে এখানে আর কাউকে রাখা সম্ভব হবে না।

‘সেইজন্য আমরা পাশেই কেরানীগঞ্জে অত্যাধুনিক যে কারাগার আমরা করেছি, সেই কারাগারে আাদের সব কিছুই সুসম্পন্ন হয়েছে। সেইখানে আমরা নেবার চিন্তাভাবনা করছি।’ খালেদা জিয়াকে কবে সেখানে নেওয়া হতে পারে- এই প্রশ্নে সুনির্দিষ্ট কোনো দিনক্ষণ না জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মোটামুটি রেডি আছে। যে কোনো সময় আমরা প্রয়োজন হলেই…।’

নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে দুই বছর আগেই বন্দিদের কেরানীগঞ্জে নির্মিত নতুন কারাগার ভবনে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। গতবছর ফেব্রুয়ারিতে জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা হলে তাকে ওই পুরনো কারাগারের একটি ভবনে রাখা হয়। সেখানে তিনিই একমাত্র বন্দি।

পরিত্যক্ত ওই কারাভবনের স্যাঁতস্যাঁতে কক্ষে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের মারাত্মক অবনতি হয়েছে বলে অভিযোগ করে আসছেন বিএনপি নেতারা। সম্প্রতি চকবাজারের চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনার পর ওই এলাকার কয়েকশ গজ দূরে কেন্দ্রীয় কারাগারে খালেদা জিয়া নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তবে চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে খালেদা জিয়াকে অন্য কারাগারে স্থানান্তরের পরিকল্পনার খবর এলে রিজভী বিষয়টিকে বর্ণনা করেন ‘সরকারের চক্রান্ত’ হিসেবে।

মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে খালেদা জিয়াকে মার্চের শুরুতে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হলেও তিনি রাজি হননি। পরে বিএনপি নেতাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, খালেদা ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে চান, বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে নয়।

তাকে প্যারোলে মুক্তি দিয়ে বিদেশে পাঠানো হচ্ছে- এমন একটি গুঞ্জনের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন সাংবাদিকরা। আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল উত্তরে বলেন, বিএনপির তরফ থেকে এখন পর্যন্ত ওই ধরনের কোনো প্রস্তাব সরকারের কাছে আসেনি।

‘তাছাড়া বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে কারাগারে রয়েছেন। তাকে প্যারোলে মুক্তি পেতে হলেও আদালতের মাধ্যমেই আসতে হবে।’

সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার আগে আশুলিয়ার বঙ্গবন্ধু রোডে বোধিজ্ঞান ভাবনা কেন্দ্রে (বৌদ্ধ বিহারে) সদ্ধর্ম দেশনাসহ বিদর্শন ভাবনা অনুশীলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন মাদবরসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top