দুলাভাইয়ের চাপাতির কোপে এক দাখিল পরীক্ষার্থী শ্যালক নিহত হয়েছে। এসময় ওই শ্যালককে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে নিজের শাশুড়ি ও স্ত্রীকেও কুপিয়ে আহত করে ঘাতক দুলাভাই। ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের জোলারপাড় এলাকায়। অভিযুক্ত ঘাতক দুলাভাইয়ের নাম মুসা আলম (৪৫)।
দুলাভাই মুসার হাতে নিহত শ্যালকের নাম আশিকুর রহমান (১৮)। সে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের জোলারপাড় এলাকার আল আমিনের ছেলে। নিহত আশিকুর রহমান চলতি বছর স্থানীয় পোড়াবাড়ী সাবেরিয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।
র্যাব-১’র স্পেশালাইজড কোম্পানী পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের এএসআই আবু তালেব জানান, গাইবান্ধা সদর উপজেলার মোল্লার চর এলাকার জাবেদ আলমের ছেলে মুসার সঙ্গে প্রায় ৬ বছর আগে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের জোলারপাড় এলাকার আল আমিনের মেয়ে আঞ্জুমানয়ারা বেগমের বিয়ে হয়। আঞ্জুমানয়ারা বেগম ঘাতক মুসা আলমের দ্বিতীয় স্ত্রী।
বিয়ের পর আঞ্জুমানয়ারা ও মুসা দম্পতি গাজীপুর উত্তর সালনা এলাকায় রাজিয়া খাতুনের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। আঞ্জুমানয়ারা স্থানীয় প্রীতি গ্রুপের ডটকম সোয়েটার কারখানায় চাকরি করেন এবং স্বামী মুসা কাঁচামালের ব্যবসা করেন। বিয়ের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মাঝে দাম্পত্য কলহ চলে আসছিল।
এএসআই আবু তালেব আরো বলেন, মুসা প্রতিমাসেই তার কাছে স্ত্রীর বেতনের পুরো টাকা দাবি করতো। কিন্তু আঞ্জুমানয়ারা এতে রাজী না হলে মঙ্গলবার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে মুসা তার স্ত্রীকে মারধর করলে আঞ্জুমানয়ারা তার মা-ভাইকে খবর দেন। খবর পেয়ে মুসার শাশুড়ি আসমা বেগম ও শ্যালক আশিকুর রহমান ওই বাড়িতে যায়।
পরে মা ও ভাই আঞ্জুমানয়ারাকে সঙ্গে নিয়ে রাতে নিজেদের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথে তারা দক্ষিণ সালনা পূর্বপাড়া এলাকায় পৌঁছালে হঠাৎ মুসা পেছন থেকে আশিকের ঘাড়ে চাপাতি দিয়ে কোপ দেয়। এতে আশিক আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এ সময় আশিককে বাঁচাতে তার শাশুড়ি ও স্ত্রী এগিয়ে গেলে মুসা তাদেরকেও কুপিয়ে পালিয়ে যায়।
পরে এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে গুরুতর আহত আশিককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
গাজীপুর মহানগর সদর থানার ওসি সমীর চন্দ্র সূত্রধর জানান, এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।