পাকিস্তানে হামলা চালাতে গিয়ে আটক অভিনন্দন বর্তমান অসুস্থতাজনিত ছুটি পাওয়ার পর নিজের স্কোয়াড্রনেই সময় কাটাচ্ছেন। কিন্তু তাকে কোনো বিমান পরিচালনা করতে দেয়া হচ্ছে না কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে।
২৭ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে তার মিগ ২১ বাইসন বিধ্বস্ত হওয়ার পর জনতার হাতে ধরা পড়েন ভারতীয় বিমান বাহিনীর উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। প্রথমে তিনি ওই জায়গাটিকে ভারত মনে করেছিলেন। কিন্তু পরে পাকিস্তানের এলাকা বুঝতে পেরে ঘিরে থাকা লোকজনকে ভয় দেখাতে ফাঁকা গুলি ছোড়েন তিনি। এতে ক্ষুব্ধ জনতার হাতে গণপিটুনির শিকার হন। তবে কিছু সময়ের মধ্যেই পাকিস্তানের সেনা সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হয়ে অভিনন্দনকে নিজেদের জিম্মায় নিয়ে গেলে জনতার হাত থেকে রক্ষা পান তিনি।
এরপর ২৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান অনেকটা আকস্মিকভাবে কোনো প্রকার শর্ত ছাড়াই অভিনন্দনের মুক্তির কথা ঘোষণা করেন। এটিকে তিনি শান্তির বার্তা হিসেবে বর্ণনা করেন। পরদিন ১ মার্চ তাকে মুক্তি দেয়া হয়।
ভারতে ফিরে রাজনীতিবিদসহ সর্বস্তরের মানুষের ব্যাপক প্রশংসা পেলেও অভিনন্দন বর্তমানকে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হয়। দুই সপ্তাহ ধরে চলে এ জিজ্ঞাসাবাদ। সে সব পরীক্ষার পাশাপাশি তাকে শারীরিক চিকিৎসাও দেয়া হয়। তার অবস্থা পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা তাকে চার সপ্তাহের জন্য বিশ্রামে যেতে বলেন। সে হিসেবে তাকে ওই ছুটি দেয়া হয়। কিন্তু ছুটিতে চেন্নাইয়ে পরিবারের কাছে যাওয়ার পরিবর্তে তিনি শ্রীনগরে নিজের স্কোয়াড্রনেই ফিরে আসেন।
অভিনন্দনের এইভাবে ধরা পড়া ও মুক্তির ব্যাপারে অনেকেই অসন্তুষ্ট। কারণ এর আগে ভারত যতটা জোরের সাথে পাকিস্তানকে দোষারোপ করছিল, পাইলটের ধরা পড়া এবং নিঃশর্ত মুক্তির পর ভারতের সে অবস্থানটি নষ্ট হয়ে যায়। এজন্য আনুষ্ঠানিকভাবে অভিনন্দনকে অভিনন্দন জানানো হলেও তার প্রতি প্রশ্ন রয়ে যায় অনেক। ধারণা করা হচ্ছে, চেন্নাইয়ে গেলে নতুন করে আবার তাকে এসব প্রশ্নের মুখোমুখি পড়তে হতে পারে। তাই তিনি পরিবারের সাথে সময় কাটানোর চেয়ে স্কোয়াড্রনে ফিরে আসাকেই ভালো মনে করছেন। অবশ্য দেশটির বিমানবাহিনী বলছে, ছুটি কাটানোর জায়গা বাছার ব্যাপারে সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে তার।
এদিকে স্কোয়াড্রনে ফিরে আসলেই যুদ্ধবিমানের ককপিটে বসতে পারছেন না তিনি। এর আগে তাকে মেডিক্যাল বোর্ডের পরীক্ষায় পাস করতে হবে। ওইসব জিজ্ঞাসাবাদের রিপোর্ট ও মেডিক্যাল রিপোর্ট সন্তোষজনক পাওয়া গেলেই যুদ্ধবিমানের পাইলটের আসন আবারো পেতে পারেন তিনি।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের পুলওয়ামায় আধা-সামারিক বাহিনী সিআরপিএপের গাড়িবহরে এক আত্মঘাতী হামলায় ৪৪ জন নিহত হয়। এর জবাবে পাকিস্তানের বালাকোটে হামলা চালায় ভারতের বিমানবাহিনী। পরদিন পাকিস্তান হামলা চালায় ভারতে। এর কিছুক্ষণ পর ভারতের কয়েকটি বিমান পাকিস্তানের হামলা চালাতে গেলে বিমানযুদ্ধে ভারতের মিগ-২১ বাইসন বিমান বিধ্বস্ত হয়। আর এ ঘটনায় আটক হন ওই বিমানের পাইলট অভিনন্দন বর্তমান।