ক্যারিবিয়ান দৈত্যের ব্যাটে দ্বাদশ আইপিএলের শুরুটা মন্দ হলো না কিংস ইলেভেনের৷ অবশ্যর গোলাপি শহরে গেইল ঝড়ের পরও জিততে পারনি রাজস্থান। সোমবার পাঞ্জাবের কাছে ১৪ রানে হেরে যায় তারা।
ইনিংসের শুরুতে লোকেশ রাহুলের উইকেট হারালেও গেইলের দায়িত্বশীল ইনিংস কিংস ইলেভেনকে ভদ্রস্থ স্কোরে পৌঁছে দেয়৷ গেইল ছাড়া ময়াঙ্ক আগরওয়াল ২২ এবং সরফরাজ খান ২৯ বলে ৪৬ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন৷ তবে দ্বাদশ আইপিএলের প্রথম ম্যাচেই গেইল শো দেখল গোলাপি শহর৷ ৪৭ বলের ইনিংসে চার ছক্কা ও আটটি বাউন্ডারি মারেন মাইলস্টোন ম্যান৷ ইনিংসের শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে কিংসদের ১৮৪ রানে পৌঁছে দেন সরফরাজ৷
এদিন ইনিংসের শুরুতেই মাইলস্টোনে পৌঁছন বাঁ-হাতি ক্যারিবিয়ান ওপেনার৷ ব্যক্তিগত ৬ রান করে আইপিএলে ৪ হাজার রানের মাইলস্টোন ছুঁয়ে ফেলেন গেইল৷ সেই সঙ্গে দ্বিতীয় বিদেশি খেলোয়াড় হিসেবে ৪ হাজার রানের গণ্ডি টপকে যান তিনি৷ তবে ডেভিড ওয়ার্নারকে টপকে দ্রুততম এই মাইলস্টোন টপকে গেলেন গেইল৷
১১৪টি ইনিংস খেলে ৪ হাজার রানের মাইলস্টোনে পৌঁছেছিলেন ওয়ার্নার৷ কিন্তু ১১২তম ইনিংসে ৪ হাজার রান করে ওয়ার্নারকে টপকে যান গেইল৷ শুধু তাই নয়, ওয়ার্নারের পর দ্বিতীয় বিদেশি ক্রিকেটার হিসেবে এই ৪ হাজার রানের গণ্ডি টপকালেন গেইল৷ তবে আইপিএল নবম ক্রিকেটার হিসেবে এই এলিট ক্লাবে নাম লেখালেন ক্যারবিয়ান ব্যাটসম্যান৷
ওয়ার্নার ছাড়াও গেইলের আগে ৪ হাজার ক্লাবে নাম লিখিয়েছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ক্যাপ্টেন বিরাট কোহলি, মহেন্দ্র সিং ধোনি, সুরেশ রায়না, গৌতম গম্ভীর, রোহিত শর্মা, রবীন উথাপ্পা ও শিখর ধাওয়ান৷ তবে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে আইপিএলে ৫০০০ রানের মাইলস্টোন টপকেছেন একমাত্র সুরেশ রায়না৷ শনিবার চিপকে দ্বাদশ আইপিএলের প্রথম ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সের বিরুদ্ধে কোহলিকে টপকে পাঁচ হাজার রানের গণ্ডি টপকে যান রায়না৷
২০০৯ কলকাতা নাইটরাইডার্সের হয়ে প্রথমবার আইপিএল অভিষেক হয় গেইলের৷ তার পর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে খেলেন তিনি৷ কিন্তু গত বছরে কিংস ইলেভেনে যোগ দেন ক্যারিবিয়ান দৈত্য৷ প্রীতি জিন্টার দলের হয়ে গত মরশুমে ১১টি ম্যাচে ৩৬৮ রান করেন৷ যার মধ্যে ছিল একটি সেঞ্চুরি এবং তিনটি হাফ-সেঞ্চুরি৷ আইপিএলের ইতিহাসে সর্বাধিক ছ’টি সেঞ্চুরি রয়েছে তাঁর দখলেই৷ হাফ-সেঞ্চুরি করেছেন ২৪টি৷ আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের ইনিংসও গেইলের ঝুলিতে৷ ২০১৩ পুণে ওয়ারিয়র্সের বিরুদ্ধে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে ১৭৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন গেইল৷
রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে হেরে গেল রাজস্থান
আইপিএলের প্রথম ম্যাচটি হার দিয়ে শুরু করল রাজস্থান রয়্যালস। শেষ ওভারে ম্যাচ জিততে দরকার ছিল ২১ রান। মাত্র ৬ রানের বেশি তুলতেই পারল না স্টিভ স্মিথের দল। ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে তারা তুলল ১৭০ রান। শেষ ওভারের প্রথম বলেই আউট হয়ে গেলেন জয়দেব উনাদকাট। নিজের বলেই ক্যাচ ধরলেন অঙ্কিত রাজপুত। পরের বলেই ফের আউট কৃষ্ণাপ্পা গৌতম। এবার বলে ছিলেন অঙ্কিত রাজপুত। ক্যাচটি ধরেন মহম্মদ শামি। এর আগে পাঞ্জাবের ১৮৪ রান তাড়া করতে নেমে দারুণ শুরু করেছিল রাজস্থান রয়্যালস। ফের বিধ্বংসী মেজাজে ব্যাট করলেন জোস বাটলার। তার ৬৯ রানের দুর্ধর্ষ ইনিংসটি সাজানো ছিল দুটি ছক্কা এবং দশটি চার দিয়ে। মাত্র ৪৩ বলে রানটি করেন তিনি। অধিনায়ক অজিঙ্ক রাহানেও খেলছেন অতি ভরসাযোগ্য এক ইনিংস। বাটলারকে যোগ্য সহায়তা করছিলেন তিনি। তারপরই যেন গা ঝাড়া দিয়ে উঠল কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব।
রাহানেকে বোল্ড করেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তারপরই মুহূর্তের অসতর্কতায় ফিরে গেলেন জোস বাটলারও। বল করছিলেন অশ্বিন। তিনি নন-স্ট্রাইকার এন্ডে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ক্রিজ থেকে দু’পা এগিয়ে গিয়েছিলেন বাটলার। অশ্বিন বল করা থামিয়ে বলটি দিয়ে বেলটি ফেলে দেন। দৃশ্যতই প্রবল অসন্তুষ্ট বাটলার মাথা নাড়তে নাড়তে ফিরে যান ড্রেসিংরুমে। অশ্বিনের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতেও জড়িয়ে পড়েন তিনি।