পাকিস্তান দলে পরিবর্তন

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ তিন ওয়ানডে ম্যাচের জন্য ডান-হাতি পেসার ফাহিম আশরাফকে বিশ্রাম দিলো পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। গতরাতে শারজাহ’তে দ্বিতীয় ওয়ানডে শেষে এই তথ্য দেয় পাকিস্তান টিম ম্যানেজমেন্ট।

আসন্ন ওয়ানডে বিশ্বকাপের কথা চিন্তা করেই ফাহিমকে বিশ্রাম দিয়েছে পাকিস্তান। তবে ফাহিমের পরিবর্তে অন্য কাউকে দলে নেয়নি পাকিস্তান। কারন দলে পাঁচজন পেসার রয়েছে। এরা হলেন- মোহাম্মদ আমির, জুনায়েদ খান, মোহাম্মদ আব্বাস, মোহাম্মদ হাসনাইন ও উসমান খান শিনওয়ারি।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে আশানুরুপ কিছুই করতে পারেননি ২৫ বছর বয়সী ফাহিম। দুই ম্যাচে ব্যাট হাতে ৪২ রান ও ৯৫ রানে ১ উইকেট নেন তিনি।

পাকিস্তানের হয়ে এখন পর্যন্ত ৪ টেস্টে ১১, ২০ ওয়ানডেতে ১৯ ও ২৫টি টি-২০তে ২৪ উইকেট নেন ফাহিম।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম দুই ওয়ানডেতেই হেরেছে পাকিস্তান। সিরিজের বাকী তিন ম্যাচ হবে বুধবার (আবু ধাবি), শুক্রবার ও রোববার (দুবাই)।

ফিঞ্চের সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়ার জয়

প্রথম ম্যাচের পর দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও সেঞ্চুরি করলেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। তার সেঞ্চুরিতে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া ৮ উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তানকে। ফলে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল অসিরা। ক্যারিয়ার সেরা অনবদ্য ১৫৩ রানের ইনিংস খেলেন ফিঞ্চ। প্রথম ওয়ানডেতে ১১৬ রান করেছিলেন তিনি।

শারজাহ’তে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং বেছে নেন পাকিস্তানের অধিনায়ক শোয়েব মালিক। দলীয় ৩৫ রানের মধ্যে দুই ওপেনার ইমাম উল হক ও শন মাসুদকে হারায় পাকিস্তান। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান হারিস সোহেল তিন নম্বরে নেমে এবার ৩৪ রান করেন। ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন উমর আকমলও। ফলে ১১২ রানে চতুর্থ উইকেট হারিয়ে বসে পাকিস্তান। সেখান থেকে দলের হাল ধরেন মোহাম্মদ রিজওয়ান ও অধিনায়ক শোয়েব মালিক।
দলকে বড় স্কোরের ভিত গড়ে দেন রিজওয়ান ও মালিক। রান তোলার কাজটা দক্ষতার সাথেই করেছেন তারা। তাই এই জুটিতে ১৩৩ বলে ১২৭ রান যোগ হয়। ৬১ বলে ৬০ রান করে ফিরেন মালিক। তবে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন রিজওয়ান। নিজের ২৯তম ম্যাচে সেঞ্চুরির দেখা পেলেন রিজওয়ান।
সেঞ্চুরি তুলে ১১৫ রানে থামেন রিজওয়ান। তার ১২৬ বলের ইনিংসে ১১টি চার ছিলো। ৪৭তম ওভারে তার বিদায়ের পর শেষদিকে ইমাদ ওয়াসিমের ১০ বলে ১৯ ও ফাহিম আশরাফের ১৪ বলে ১৪ রানে ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৮৪ রানের সংগ্রহ পায় পাকিস্তান। অস্ট্রেলিয়ার জেই রিচার্ডসন ও নাথান কলটার নাইল ২টি করে উইকেট নেন।

জয়ের জন্য ২৮৫ রানের লক্ষ্যে উড়ন্ত সূচনা করে অস্ট্রেলিয়া। দুই ওপেনার উসমান খাজা ও ফিঞ্চের ব্যাটিং-এর সামনে অসহায় ছিলেন পাকিস্তানের বোলাররা। তাই ১৯তম ওভারের দলের স্কোর শতরানে পৌছে দেন খাজা-ফিঞ্চ। এরপরর ব্যাট হাতে অবিচল ছিলেন খাজা-ফিঞ্চ। স্কোরবোর্ডকে শক্তিশালী করছিলেন খাজা-ফিঞ্চ। নামের পাশে হাফ-সেঞ্চুরির স্কোরও বসিয়ে ফেলেন তারা।

তারই ধারাবাহিকতায় ৩১তম ওভারে ১০৬ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ১৩তম সেঞ্চুরির স্বাদ নেন ফিঞ্চ। এজন্য ৯৭ বল মোকাবেলা করেন ফিঞ্চ। সেঞ্চুরির পথে হাঁটছিলেন খাজাও। কিন্তু দুভার্গ্য ব্যক্তিগত ৮৮ রানে খাজাকে থামিয়ে দেন পাকিস্তানের স্পিনার ইয়াসির শাহ। ৮টি চারে ১০৯ বলে নিজের ইনিংস সাজান খাজা। ফলে ২২০ বলে ২০৯ রানে প্রথম জুটি ভাঙ্গে। পাকিস্তানের বিপক্ষে উদ্বোধনী জুটিতে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান।
খাজার বিদায়ের উইকেটে যান গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ২টি ছক্কায় ইনিংস শুরু করে ১৯ রানে থামেন তিনি। তবে শন মার্শকে নিয়ে দলকে জয়ের স্বাদ এনে দেন ফিঞ্চ। ১১টি চার ও ৬টি ছক্কায় ১৪৩ বলে ১৫৩ রানে অপরাজিত থাকেন ফিঞ্চ। এটি তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। মার্শ ১১ রানে অপরাজিত থাকেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন ফিঞ্চ।
আবু ধাবিতে আগামী ২৭ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :
পাকিস্তান : ২৮৪/৭, ৫০ ওভার (রিজওয়ান ১১৫, মালিক ৬০, রিচার্ডসন ২/১৬)।
অস্ট্রেলিয়া : ২৮৫/২, ৪৭.৫ ওভার (ফিঞ্চ ১৫৩, খাজা ৮৮, ইয়াসির ১/৬০)।
ফল : অস্ট্রেলিয়া ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : অ্যারন ফিঞ্চ (অস্ট্রেলিয়া)।
সিরিজ : পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top