অফিসিয়ালি শচিন টেন্ডুলকরকে মু্ম্বই ইন্ডিয়ান্সের আইকন বলে উল্লেখ করা হলেও আসলে মাস্টার ব্লাস্টারের কাজটা দলের মেন্টরের৷ অন্যদিকে, দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের মেন্টর হিসাবে এ বছর নতুন ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন সৌরভ গাঙ্গুলির৷ ক্রিকেটার জীবনে সচিন-সৌরভের ওপেনিং জুটি ক্রিকেটবিশ্বকে সম্মোহিত করে রাখত৷ দু’জনের মধ্যে আত্মিক যোগ একটাই দৃঢ় যে, শচিনকে পশ্চিমবঙ্গে ‘ছোটবাবু’ বলে ডাকতেন ‘দাদা’৷
মুম্বইয়ের সাপোর্ট স্টাফ হিসাবে শচিন বেশ অভিজ্ঞ হলেও সৌরভ সাপোর্ট স্টাফের ভূমিকায় নবাগত৷ এহেন দুই বন্ধুর মুখোমুখি লড়াইয়ে শুরুতেই ‘ছোটবাবু’কে টেক্কা দিলেন ‘দাদা’৷ ওয়াংখেড়েতে দ্বাদশ আইপিএলে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সম্মুখসমরে নেমেছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ও দিল্লি ক্যাপিটালস৷ হাইস্কোরিং ম্যাচে মুম্বইকে তাদের ঘরের মাঠে ৩৭ রানের একতরফা ব্যবধানে পরাজিত করে দিল্লি৷
প্রথমে ব্যাট করে ঋষভ পন্তের দুরন্ত হাফসেঞ্চুরিতে ভর করে দিল্লি নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটের বিনিময়ে ২১৩ রান তোলে৷ জবাবে মুম্বই ১৯.২ ওভারে ১৭৬ রানে অলআউট হয়ে যায়৷ ব্যর্থ হয় যুবরাজ সিংয়ের অনবদ্য লড়াই৷
ঘরের মাঠে টসে জিতে দিল্লিকে প্রথমে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানায় মুম্বই৷ শিখর ধাওয়ান, কলিন ইনগ্রামরা দিল্লি ইনিংসের ভিত গড়ে দেন বটে, তবে ১৭০ রানের আশেপাশে যে ইনিংস আটকে যাওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছিল, পন্ত ক্রিজে আসার পর সেই ছবিটা বদলে যেতে বিশেষ সময় লাগেনি৷ পন্তের ঝোড়ো হাফসেঞ্চুরির সুবাদেই দিল্লি ক্যাপিটালস দু শ’ রানের গণ্ডি টপকে যায়৷
পন্ত ২৭ বলে ৭৮ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন৷ এর মধ্যে ৭০ রান বাউন্ডারির সাহায্যে তুলে নেন ঋষভ৷ দিল্লি উইকেটকিপারের ব্যাট থেকে আসে ৭টি চার ও ৭টি ছক্কা৷ মাত্রা ১৮ বলে ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন পন্ত, যা আইপিএলের ইতিহাসে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে দ্রুততম অর্ধশতরান৷
মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে শুধু দ্রুততম হাফসেঞ্চুরিই করেননি ঋষভ, নির্ধারিত ২০ ওভারে দলকে পৌঁছে দেন ৬ উইকেটে ২১৩ রানে৷ ওয়াংখেড়েতে কখনো এত বড় রান তাড়া করে জেতেনি মুম্বই৷ সেদিক থেকে জয়ের জন্য রেকর্ড রান তাড়া করতে হবে রোহিত শর্মাদের৷
ঋষভ ছাড়া দিল্লির হয়ে বড় রান করেন ধাওয়ান ও ইনগ্রাম৷ ধাওয়ান ৩৬ বলে ৪৩ ও ইনগ্রাম ৩২ বলে ৪৭ রান করে আউট হন৷ এছাড়া পৃথ্বী শ ৭, শ্রেসয় আইয়ার ১৬, কীমো পল ৩ ও অক্ষর প্যাটেল ৪ রান করে আউট হয়েছেন৷ রাহুল তেওয়াটিয়া ৪ বলে ৯ রান করে ঋষভের সঙ্গে অপরাজিত থেকে যান৷
মিচেল ম্যাকক্লেনাঘান মুম্বইয়ের হয়ে ৪০ রানের বিনিময়ে ৩টি উইকেট নেন৷ একটি করে উইকেট নিয়েছেন বুমরাহ, হার্দিক পান্ডিয়া ও বেন কাটিং৷ মুম্বইয়ের সব বোলারই ওভার প্রতি ১০ রানের বেশি খরচ করেন৷
পালটা ব্যাট করতে নেমে মুম্বই শুরুটা মন্দ করেনি৷ তবে ৩.৩ ওভারে ৩৩ রানের ওপেনিং জুটি গড়ার পর রোহিত শর্মা আউট হওয়ার পর থেকে ধারাবাহিকভাবে উইকেট হারাতে থাকে মুম্বই৷ রোহিত (১৪) ও কুইন্ট ডি’ককের (২৭) উইকেট তুলে নেন আইপিএলে ফেরা ইশান্ত শর্মা৷যুবরাজ সিং একপ্রান্ত আঁকড়ে হাফসেঞ্চুরি করলেও অপর প্রান্ত দিয়ে একে একে আউট হন সূর্য্যকুমার যাদব (২), কারন পোলার্ড (২১), হার্দিক পান্ডিয়া (০), বেন কাটিং (৩), ম্যাকক্লেনাঘানরা (১০)৷
ক্রুণানা পান্ডিয়া ১৫ বলে ৩২ রানের আগ্রাসী ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন৷ যুবরাজ আউট হন ৫টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে ৩৫ বলে ৫৩ রান করে৷ দিল্লি ইনিংসের শেষ বলে বাঁ-কাঁধে চোট পেয়ে ভারতীয় সমর্থকদের আতঙ্কে রাখা জসপ্রীত বুমরাহ ব্যাট করতে নামেননি৷