ইসলাম গ্রহণের আহ্বান, জবাবে কী বললেন জাসিন্ডা অরডার্ন

ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার পর নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ড অরডার্নের বিচক্ষণ নেতৃত্ব আর মানবিক গুণবলী প্রশংসিত হয়েছে বিশ্বব্যাপী। এবার তাকে ইসলাম গ্রহণ করার আহ্বান জানালেন এক মুসলিম যুবক। তাৎক্ষণিকভাবে জাসিন্ডা এই আহ্বানের উত্তরও দিয়েছেন হাসিমুখে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে এই ঘটনার একটি ভিডিও।

সন্ত্রাসী হামলার পর পুরো নিউজিল্যান্ডই মুসলমান সম্প্রদায়ের পাশে এসে দাড়িয়েছে। তবে তার মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডার কার্যক্রম বিশ্বব্যাপী ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে, জেসিন্ডার মতো একজন নেতা দরকার যুক্তরাষ্ট্রের। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানও ভূয়সী প্রশংসা করেছেন জেসিন্ডার কার্যক্রমের।

হামলার পরই জেসিন্ডা মসজিদ দুটোর কাছে গেছেন এবং হতাহত লোকদের পরিবারের সাথে দেখা করে তাদের সান্ত্বনা দিয়েছেন। গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন মুসলমান সম্প্রদায়ের নেতাদের সাথে। এসব সময়ে তার গায়ে ছিল মুসলিম রীতির পোশাক, মাথায় ছিলো হিজাবের মতো ওড়না দেয়া। হামলার পরদিনই তিনি সাধারণ নাগরিকদের জন্য ভারী অস্ত্র নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেন।

হামলার পর জাসিন্ডা পার্লামেন্টে প্রথম যে ভাষণ দিয়েছেন সেখানে কথা বলা শুরু করেছেন ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলে। এছাড়া ওই দিন পার্লামেন্ট অধিবেশন শুরু হয়েছিল একজন মাওলানার কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে। নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসে যা এই প্রথম।
হামলার পরের শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের জাতীয় টিভি ও রেডিওতে জুমার নামাজের আজান প্রচার করা হয়। সেদিন প্রধানমন্ত্রী আবারো ক্রাইস্টচার্চ সফর করেন। সেদিন জুমার নামাজের আগে আল নুর মসজিদের কাছে হ্যাগলি পার্কে সমবেত নাগরিকদের উদ্দেশ্যে তিনি যে বক্তৃতা করেছেন সেখানেও মহানবীর (সা.) একটি হাদিস উদ্বৃত করে ঐক্যবদ্ধ থাকার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।

প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডার সাথে সেদিন কয়েক হাজার অমুসলিম নিউজিল্যান্ডের নাগরিক ওই সমাবেশে যোগ দেয় মুসলিমদের প্রতি সংহতি ও শহীদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে। এসময় সমবেতা নারীদের সবার মাথায় ছিলো হিজাব।

অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায় এক তরুণ মুসলিম যুবক নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীকে ইসলাম গ্রহণের আহ্বান জানান। জাসিন্ডা মনোযোগ দিয়ে তার কথা শোনেন এবং হাসিমুখে জবাব দেন। ওই তরুণ প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে কী, আমি শুধু আপনার জন্যই এখানে এসেছি। গত তিনদিন ধরে আমি শুধু কেঁদেছি। আল্লাহর কাছে আপনার জন্য দোয়া করেছি, আশা করছি অন্য নেতারাও আপনার নেতৃত্বকে অনুসরণ করবেন। আমার আরেকটি আশা, একদিন আপনিও ইসলামে দাখিল হবেন এবং জান্নাতেও আপনার দেখা পাব আমি’।

ব্যস্ততার মাঝেও মনোযোগ দিয়ে তরুণের কথা শোনেন জাসিন্ডা। এরপর তিনি হাসিমুখে বলেন, ইসলাম মানবতার শিক্ষা দেয়, আমার মনে হয় আমার মাঝে সেটি(মানবতা) আছে’।

এদিকে মহানুভবতার দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য নিউজিল্যান্ডের প্রধামন্ত্রী জাসিন্ডা আরডের্নকে নোবেল পুরস্কার দেয়ারও দাবি উঠেছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top