ব্রীজের নিচে পড়ে থাকা সুদৃশ্য ট্রলি ব্যাগ। উৎসুক স্থানীয়রা খুলতেই তাদের চোখ ছানাবড়া। ব্যাগের ভেতর সাজানো টুকরো টুকরো কাটা মাংস, কাটা উরু, ছিন্নভিন্ন দুটি পা। পুলিশকে স্থানীয়রা অবহিত করে। পুলিশের তল্লাসীতে পাওয়া যায় খণ্ডিত আরো একটি হাত।
পাশেই ভুট্টাক্ষেতের ভেতর থেকে উদ্ধার হয় গোল্ডেন আংটি, সাথে ম্যাচিং করা নেভি ব্লু রংয়ের জিন্সের প্যান্ট-গেঞ্জি। কিন্তু খন্ডিত হাত পা উদ্ধারের চার দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত হদিস মেলেনি হতভাগ্য ওই অজ্ঞাত ব্যক্তির। উরুসহ দুই পা ও একটি হাত কেটে নেয়া ওই ব্যক্তি বেঁচে আছে না কি মারা গেছে কিংবা খুন করা হয়েছে। সে প্রশ্নের কোন কিনারা করতে পারেনি থানা পুলিশ।
তবে পুলিশের দাবী, তারা ঘটনার রহস্য উন্মোচনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং থানা পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ অনুরোধ করা হয়েছে পত্রিকার মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে জানিয়ে দেওয়া যে, উদ্ধারকৃত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের হিসাব মিলিয়ে যদি কোন ব্যক্তির স্বজন কিংবা পরিচিত জনের সাথে মিলে যায় তাহলে ঘিওর থানায় যেন তারা যোগাযোগ করেন।
উল্লেখ্য, ঢাকা- আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ ঘিওর কালিগঙ্গা নদীর ব্রিজের নিচে ট্রলি ব্যাগের ভিতরে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির অর্ধপচে যাওয়া উরুর অংশ এবং দুটি পায়ের হাটুর নিচের অংশ ও ট্রলি ব্যাগের পাশে ভূট্টা ক্ষেত হতে দেহের বাম হাত উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গত বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে বানিয়াজুরি ইউনিয়নের উত্তর তরা ব্রিজের নিচে ট্রলি ব্যাগ দেখলে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশ এসে ট্রলি ব্যাগ খুলে এ অংশ বিশেষ উদ্ধার করা হয়।
ট্রলি ব্যাগের পাশে ও ভূট্টাক্ষেত থেকে ছড়ানো ছিটানো অবস্থায় পাওয়া যায় ১টি ব্লু রংয়ের জিন্স প্যান্ট, সাথে কালো বেল্ট, নেভি-ব্লু হাফহাতা গেঞ্জি, ১টি সাদা স্যান্ডো গেঞ্জি, ১টি সুতি চেক লুঙ্গি, ১টি গামছা, ১টি হাফহাতা সুতি ছিটের ছেড়া শার্ট, ১টি কালো রংয়ের টাউজার, ১টি নেভি-ব্লু রংয়ের উড়না, ১টি নীল রংয়ের উড়না, সুতি ছিটের সেলোয়ার, এক জোড়া স্যান্ডেল, সোনালী রংয়ের ২টি আংটি। দেহ বিহীন ছিন্নবিচ্ছিন্ন ওই পা ও হাত প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা যায়নি।
ঘিওর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রবিউল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে দেহের অংশগুলো পুরুষ লোকের। রাতের আধারে কেউ তরা ব্রিজের নিচে ফেলে রেখে চলে যায়।
তিনি আরোও জানান, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের দু’পাশে বা ব্রিজের নিচে আরোও টুকরো পাওয়া যায় কিনা তা আমরা খুঁজে দেখছি। দেহের অংশবিশেষগুলো ময়না তদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। শনাক্ত করে আইনগত ব্যস্তা নেওয়া হবে।