জীবনের অনেকগুলো বছর কাটিয়েছেন একা একা। এবার বিয়ে করে ঘরে জীবনসঙ্গী আনা দরকার। পরিবারের কর্তা ব্যক্তিরাও তাই-ই ভাবলেন। ঠিক করা হলো বিয়ের কনে। উভয়পক্ষে কথাবার্তা ঠিক করে নির্ধারণ করা হলো সব কিছু। বিয়ের তারিখও ঠিক হলো। কিন্তু কথামতো বিয়ের দিনে বরযাত্রী সমেত বিয়ে করতে গিয়ে ঘটলো উল্টো ঘটনা। বিয়ে করে বউ আনতে গিয়ে বরকে নিজেকেই যেতে হয়েছে শ্রীঘরে। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার বাশতলা গ্রামে।
বিয়ে বাড়ির আয়োজন চলছে ধুমধামে। চলছে খাবারের আয়োজন। পাশেই গ্রামের ছেলে-মেয়েরা সাউন্ডবক্স বাজিয়ে বিয়ে বাড়িতে আনন্দ করছে। বর যাত্রীরাও এসে গেছে। কিন্তু বাল্য বিয়ে হচ্ছে এমন সংবাদের খবর পেয়ে উপস্থিত হন প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা। তাদেরকে (পুলিশ) দেখেই বিয়ে বাড়ির বরযাত্রীসহ কনে পক্ষের সবাই যে যার মতো পালিয়ে যায়। পড়ে থাকে টেবিলে খাবার-শূন্য বাড়ি। এসময় বর রাজিব রাঢ়ীকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও পালিয়ে যায় বিয়ের স্থানীয় কাজী মোশাররফ এর সহকারী আশরাফ, বর-কনের বাবা-মাসহ আত্মীয়রা।
সূত্র জানায়, পানপট্টি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বাঁশতলা গ্রামের আলমগীর রাড়ির পুত্র রাজিব রাড়ীর ১নং ওয়ার্ডের উত্তর পানপট্টির আনোয়ার সিকদারের মেয়ে লিমার সাথে কয়েকদিন আগে এফিডেভিটের মাধ্যমে বয়স বাড়িয়ে বিবাহ সম্পন্ন হয়। লিমা (১৩) পানপট্টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী।
গলাচিপা থানার এসআই নজরুল ইসলাম জানান, উপজেলার পানপট্টি ইউনিয়নের বাশতলা গ্রামের আলমগীর রাঢ়ীর ছেলে রাজিব (২০) এর সঙ্গে একই ইউনিয়নের উত্তর পানপট্টি গ্রামের আনোয়ার সিকদারের অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ের সঙ্গে শুক্রবার দুপুরে বিয়ে হচ্ছিল। পুলিশ খবর পেয়ে মেয়ের বাড়ি উত্তর পানপট্টি গ্রাম থেকে রাজিবকে গ্রেফতার করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে নিয়ে আসা হয়।
পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ মোঃ রফিকুল ইসলাম তার কার্যালয়ে আটক বর রাজিবকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন এবং কনের বাবা আনেয়ার সিকদার, মা হেলেনা বেগম ও কাজী মোশাররফকে আটকের নির্দেশ দেন।