দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের পদ্মাসেতুর জাজিরা প্রান্তে স্প্যান বহনকারী ক্রেনটি সঠিকভাবে নোঙ্গর করতে না পারায় আজ বৃহস্পতিবার ৩৪ ও ৩৫ নম্বর পিলারের উপর নবম স্প্যান বসানো সম্ভব হয়নি।
আগামীকাল শুক্রবার সকাল থেকেই স্প্যান বসানোর কাজ শুরু হবে বলে সিতু বিভাগের প্রকৌশল সূত্র জানিয়েছে। পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের ৩৪ ও ৩৫ নম্বর পিলারের ওপর স্প্যানটি বসানো হলে দেশের সেতুর দুই প্রান্তে দৃশ্যমান হবে ১৩৫০ মিটার ।
সুত্র জানায়, গতকাল বুধবার মুন্সিগঞ্জের কুমারভোগ থেকে সকাল পৌনে ৯টার দিকে রওয়ানা হয়ে শক্তিশালী ভাসমান ক্রেন তিয়ান-ই এর মাধ্যমে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৩ হাজার ১৪০ টন ওজনের ৯ম স্প্যানটি দুপুর ১২টার দিকে জাজিরা প্রান্তে এসে পৌঁছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে যেকোন সময় ৩৪ ও ৩৫ নম্বর পিলারের ওপর স্প্যানটি বসানো কাজ শুরু হলেও স্প্যান বহনকারী ক্রেনটি সঠিকভাবে নোঙ্গর করতে না পাড়ায় স্প্যানটি বসানো সম্ভব হচ্ছে না।
তবে আগামীকাল শুক্রবার যথারিতি স্প্যান বসানো হবে। জাজিরার নাওডোবা প্রান্তে ৮ম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে সেতুর দুই প্রান্তে দৃশ্যমান হবে ১ হাজার ৩৫০ মিটার দৃশ্যমান হবে। গত বছরের মাওয়া পয়েন্টে ৪ ও ৫ নম্বও পিলারের উপর আরেকটি স্পেন বসানো হয়।
সেতু বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নাম্বার পিলারের ওপর প্রথম স্প্যান, ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি ৩৮ ও ৩৯ নাম্বার পিলারের ওপর দ্বিতীয় স্প্যান, ১১ মার্চ ৩৯ ও ৪০ নাম্বার পিলারের ওপর তৃতীয় স্প্যান, ১৩ মে ৪০ ও ৪১ নাম্বার পিলারের ওপর চতুর্থ স্প্যান ২৯ জুন ৪১ ও ৪২ নম্বর পিলারের ওপর পঞ্চম স্প্যান, ২৩ জানুয়ারী ২০১৯ ৩৬ ও ৩৭ বসানো হয় ৬ষ্ঠ স্প্যান এবং সর্বশেষ ২০ ফেব্রুয়ারী জাজিরার নাওডোবা প্রান্তে ৭ম স্প্যান বসানোর মধ্যদিয়ে জাজিরা প্রান্তে ১ হাজার ৫০ মিটার ও মুন্সীগঞ্জ প্রান্তের ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের উপর বসানো ১টি স্প্যানসহ এখন দৃশ্যমান হয় ১ হাজার ২০০ মিটার। সেতুর ৯ম স্পেন বসানো হলে দুই প্রান্তে ১ হাজার ৩৫০ মিটার দৃশ্যমান হবে।
৪২টি খুটির উপর এমন ৪১টি স্প্যানের সাহায্যে পদ্মার বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। প্রতিটি স্পেনের দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার। ৪২টি পিলারের উপর ৪১টি স্পেন বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মাসেতু নিমার্ন করা হবে। এর মধ্যে ২১টি পিলার এরই মধ্যে দৃশমান হয়েছে।
সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাথে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বেড়ে যাবে কয়েকগুণ। ইতোমধ্যে এপ্রোজ সড়ক দিয়ে গাড়ি চলাচল শুরু করেছে। টোল প্লাজার নির্মাণ কাজ শেষ করেছে সেতু বিভাগ।
দোতলা এ সেতুর নিচ তলায় চলবে ট্রেন। স্থাপন করা স্পেন গুলোয় এখন রেলের স্নাব বসানো কাজ চলছে। জাজিরা প্রান্তের স্পেন গুলোয় ১২৮টি স্নাব বসানো হয়েছে। পুরো সেতুর ২ হাজার ৯৫৯টি স্নাব বসানো হবে। মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়াডে স্পেন ও স্নাব বসানোর কাজ চলছে।