বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আর চার দিন পরেই মহান স্বাধীনতা দিবস। হাতের মুঠোয় প্রাণ নিয়ে যিনি এই স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে জীবন মৃত্যুকে পরম ভৃত্য করে রণাঙ্গনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন অসীম সাহসে, যার ঘোষণায় গোটা জাতি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো, সেই বীরউত্তমের স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যার ষড়যন্ত্র হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সহধর্মিনী, চার বারের প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশের জনগণের আস্থার প্রতীক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যা করতে উন্মত্ত হয়ে উঠেছে বর্তমান গণবিচ্ছিন্ন অবৈধ সরকার। আজ বৃহস্পতিবার নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।
দেশের মানুষের বুঝতে এতটুকু বাকি নেই যে, প্রধানমন্ত্রীকে চরম প্রতিহিংসার বাসনা চরিতার্থ করতে পেয়ে বসেছে। তিনি পরিত্যক্ত অন্ধকার স্যাঁতস্যাঁতে কারাগারে ভয়াবহ ও চূড়ান্ত অসুস্থ দেশনেত্রীর যন্ত্রনার ছটফটানি দেখে আনন্দ উপভোগ করছেন।
আজ দিবালোকের মতো পরিস্কার যে, প্রধানমন্ত্রী দেশের অকল্পনীয় জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জীবিত দেখতে চান না। চিকিৎসার অভাবে গুরুতর অসুস্থ ৭৪ বছরের বয়স্ক নারী বেগম খালেদা জিয়াকে প্রহসনমূলক বিচারের আদালতে টেনে-হিচড়ে প্রায় প্রতিদিনই হাজির করা হচ্ছে।
দেশনেত্রীকে চলৎশক্তিহীন করার জন্য তার সুচিকিৎসা করানো হচ্ছে না। আদালতে আনার আগে তিনি অসুস্থতায় থরথর করে কাঁপছিলেন। বার বার বমি করছিলেন। মাথা সোজা রাখতে পারছিলেন না। মরণাপন্ন অবস্থার মধ্যে টেনে নিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যই দেশনেত্রীকে কোনো চিকিৎসা না দিয়ে জোর জবরদস্তি করে হুইল চেয়ারে বসিয়ে হাজির করা হয় কোর্টে। গত পরশু আদালতে এনে বেগম জিয়াকে বসিয়ে রাখার পর তিনি চোখ মেলতে পারছিলেন না। মাথা স্থির রাখতে পারছিলেন না। বারবার মাথা কাত হয়ে যাচ্ছিল। আদালতে উপস্থিত আইনজীবীরাও তার এই অসুস্থ অবস্থা দেখে বিচলিত হয়ে পড়েন।
রিজভী বলেন, কতটা অমানবিক নিষ্ঠুর হিংসুক ক্রুর হলে একজন প্রৌঢ় মহিয়সী নারীর ওপর এমন বর্বর নিপীড়ন চালানো সম্ভব হয়। দেশের প্রতিটি সচেতন মানুষ এখন প্রশ্ন করছেন, কোনো সুস্থ মস্তিস্কের মানুষ কি এতটা নির্মম-নির্দয় হতে পারেন?
তাই বলছি, চোখ কান খোলা রেখে জনগণের দিকে তাকিয়ে দেখুন তারা কি চাচ্ছে। তাদের ফুঁসে ওঠার সময় এসেছে। বেগম খালেদা জিয়া এখন প্রতিটি মানুষের ভালোবাসা। গণতন্ত্রের মায়ের জন্য তার আন্দোলনরত সন্তানরা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত হয়ে আছেন। সরকারের বিরুদ্ধে অভিমান, ক্ষোভ ও বিদ্রোহের জন্য জনগণ অগ্নিগর্ভ হয়ে আছে। যেকোনো সময় জনতার বিস্ফোরণ শুরু হবে-যা কল্পনাও করতে পারছেন না। তাই সরকারকে বলছি-আজই নিজেদের শোধরান। দেশনেত্রী ও বাংলাদেশের মা কে মুক্তি দিন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, উপজেলা, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হতে নৌকা প্রতীক লাগে, জনগণের ভোট লাগে না। অলিখিত বাকশাল তো এখনো চলছে।
রিজভী বলেন, কিছুদিন আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আগের রাত্রে ভোট চুরির স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, আওয়ামী লীগ নেতা নির্বাচন কমিশন সচিব হেলাল উদ্দিনও দুই দিন আগে স্বীকার করেছেন রাতে সীল মেরে ব্যালট বাক্স ভর্তি করার কথা। এতো কিছুর পরও বাকশাল বলতে আর বাকি কি থাকলো।