কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের জগমোহনপুর এলাকায় দুর্বৃত্তদের পেট্রোল বোমায় বাসের ৮ যাত্রী নিহতের ঘটনায় দায়ের করা পৃথক ২টি মামলায় চৌদ্দগ্রামের সাবেক এমপি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে কুমিল্লার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোঃ আলী আকবর এ আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, চৌদ্দগ্রামে দুর্বৃত্তদের পেট্রোল বোমায় বাসের ৮ যাত্রী নিহতের ঘটনায় চৌদ্দগ্রাম থানায় জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরকে প্রধান আসামী করে নাশকতা ও হত্যার অভিযোগে পুলিশ পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে। বুধবার কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন ডা. তাহের।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান লিটন জানান, হত্যা ও নাশকতার দুটি মামলায় ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইলে আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণ করেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোঃ সহিদ উল্লাহ বলেন, ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের একজন সাবেক সংসদ সদস্য এবং তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। আমরা তার জামিনের জন্য আদালতে আবারও আবেদন দাখিল করবো।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ভোর রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রামের জগমোহনপুর এলাকায় ঢাকাগামী একটি নৈশকোচে দুর্বৃত্তরা পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে। এতে বাসের ৮ যাত্রী মারা যায় এবং আহত হয় অন্তত ২৫জন। এ ঘটনায় জামায়াত নেতা ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরকে প্রধান আসামি করে চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই নুরুজ্জামান বাদী হয়ে থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াসহ কেন্দ্রীয় ৬ নেতাকে হুকুমের আসামি করা হয়।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বিবৃতি
এদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোঃ তাহেরকে সরকারের দায়ের করা ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় জেলখানায় পাঠানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বিবৃতিতে দলের নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন,‘ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোঃ তাহেরকে সরকারের দায়ের করা ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় বুধবার জেলখানায় পাঠানোর ঘটনায় আমি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।’
তিনি বলেন, ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোঃ তাহের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত একজন অসুস্থ্য ব্যক্তি। গত ২০১৭ সালে তার কিডনী প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার হীন উদ্দেশ্যেই সরকার ২০১৫ সালে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। সরকার যেভাবে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার হীন উদ্দেশ্যে দেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে মিথ্যা মামলায় আটক করে কারাগারে রাখছে, সেইভাবে ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোঃ তাহেরকেও আটক রাখার উদ্দেশ্যে জেলে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ও মর্মাহত।
অযথা হয়রানি বন্ধ করে ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোঃ তাহেরকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।