সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। তার চিকিৎসা হচ্ছে না। গতকাল সকালে তার বমি হয়েছে, তিনি খেতে পারছেন না। তার সারা শরীরে অসহ্য ব্যথা। তারপরও তাকে জোর করে আদালতে আনা হয়েছে বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন।
মঙ্গলবার বেলা ১২টা ৪০ মিনিটে পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত বিশেষ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা নাইকো মামলায় খালেদা জিয়াকে হুইল চেয়ারে করে হাজির করা হয়। হুইল চেয়ারে বসা অবস্থায় তার পা কোমর পর্যন্ত সাদা কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল। শুনানি শেষে বেলা ১টা ১৫ মিনিটের দিকে আবারো কারাগারে নেয়া হয় তাকে। শুনানি শুরু হওয়ার আগে মির্জা ফখরুল কারা আদালতে উপস্থিত হন। আদালতের কার্যক্রমের পুরো সময় তিনি খালেদা জিয়ার পাশে বসে ছিলেন এবং তার সাথে কথা বলেন। এ সময় খালেদা জিয়া তার গুরুতর অসুস্থতার কথা ও জোর করে তাকে আদালতে আনা হয়েছে বলে মির্জা ফখরুলকে জানিয়েছেন।
আদালতের কার্যক্রম শেষে বেলা সোয়া ১টায় খালেদা জিয়াকে আবার কারাগারে নেয়া হয়। এরপর আদালত থেকে বেরিয়ে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) বলেছেন তিনি অত্যন্ত অসুস্থ এবং তার চিকিৎসা হচ্ছে না। পায়ে ও হাঁটুসহ সারা শরীরে অসহ্য ব্যথা। ব্যথার কারণে তিনি হাত পা নাড়াতে পারছেন না। আদালতেও তিনি মাথা সোজা করে বসে থাকতে পারেননি। তার মাথা ঝুঁকে পড়ে যেতে দেখেছি। আপনারাও দেখেছেন। তাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে তিনি খুবই অসুস্থ। তিনি ঘাড়টাও চেয়ারের সাথে সোজা রেখে বসতে পারছেন না।
মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) বলেছেন পিজিতে তার কোনো চিকিৎসা হয় না। আমরা বেসরকারি বিশেষায়িত হাসপাতালে তার চিকিৎসার কথা বলেছি। সে বিষয়ে সরকার এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তারা মেডিক্যাল বোর্ডের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ডাক্তার পাঠাতে পারে। রক্ত পরীক্ষা করতে পারে। সেটি করছে না। আমরা সরকারের কাছে চাচ্ছি, তিনিও (খালেদা জিয়া) চাচ্ছেন দ্রুত তার রক্ত পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করা হোক। এবং তার যে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, তিনি পিজি হাসপাতালেরই ডাক্তার, তাকে দিয়ে চিকিৎসা করানো হোক, তাকে দেখানো হোক।
অন্য দিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার আদালত থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা উপস্থিত সবাই তাকে দেখেছেন। আদালতে আনার মতো শারীরিক অবস্থা তার ছিল কি না। তার পরও আমরা দেখলাম তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে তাকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। অথচ তার চিকিৎসার ব্যাপারে মেডিক্যাল বোর্ড সুপারিশ করার পরও সরকার চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে জোর করে তাকে আদালতে হাজির করা হচ্ছে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া নিজেই বলেছেন, তিনি এতটাই অসুস্থ যে তিনি বসে থাকতে পারছেন না।
মাসুদ আহমেদ তালুকদার আরো বলেন, সোমবার খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্যাটকো মামলা ছিল, ডাক্তার লিখে দিয়েছেন খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে অসুস্থ। আদালতে পাঠানো হাজিরা পরোয়ানায় লেখা হয়েছে তিনি অসুস্থ, তাকে আদালতে হাজির করা সঠিক হবে না। এর একদিন পর গতকাল খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। সোমবার ডাক্তার বলেছেন তিনি ফিজিকালি ফিট নন। একদিনের মাথায় তাকে আদালতে নিয়ে এলো। আপনারা সাংবাদিকেরা তাকে আদালতে দেখেছেন, আপনাদের কাছে কি তাকে সুস্থ মনে হয়েছে? এটা তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে। তিনিও বলে গেছেন, চিকিৎসা না দিয়ে জোর করে তাকে বিচারকের সামনে হাজির করা হচ্ছে দিনের পর দিন।
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অসুস্থ হওয়ার পর ওই হাসপাতালে ছিলেন। তাকে কিন্তু সিঙ্গাপুরে নিয়ে গেছে। তার মানে তার চিকিৎসার যদি উপযুক্ত জায়গা হতো তাহলে তাকে কেন সিঙ্গাপুরে নেয়া হলো? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রোভিসি অসুস্থ, হার্টের সমস্যা। দুই দিন আগে তাকে প্রধানমন্ত্রী ইউনাইটেড হাসপাতালে দেখতে গেলেন। ইউনাইটেড হাসপাতালে সবার জন্য বৈধ হচ্ছে অথচ বেগম খালেদা জিয়ার জন্য কেন অবৈধ হচ্ছে আমরা তা বুঝতে পারছি না। তার হার্টসহ নানা রকম সমস্যা রয়েছে। মেডিক্যাল বোর্ড নানা রকম সমস্যার কথা বলেছে। তিনি জেলখানায় দুইবার অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেছেন।
তিনি বলেন, আমরা বারবার বলেছি, নাইকো মামলার যে কাগজপত্রগুলো জব্দ করা হয়েছে তা আমাদের দেয়া হোক। কারণ এর মধ্যে কোনো গোঁজা মিল না থাকলে আমাদের দিতে আপত্তি করার কোনো কারণ নেই রাষ্ট্রপক্ষের। যা হোক আগামী ১ এপ্রিল এ মামলার অভিযোগ গঠনের বিষয়ে পরবর্তী শুনানি হবে।
অন্য দিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল গতকাল শুনানি শেষে আদালত থেকে বের হলে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে বলেন, আদালত তো উনাকে (খালেদা জিয়া) চিকিৎসা দেয়ার আদেশ দিয়েছেন। কিন্তু উনিই তো চিকিৎসা নিতে যান না। উনি চিকিৎসা নিতে না চাইলে আমাদের কিছুু করার নেই। উনারা বলছেন তিনি অসুস্থ, কোর্টেও আবেদন করছেন না। তাহলে কি করা যাবে। খালেদা জিয়া ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা নিতে চেয়েছেন- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, সেটা তো আমি জানি না। তাকে চিকিৎসা দিতে আদালতের আদেশ দেয়া আছে। উনি তো চিকিৎসা নিলেই পারেন।
গতকাল শুনানির শুরুতে মওদুদ আহমদের আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ আদালতকে বলেন, অসুস্থজনিত কারণে মওদুদ আহমদ আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি। জার্মানিতে তার পায়ের হাঁটুর অপারেশন হয়েছে।
এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, খালেদা জিয়ার পক্ষে মামলাটির চার্জ শুনানির জন্য ধার্য রয়েছে। খালেদা জিয়া ছাড়া সব আসামির চার্জ শুনানি শেষ হয়েছে। তারা শুরু করলে আমরা মামলাটির কার্যক্রম শেষ করতে পারব।
জবাবে খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, আমরা আদালতে দু’টি আবেদন করেছি। একটি মামলার মুলতবি চেয়ে অন্যটি মামলার প্রয়োজনীয় নথির জন্য। আপনি নির্দেশ দেয়ার পরও আমরা মামলার জব্দ করা প্রয়োজনীয় নথিপত্র পাইনি। তিনি মামলাটি মুলতবি রাখার জন্য এবং জব্দ করা আলামতের কপি না পাওয়ার কারণে শুনানি পেছানোর আবেদন করেন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে এ মামলায় সম্পৃক্ত করা হয়েছে, যেভাবেই সম্পৃক্ত করা হোক তার কাগজ আমাদের দাখিল করা হয়নি। আপনি আদেশ দেয়ার পরও কপি পাওয়া যায়নি। কাগজ ছাড়া প্রস্তুতি নিতে পারছি না। আদালত নকল শাখাকে নির্দেশ দিলে কাগজ পাওয়া যাবে।
জবাবে পিপি মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, চার্জ শুনানি করতে চার্জ শুনানির আলামত লাগে? আর যেসব পেপার ছিল তা দিয়ে দিয়েছি। খালেদা জিয়া ছাড়া সবাই শুনানি শেষ করেছেন। চার্জ শুনানি হোক, চার্জ গঠন হওয়ার পর তারা ওই কাগজ পাবেন। তার আগেই তারা কাগজ চাচ্ছেন। তাছাড়া আগেও তারা চার্জ শুনানি করেছেন। এখন তারা মামলা বিলম্বিত করার চেষ্টা করছেন।
জবাবে মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, খালেদা জিয়ার মামলা তৈরিতে গোঁজামিল আছে। সে জন্য তাদের কাগজপত্র সরবরাহ করা হচ্ছে না। এরপর আদালত মাসুদ আহমেদ তালুকদারের কাছে জানতে চান, তারা খালেদা জিয়ার পক্ষে চার্জ শুনানি করবেন কি না। তখন তিনি বলেন, কাগজ পেলে আমরা শুনানি করব।
এরপর খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী শুনানিতে অংশ নিয়ে বলেন, এটা একটা গ্রাউন্ডলেস মামলা যা টেনে নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। কাগজগুলো পেলে আমরা তা দেখব। এ জন্য শুনানি পেছানোর জন্য আবেদন করেন তিনি।
জবাবে পিপি মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, এটা গ্রাউন্ডলেস মামলা না। অন্যরা শুনানি করেছেন। তারা শুনানি করতে চাচ্ছেন না। মামলাটি ১২ বছরের। মামলা বিলম্বিত করার জন্য তারা শুনানি করছেন না।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ১ এপ্রিল অভিযোগ গঠনের বিষয়ে পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করেন। চার্জ শুনানির বিষয়ে আদেশের জন্যও রাখেন আদালত। আর জব্দ করা আলামতের কপি চেয়ে খালেদা জিয়ার পক্ষে করা আবেদন নামঞ্জুর করেন।
গতকাল আদালতে খালেদা জিয়ার আইনজীবী হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী, আমিনুল ইসলাম, জয়নুল আবেদিন মেজবা, জাকির হোসেন ভূঁইয়া, আব্দুল খালেক মিলন প্রমুখ।
এর আগে এ মামলায় গত ৩ মার্চ বেগম খালেদা জিয়াকে হুইল চেয়ারে করে আদালতে হাজির করা হলে তিনি আদালতে উপস্থিত বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও আইনজীবীদের তার অসুস্থতার কথা জানিয়েছিলেন। ওই দিন খালেদা জিয়া আইনজীবীদের বলেছিলেন, দিন দিন তার শরীর খুব খারাপের দিকে যাচ্ছে। শরীর কাঁপে, পা নাড়াতে পারেন না। আদালতে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকতে সমস্যা হয়। চিকিৎসার জন্য রক্ত নিতে যারা তার কাছে এসেছিলেন তারা তার শিরাই খুঁজে পান না। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক আছে যারা এ বিষয়টি ভালো পারেন। তাদের আসার সুযোগ দিলে ভালো হয়। এ বিষয়টি তিনি আদালতে উপস্থাপন করতে তার আইনজীবীদের পরামর্শ দেন।
গত ৪ মার্চ উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড ও জেল কোড অনুযায়ী কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলবে বলে আদেশ দেন আদালত। ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ শেখ হাফিজুর রহমানের আদালত খালেদা জিয়ার পক্ষে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দ্বারা চিকিৎসা প্রদানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর খালেদা জিয়াসহ অন্যদের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় এ মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেয়। মামলায় অভিযোগ করা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে তুলে দেয়ার মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন।
কুমিল্লার মামলায় জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন : কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বাসে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া ছয় মাসের জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। গতকাল মঙ্গলবার আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো: বশির উল্লাহ। তিনি বলেন, আগামী ২৫ মার্চ এ বিষয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালতে শুনানি হতে পারে।
গত ৬ মার্চ বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মুজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ খালেদা জিয়াকে ছয় মাসের জামিন দেন। ওই দিন খালেদা জিয়ার জামিন আদেশের পর তার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন অভিযোগ করে বলেছিলেন, আমি প্রথম থেকে বলেছি সরকার বিভিন্নভাবে বেগম খালেদা জিয়ার কারাবাস দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা করছে। কুমিল্লার মামলায় তার বহু আগে জামিন পাওয়া উচিত ছিল। সরকার বিভিন্ন উপায়ে এটিকে দীর্ঘায়িত করছে। এক বছর আগে হাইকোর্ট এ মামলায় খালেদা জিয়াকে ছয় মাসের জামিন দেন। কিন্তু সরকার এটা নিয়ে আবার আপিল বিভাগে যেতে পারে বলে আমি মনে করি। সে ক্ষেত্রে আবারো বেশ কিছু সময়ক্ষেপণ হবে। তাই বেগম খালেদা জিয়া কবে মুক্তি পাবেন, সেটি আদালতের চেয়ে সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে। কেননা আদালত তাকে বিভিন্ন মামলায় জামিন দেয়ার পরও কালক্ষেপণ করার জন্য সরকারের তরফ থেকে উচ্চ আদালতে মামলাটি নিয়ে যায়। শুধুমাত্র সময় ক্ষেপণের জন্য।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে দায়ের করা হত্যা মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করা হয়। এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি এ মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন গত ৪ ফেব্রুয়ারি নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পরে নি¤œ আদালতে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করা হয়। এর বিরুদ্ধে পুনরায় জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়।
বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের ডাকা হরতাল-অবরোধ চলাকালে ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ভোরে চৌদ্দগ্রামের জগমোহনপুরে একটি নৈশকোচে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা। আইকন পরিবহনের ওই বাসটি কক্সবাজার থেকে ঢাকা যাচ্ছিল। ওই ঘটনায় আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থলে সাতজন নিহত হন। পরে হাসপাতালে নেয়ার পর আরো একজন মারা যান। এ ঘটনায় ৩ ফেব্রুয়ারি চৌদ্দগ্রাম থানার উপপরির্দশক (এসআই) নূরুজ্জামান হাওলাদার বাদি হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক দু’টি মামলা করেন। এ ঘটনায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ ৭৮ জনের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের মার্চে চার্জশিট দেয় পুলিশ।