বেশ কয়েক বছর ধরে পাশ্চাত্যের দেশগুলো সারা বিশ্বে ইসলামোফোবিয়া বা ইসলামভীতি ব্যাপকভাবেই ছড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কের টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী গ্রুপ আলকায়েদার কথিত হামলার সূত্র ধরে বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের নামে মূলত মুসলিমদের টার্গেট করা হয়েছে। মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগে ইরাক ও আফগানিস্তানে হামলা চালিয়ে দেশ দু’টিকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। লাখ লাখ মুসলমানকে হত্যা করা হয়েছে। কোটি কোটি ডলারের সম্পদ লুটে নেয়া হয়েছে। সেই প্রক্রিয়া এখনো চলছে।
কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এর সাথে যুক্ত হয়েছে মুসলিমদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট সশস্ত্র হামলা। এর সর্বশেষ উদাহরণ, এবার নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দু’টি মসজিদে জুমার নামাজের সময় শ্বেতাঙ্গ এক সন্ত্রাসীর সুপরিকল্পিত হামলা। মুসলিমবিদ্বেষ থেকেই যে ব্রেন্টন ট্যারান্ট নামের ওই খুনি সেদিন সেমি-অটোমেটিক বন্দুক চালিয়ে ৫০ জন মুসলমানকে হত্যা করেছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সে নিজেই এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে তার কী মোটিভ কাজ করেছে, সেটি এক ইশতেহারে সবিস্তার উল্লেখ করেছে। ৭৪ পৃষ্ঠার দীর্ঘ ইশতেহারটি সে হত্যাকাণ্ড শুরুর আগেই ই-মেইলে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীসহ অন্তত ৩০ জন রাজনৈতিক নেতার কাছে পাঠিয়েছিল। ইশতেহারে মুসলিম, ইসলাম ও অভিবাসীবিদ্বেষের পাশাপাশি শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদ, উগ্র ইউরোপীয় চেতনা এবং স্বজাতির সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার দৃঢ় অঙ্গীকার ঘোষণা করা হয়।
লক্ষণীয় যে, ২০১১ সালে নরওয়েতে ঠিক একই ধরনের এক সন্ত্রাসী হামলায় ৭৭ জন মুসলমানকে গুলি করে হত্যাকারী আন্দ্রেস ব্রেইভিকের সাথে ট্যারান্টের ছিল গভীর যোগাযোগ এবং তারা নিখুঁত পরিকল্পনা করেই এসব হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। ইউরোপসহ পাশ্চাত্যের মাটি থেকে মুসলমানদের বিতাড়িত করাই এদের লক্ষ্য এবং সেটা তারা কোনো রকম লুকোছাপা না করেই প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে বলছে।
বুঝতে কোনো অসুবিধা হয় না, বিশ্বজুড়ে ইসলামের বিরুদ্ধে এক ধরনের ক্রুসেড (ধর্মযুদ্ধ) চালিয়ে যাচ্ছে তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রবক্তা, খ্রিষ্টীয় শক্তি। আর এতে ইন্ধন জোগাচ্ছেন বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার মতো অন্যান্য পাশ্চাত্য দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্ব। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশও ঠিক এ কাজটিই করেছেন ইরাকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মর্মান্তিক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়ার সময়। নিউজিল্যান্ডের নৃশংস খুনি ট্যারান্টও তার ইশতেহারে ট্রাম্পকে ‘শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদের প্রতীক’ হিসেবে অভিহিত করেছে। ট্রাম্পের নির্বাচনকালে তাকে সমর্থন দিয়েছিল আমেরিকার সব শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী, নব্য-নাৎসি ও চরম ডানপন্থী রাজনৈতিক সামাজিক গ্রুপগুলো। সে সময় এসব গ্রুপের প্রতি নিজের সমর্থন প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প। এই নিয়ে নির্বাচনের আরেক প্রার্থী ডেমোক্র্যাটিক দলের হিলারি ক্লিনটন তীব্র সমালোচনা করেছিলেন ট্রাম্পের। বলেছিলেন, নির্বাচিত হলে ট্রাম্প হবেন আমেরিকা এবং গোটা বিশ্বের জন্য এক ভয়াবহ বিপজ্জনক ব্যক্তি। হিলারির সে কথায় আমেরিকাবাসী কান দেয়নি। তারা ট্রাম্পকেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেছে।
ট্রাম্পের কথা থাক। যে কথা বলতে চাইছি সেটা হলো, বিশ্বে বিভিন্নভাবে মুসলিমবিদ্বেষ ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করার প্রক্রিয়া চলছে। এই বিদ্বেষের একটি কারণ অবশ্যই ধর্মীয়। উসমানীয় খেলাফতের সময় সব রকম চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র ও অনৈতিক উপায়ে যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েও মুসলমানদের কাছে শোচনীয় পরাজয়ের গ্লানি আজো ভুলতে পারেনি খ্রিষ্টানরা।
বর্তমান সময়ে বিশ্বব্যাপী চলমান অভিবাসন প্রক্রিয়াও মুসলিমবিদ্বেষ জেগে ওঠার অন্যতম কারণ। জানা কথা, শত শত বছর ধরে উপনিবেশের মাধ্যমে সমগ্র বিশ্ববাসীকে শোষণ করে উন্নতির শিখরে পৌঁছেছে বর্তমান ইউরোপ। লাখ লাখ আফ্রিকান মুসলিমকে একরকম দাস বানিয়ে তাদের শ্রম, ঘাম, রক্ত ও জীবনের বিনিময়ে সমৃদ্ধ হয়েছে আমেরিকা। বর্তমানে ইউরোপ বা আমেরিকার দেশগুলোতে যেসব অভিবাসী যাচ্ছেন, তাদের বেশির ভাগই তাদের সাবেক উপনিবেশের শোষিত-বঞ্চিত এবং প্রধানত মুসলিম জনগোষ্ঠীর মানুষ। এরা ভাগ্যান্বেষণে উন্নত দেশগুলোতে যাচ্ছেন। কিন্তু এই অভিবাসনের পুরো সুবিধা কেবল অভিবাসীরাই পাচ্ছেন, ব্যাপারটা মোটেও এমন নয়; বরং ব্যক্তি-স্বাধীনতার নামে একধরনের উদ্ভট জীবনাচরণে অভ্যস্ত, পাশ্চাত্যের মানবগোষ্ঠীর জন্মহার কমে যাওয়ায় নিজেদের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার মতো জনবল উন্নত দেশগুলোর নেই। এখন অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে মেধাবী লোকদের ভাড়া করে এনে তাদের অর্থনীতি অন্যান্য সেবা কার্যক্রম চালু রাখতে হচ্ছে।
নিজেদের প্রয়োজনে অভিবাসীদের সুযোগ করে দিলেও এক শ্রেণীর উগ্র জাতীয়তাবাদী শ্বেতাঙ্গ অভিবাসীবিরোধী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে এবং তাতেই উৎসাহিত হয়ে কেউ কেউ ট্যারান্ট বা ব্রেইভিকের মতো অস্ত্র হাতে অভিবাসী, তথা মুসলিম নিধনে ঝাঁপিয়ে পড়ছে।
এক শ্রেণীর রাজনীতিক ক্ষমতায় যাওয়ার লোভে অভিবাসনবিরোধী প্রচারণার বিষয়টি নিজেদের দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করছে। তাতে করে আগুনে ঘি ঢালা হচ্ছে বেশ ভালোভাবেই। বর্তমানে বিশ্বে অভিবাসীদের সবচেয়ে পছন্দের গন্তব্য হলো অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ব্রিটেন প্রভৃতি দেশ। সব ক’টি দেশেই ইসলাম ও মুসলিমবিদ্বেষ প্রচণ্ডভাবে বিরাজ করছে। কানাডায় গত কয়েক বছরে নিউজিল্যান্ড, নরওয়ের মতো সন্ত্রাসী হামলার বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। সেখানেও মসজিদের ভেতর গুলি চালিয়ে ছয়জন মুসলমানকে হত্যা করা হয়েছে ২০১৭ সালে। অস্ট্রেলিয়ায়ও এমন ঘটনা ঘটেছে।
কানাডার অবস্থাও একই। সেখানে শিগগিরই সাধারণ নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচন সামনে রেখে এখন দেশটিতে অভিবাসনবিরোধী প্রচারণা চালাচ্ছে ওখানকার একাধিক বিরোধী দল। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাবলিক মিটিংয়ে বক্তৃতায় বলতে হয়েছে, উগ্র ডানপন্থী, নব্যনাৎসি এবং শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী গ্রুপগুলো এখন কানাডার জন্য ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের বিষয়। কানাডার সব জাতীয় গণমাধ্যমে এই খবর প্রকাশিত হয় বেশ গুরুত্বের সাথে। খবরটি ছিল এ রকম : জননিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী র্যালফ গুডেল বলেছেন, উগ্র ডানপন্থী, শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী ও নব্যনাৎসি গ্রুপগুলো কানাডীয়দের জন্য ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের বিষয়। মন্ত্রী বলেন, এসব গ্রুপ বিদ্বেষ উসকে দেয় যা ইহুদি-মুসলিমদের (সেমিটিক) বিরুদ্ধে পরিচালিত সহিংসতা এবং অন্যান্য অপরাধের মধ্যে স্পষ্ট। গত ফেব্রুয়ারিতে রেজিনা ইউনিভার্সিটিতে এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় র্যালফ বলেন, ‘গত বছর টরন্টোর ইয়ংগি স্ট্রিটে ভ্যানগাড়ি দিয়ে হামলার পেছনে এ ধরনের গ্রুপের সংশ্লিষ্টতা দেখা গেছে।’
২০১৮ সালের এপ্রিলে অ্যালেক মিলেসিয়ান নামের এক ব্যক্তি একটি ভাড়া করা ভ্যানগাড়ি পথচারীদের ওপর তুলে দিলে ১০ জন নিহত হয়। ২০১৭ সালে কুইবেকের একটি মসজিদে নামাজ আদায়রত ছয়জন মুসল্লিকে হত্যার ঘটনাও উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
হামলাকারীরা যে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়া প্রচারণামূলক বক্তব্যে উদ্বুদ্ধ হয়েছিল, সেটাও বলতে ভোলেননি মন্ত্রী গুডেল। তিনি বলেন, ‘হামলাকারীরা হয়তো একজন ব্যক্তি হিসেবে এসব দুষ্কর্ম করেছে, কিন্তু এর পেছনে কিছু বিষয় ছিল যা তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করেছে এবং সেগুলো ইন্টারনেটে দেখা বিষয়বস্তুর সাথে সংশ্লিষ্ট।’
এরপরই মন্ত্রী যে মন্তব্য করেছেন, সেটি বিশেষভাবে লক্ষ করার মতো। তিনি বলেন, ‘শুধু দায়েশ (আইএসআইএস) বা আলকায়েদাই বিপজ্জনক চরমপন্থী সহিংসতার একমাত্র উৎস নয়, বরং যেকোনো ধরনের ধর্মান্ধতা থেকেই এগুলোর উদ্ভব হতে পারে।’
অর্থাৎ কানাডার জননিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের মধ্যে চরমপন্থার অস্তিত্বের কথাটি প্রচ্ছন্নভাবে জানান দিয়ে গেলেন নিজের দেশের জনগণকে তথা ভোটারদের।
এবার আসুন দেখি, বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসী হামলার জন্য মুসলমানদের দায়ী করা হলেও বাস্তব অবস্থা আসলে কী!
শুরুতেই একটি উদ্ধৃতি দিচ্ছি। ‘মুসলমানরা নয় বরং শ্বেতাঙ্গ খ্রিষ্টান, ইহুদিরাই বিশ্বে বেশি সন্ত্রাস করছে। তারাই মানুষ হত্যা করে বর্বরতার পরিচয় দিচ্ছে। গত ১০ বছরে (২০০৮ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত) আমেরিকাসহ উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে যে হামলা হয়েছে, তার শতকরা ৭১ ভাগ হামলার ঘটনার সাথে জড়িত শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদীরা (সাদা চামড়া)। এরা খ্রিষ্টান, ইহুদি এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বী। আর ওই হামলাগুলোর মাত্র ২৬ শতাংশের সাথে মুসলমানরা জড়িত।’
এই তথ্য প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণা সংস্থা ‘অ্যান্টি-ডিফেমেশন লিগ’। সংস্থার জরিপে উঠে এসেছে এই চিত্র। নিউ ইয়র্কভিত্তিক এই সংস্থার গবেষণায় আরো বলা হয়, ২০১৭ সালের তুলনায় গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা বেড়েছে ৩৫ শতাংশ।
এই বাস্তবতা সম্পূর্ণ চেপে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো অভিযোগ করে, বিশ্বব্যাপী বেশির ভাগ জঙ্গি হামলার সাথে মুসলমানেরা জড়িত। আর সরকারগুলোর এই অপপ্রচার গোয়েবলসীয় কায়দায় ছড়িয়ে দিচ্ছে সিএনএন, বিবিসি, স্কাইনিউজসহ বিশ্বের ইহুদি মালিকানাধীন প্রভাবশালী মিডিয়াগুলো। প্রচারণার জোরে প্রাচ্য-পাশ্চাত্য সর্বত্রই অনেক মানুষ এখন এমনটাই বিশ্বাস করেন যে, মুসলমান মানেই ‘জঙ্গি’। উন্নত দেশগুলোতে অভিবাসী হিসেবে যাওয়া অনেক মুসলমান ওই অমূলক প্রচারণায় বিশ্বাস করে নিজের মুসলিম পরিচয় দিতেও সঙ্কোচ বোধ করেন এবং নিজের নাম পর্যন্ত পাল্টে ফেলেন।
পাশ্চাত্যের প্রচারণায় বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর নেতৃত্বও যে প্রভাবিত, তাতে সন্দেহ নেই। আর এটাই হচ্ছে সবচেয়ে ভয়াবহ ও বেদনাদায়ক। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের সাথে তাল মিলিয়ে মুসলিম বিশ্বের নেতারাও এখন নিজ নিজ দেশে জোরেশোরে কথিত ‘জঙ্গি’ নিধনে লিপ্ত।
বাংলাদেশের হরকাতুল জেহাদ বা জামায়াতুল মুজাহেদিনের মতো সংগঠনগুলোর প্রসঙ্গ না তোলাই ভালো। এরা নিঃসন্দেহে বিভ্রান্ত ও পথভ্রষ্ট; যেমনটি বিভ্রান্ত ট্যারান্ট বা ব্রেইভিকের মতো হামলাকারীরা। আমরা শুধু এটুকু সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, ট্যারান্ট বা ব্রেইভিকের মতো বিপথগামীদের ক্ষেত্রে পাশ্চাত্যের অনুসৃত নীতি কী।
মুসলমানদের বিরুদ্ধে পাশ্চাত্যে যত হামলা হয়েছে তার কোনোটিতেই হামলাকারীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া তো দূরের কথা, সন্ত্রাসী হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়নি। মানসিক বিকারগ্রস্ত বা পাগল হিসেবে চিহ্নিত করে গারদে ভরে রাখা হয়েছে পরম সমাদরে। ওদের কারাগারগুলো ন্যূনতম তিন তারকা হোটেলের সমমানের বলেই জানা যায়।
আমরা কি আমাদের বিভ্রান্ত বিপথগামী কথিত ‘জঙ্গি’দের ক্ষেত্রে সংশোধনের কোনো উপায় বের করতে পারি না? সমাজের প্রতিটি নাগরিক সুস্থ, স্বাভাবিক মন-মানসিকতা নিয়ে বেড়ে উঠবে, তারা কোনো অনাকাক্সিক্ষত বিভ্রান্তির পথে কখনো পা বাড়াবে না, এটা নিশ্চিত করা তো আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান দায়িত্বও বটে।
মনে রাখতে হবে, একটি ভ্রান্ত বিশ্বাসকে আঁকড়ে ধরে যারা সব ভয়ভীতি এমনকি জীবনের মায়া উপেক্ষা করে ‘জঙ্গি’ হয়ে উঠছে এবং আমাদেরই বুকে ছুরিকাঘাত করছে, তারা কিন্তু আমাদের সমাজের সবচেয়ে রাগী, টগবগে, তেজোদীপ্ত, তারুণ্যের ঔদ্ধত্য ও দ্রোহের আগুনে উজ্জীবিত। এসব গুণ আমরা আমাদের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের মধ্যে দেখেছি। এদেরকে গুলি করে মেরে ফেলা বা মৃত্যুদণ্ড দিয়ে ফাঁসিতে লটকে দেয়া সহজ। কিন্তু পাশ্চাত্যের নেতারা তাদের ‘সন্ত্রাসী’দের সাথে কী আচরণ করছে, সেটা আমাদের অবশ্যই বিবেচনা করে দেখা উচিত।
মুসলিম বিশ্বের সব রাজনৈতিক, সামাজিক নেতানেত্রী এবং সর্বস্তরের চিন্তাবিদদের প্রতি সবিনয়ে এটুকু নিবেদন রাখতে চাই।
লক্ষ্য করুন, ক্রাইস্টচার্চের খুনি ট্যারান্টকে পাশ্চাত্যের অনেক মিডিয়া ‘দেবশিশু’ হিসেবে চিত্রিত করেছে। ৫০ জন মানুষ হত্যার বিষয়টি তাদের কাছে গুরুত্ব পায়নি।