ঢাকার নদ্দায় বাসচাপায় শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে দিনভর বিক্ষোভের পর সন্ধ্যায় সড়ক থেকে সরে গেছেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) শিক্ষার্থীরা। অবরোধ উঠিয়ে নেয়ায় মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে সেখানে যান চলাচল স্বাভাবিক হয় বলে জানা গেছে।
সকাল ৭টার পরপর রাস্তা পার হতে গিয়ে দু’টি বাসের মধ্যে পিষ্ট হন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র আবরার আহমেদ। দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে যমুনা ফিউচার পার্কের সামনের সড়ক অবরোধ করে ঘাতক চালকের শাস্তির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা।
এতে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ ওই সড়কের উভয়পাশ দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষোভের একপর্যায়ে সকাল ১০টার দিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নতুন মেয়র আতিকুল ইসলাম সেখানে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণে পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দিলেও সড়ক ছাড়েনি শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার কিছু পরে ঘটনাস্থলে যান মেয়র। তিনি বাসচালকের শাস্তি নিশ্চিত করা ও নিহত শিক্ষার্থীর নামে সেখানে একটি পদচারী-সেতু নির্মাণের আশ্বাস দেন। তবে মেয়রের এই আশ্বাসে সাড়া দেননি অবরোধকারীরা।
মেয়র চলে যাওয়ার পর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সেখানে সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। এরপরও সড়ক আটকে বিক্ষোভ করতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।
দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নুরুজ্জামান বলেন, সকাল সাড়ে ৭টার কিছুক্ষণ আগে রাস্তার বিপরীত দিক থেকে চিৎকার শুনতে পান তিনি।
নুরুজ্জামান বলেন,‘রাস্তা পার হয়ে দু’টি বাসের মধ্য থেকে একটা ছেলের দেহ বের করতে দেখি। দুই বাসের মধ্যে পড়ে থেতলে গিয়েছিল তার শরীর।’
নুরুজ্জামান আরো বলেন, দু’টি বাসের মধ্যে পিষ্ট হওয়ার পর ছেলেটিকে নিয়েই বেশ কিছুটা দূরত্ব পার করে বাস দু’টি।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, রাস্তা পার হওয়ার সময় জেব্রা ক্রসিংয়ের ওপরই আবরারকে চাপা দেয় একটি বাস, যাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার।
সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের একটি বাস শিক্ষার্থীদের নিতে ঐ এলাকায় আসে। বসুন্ধরা নিবাসী আবরার রাস্তার একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্তে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়।
ঘটনাস্থলে নিহত আবরারের বাবাও উপস্থিত ছিলেন। তিনি রাস্তার একপ্রান্তে দাঁড়িয়েছিলেন এবং আবরার রাস্তা পার হয়ে আরেক প্রান্তে গিয়ে বাসে উঠতে যাচ্ছিল।
এই ঘটনার পরপরই বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার মূল প্রবেশপথের সামনে রাস্তা অবরোধ করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করলেও শিক্ষার্থীরা রাস্তা থেকে সরে আসবে না বলে জানায়। মেয়র চলে যাওয়ার পর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সেখানে সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। এরপরও সড়ক আটকে বিক্ষোভ করতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।
রাস্তায় শিক্ষার্থীদের অবস্থানের কারণে রামপুরা, বাড্ডা, কুড়িল বিশ্বরোডসহ বিভিন্ন এলাকায় তীব্র যানজট তৈরি হয়।