ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলার পর মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) প্রথমবারের মতো বিশেষ পার্লামেন্ট অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছেন নিউ জিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এদিন মুসলিম রীতিতে সালাম দিয়ে ভাষণ শুরু করেন তিনি। ক্রাইস্টচার্চ হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং মুসলিমদের প্রতি সম্প্রীতি জানিয়ে জাসিন্ডা এ পদক্ষেপ নেন বলে মনে করা হচ্ছে।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ এলাকার দুটি মসজিদে বন্দুকধারীর হামলায় এ পর্যন্ত ৫০ জন নিহত হয়েছে। সন্দেহভাজন হামলাকারী ব্রেন্টন ট্যারান্টের মধ্যে শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী প্রবণতা পাওয়া গেছে। ট্যারান্ট মনে করে ‘মুসলিমদের জন্য ভীতিকর পরিস্থিতি’ তৈরি করা উচিত এবং শ্বেতাঙ্গরা ‘গণহত্যার শিকার।’ ক্রাইস্টচার্চে দুই মসজিদে হামলায় নিহতদের মধ্যে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, কুয়েত, সোমালিয়াসহ বিভিন্ন দেশের মুসলিম অভিবাসী, শরণার্থী ও স্থায়ী অধিবাসীরা রয়েছেন।
ক্রাইস্টচার্চের হামলার পর মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) প্রথমবারের মতো বিশেষ অধিবেশনে বসে নিউ জিল্যান্ডের পার্লামেন্ট। সেখানে ভাষণ দিতে গিয়ে শুরুতেই মুসলিম রীতিতে সবাইকে ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলেন জাসিন্ডা। বলেন, ক্রাইস্টচার্চ হামলার দিনটি ‘সবার মনে চিরদিন গেঁথে থাকবে’।
এদিন জাসিন্ডা আরডার্ন ক্রাইস্টচার্চ হামলাকারীর নাম মুখে না নেওয়ার শপথ নেন। অন্যদেরও হামলাকারীর নাম মুখে না আনার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের অনুরোধ করছি, যে ব্যক্তি অন্যদের জীবন কেড়ে নিয়েছে তার নাম না নিয়ে যারা জীবন হারিয়েছেন তাদের নাম নিন।’
এর আগে গত শনিবার (১৬ মার্চ) ক্রাইস্টচার্চ শহর পরিদর্শনে যান জাসিন্ডা। সেখানে মুসলিম ও শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। ওইদিন ইসলামি রীতিতে মাথায় কাপড় দিয়ে রাখতে দেখা যায় জাসিন্ডাকে। তখনও বলা হয়েছিল, হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েই মাথায় কাপড় দিয়েছিলেন নিউ জিল্যান্ড প্রধানমন্ত্রী।
নিউ জিল্যান্ডবাসীও এই মর্মান্তিক ঘটনায় নিহতদের স্মরণে শ্রদ্ধা জানিয়ে যাচ্ছেন। ফুল দেওয়ার স্থানগুলো ভরে গেছে। ফুলের সঙ্গে রয়েছে সমবেদনা জানিয়ে লেখা চিরকুটও।