নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুইটি মসজিদে গত শুক্রবার সন্ত্রাসী হামলায় ৫০ জন নিহত হয়। পুরো বিশ্ব এতে হতভম্ব হয়ে পড়ে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন ওই হামলার কিছুক্ষণের মধ্যেই সংবাদ সম্মেলনে ভাষণ দিয়ে এ হামলার তীব্র নিন্দা করেন। ওই দিনটিকে নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসের অন্যতম কালো দিন বলে আখ্যা দেন।
পরদিন শনিবার তিনি বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, এমপিদের নিয়ে ক্রাইস্টচার্চের মুসলিম নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাত করেন। সে সময় মাথায় ওড়না দেয়া জেসিন্ডার চেহারা ছিল বিমর্ষ। তার ঠোঁটে পরিষ্কারভাবে উদ্বেগ পরিলক্ষিত হচ্ছিল। তার হাতগুলো তিনি বারবার কচলাচ্ছিলেন। এ সময় তিনি কোনো কথা বলেননি। বরং চুপচাপ সব কিছু শুনে যাচ্ছিলেন।
ক্রাইস্টচার্চের সিটি কাউন্সিলের ফটোগ্রাফার কির্ক হ্যারগ্রেভেসের তোলা এই ছবি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
শনিবার আরডার্ন শরণার্থী শিবিরগুলো পরিদর্শন করেন এবং ক্রাইস্টচার্চের মুসলিম নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাত করেন। সে সময় কালো পোশাক পরিহিতা জেসিন্ডা ছিলেন অশ্রুসজল। ওই সাক্ষাতে তিনি বলেন, এই দুঃখজনক ঘটনায় পুরো দেশ আজ ঐক্যবদ্ধ।
মর্মান্তিক ওই ঘটনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওটা নিউজিল্যান্ড নয়। নিউজিল্যান্ড এটাই, যা আপনারা এখন দেখছেন।
তিনি যখন ওই মুসলিমদের সাথে সাক্ষাতের জন্য নির্দিষ্ট কক্ষে প্রবেশ করেন, তখন হ্যারগ্রেভেস বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি বলেন, রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে আমি বাইরে থেকে তার অন্যরকম একটি ছবি বা মুহূর্ত আবিষ্কার করি। তার চেহারায় তখন যেন আধারের কিছু বুদ্বুদ ফুটে উঠেছিল।
তখন আমি চমকে উঠলাম। ভাবলাম, এ কোন জেসিন্ডা আরডার্ন। বিভিন্ন রঙের মিশ্রণে, হিজাব পরিহিতা এই প্রধানমন্ত্রীকে দেখে মনে হচ্ছিল, পুরোপুরি ধার্মিক একজন নারী। আমার কাছে মনে হলো এটি সার্বজনীন একটি ছবি।
পরে এই ছবিটি সিটি কাউন্সিলের টুইটারে দেয়া হয় কোনো রকম সম্পাদনা ছাড়াই। তারপর সারা বিশ্বে এই ছবিটি ছড়িয়ে পড়ে।