দীর্ঘ অসুস্থতার পর রোববার পরলোকগমন করেছেন ভারতের গোয়া রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা দেশটির সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পাররিকর। বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারের জন্য অনেক দিন ধরেই চিকিৎসা চলছিল তার। চিকিৎসার জন্য বহুদিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও ছিলেন তিনি। বেশ কয়েক দিন ধরেই তার শরীর প্রবল খারাপ হতে থাকে। শনিবার সকালে তা পৌঁছে যায় একেবারে খারাপতম অবস্থায়।
গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই গোয়া, মুম্বাই, দিল্লি ও নিউ ইয়র্কের একের পর এক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যাতায়াত লেগেই ছিল তার। গোয়ার তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পাররিকর গত জানুয়ারিতেই জানিয়েছিলেন, “আমি আমার শেষ নিঃশ্বাস ফেলার আগে পর্যন্ত কাজ করে যাব জনগণের জন্য”।
গত কয়েক মাসে যতবারই প্রকাশ্যে এসেছেন তিনি, নাকে নল লাগানো ছিল। অত্যন্ত অসুস্থও দেখাচ্ছিল তাকে।
জানুয়ারিতেই গোয়ার বাজেট পেশ করার সময় তিনি বলেছিলেন, “বর্তমান পরিস্থিতির জন্য আমি বিস্তারিত বাজেট বক্তৃতা পেশ করতে পারছি না। কিন্তু একটা জোশ রয়েছেই। খুব উঁচুতারে বাঁধা জোশ রয়েছে। আর, আমি রয়েছি হুঁশেই”, তারপরই তিনি ওষুধ খান বলে জানায় সংবাদসংস্থা আইএএনএস।
এই বছরের শুরুতেই গোয়ায় একটি ব্রিজের উদ্বোধন করেন তিনি। যেখানে বহু লোককে উচ্ছ্বাসে ভাসিয়ে চিৎকার করে বলে উঠেছিলেন সেই বহু ব্যবহৃত পাঞ্চলাইন- হাউ’জ দ্য জোশ?
২০১৬ সালে নিয়ন্ত্রণ রেখায় কথিত সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করার সময় মনোহর পাররিকর ছিলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তার আমলেই রাফায়েল যুদ্ধবিমান নিয়ে ফ্রান্স ও ভারতের মধ্যে দ্বিতীয়বার সন্ধিস্থাপন করা হয়। যদিও, কংগ্রেসের দাবি অনুযায়ী, মনোহর পাররিকরওই চুক্তির ব্যাপারে কিছুই জানতেন না। গোয়ায় তার সরকারের জোটে যে দলগুলি রয়েছে, সেগুলো হলো- গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টি, মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্ত্রক পার্টি এবং তিনটি নির্দল।
তার অসুস্থতার কথা মাথায় রেখেই শনিবার কংগ্রেস গোয়ার রাজ্যপালের কাছে সরকার ভেঙে দেয়ার দাবি জানিয়েছিল।
সেই আবেদনে এখনো সাড়া দেননি রাজ্যপাল। মনোহর পাররিকরের মৃত্যুর পর এখন গোয়ার রাজনীতি কোন পথে এগোয় তা দেখার জন্য উৎসাহ নিয়ে অপেক্ষা করছে ওয়াকিবহালমহল।