পাকিস্তানের বালাকোটে ভারতীয় বিমান বাহিনীর বোমাবর্ষণে জইশ দলের কারো কোনো ক্ষতি হয়নি, সবাই জীবিত এবং সম্পূর্ণ সুস্থ—পাকিস্তানভিত্তিক গ্রুপ জইশ-ই-মোহাম্মদের মুখপত্র আল-কালাম- এ এই দাবিই করল জইশ প্রধান এবং পুলওয়ামার আত্মঘাতী হামলার জন্য ভারতের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত মাসুদ আজহার। শুধু তাই নয়, নিজের লেখায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তিরন্দাজি অথবা শুটিং-এর প্রতিযোগিতায় নামার চ্যালেঞ্জও ছুড়েছে।
জইশ-ই-মোহাম্মদের মুখপত্র হিসেবে আল-কালামকেই চেনে সারা দুনিয়া। সেখানেই ‘সাদি’ নামে লেখে খোদ জইশ প্রধান মাসুদ আজহার। জানা গিয়েছে, এই মুখপত্রের সাম্প্রতিক সংখ্যায় পুলওয়ামা ঘটনা এবং তার পরবর্তী বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে লিখেছে মাসুদ আজহার।
বালাকোটে ভারতীয় বিমান বাহিনীর বিমান হামলায় যে আদৌ কোনো ক্ষতি হয়নি এবং ভারত যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মিথ্যা ছড়াচ্ছে, এমনটাও দাবি করেছে মাসুদ। তার কথায়, ‘আমরা সবাই বেঁচে আছি এবং ভালো আছি। আমার কিডনি এবং লিভারও খুব ভালো অবস্থায় আছে এখন।’
আল-কালাম নামের এই সাপ্তাহিক পত্রিকায় সাদি নামেই লেখে মাসুদ। কিন্তু এই সংখ্যায় মাসুদ নিজে লিখেছে নাকি অন্য কেউ তার হয়ে লিখে দিয়েছে, তা নিয়ে অবশ্য সংশয় আছে বিভিন্ন মহলে। যদিও আল-কালামই যে জইশের প্রধান মুখপত্র, তা নিয়ে কারো কোনো সন্দেহ নেই।
লেখাটিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কটাক্ষ করেছেন মাসুদ। তিনি বলেছেন,‘আমি নরেন্দ্র মোদির মতো নই। আমি একজন সম্পূর্ণ সুস্থ মানুষ। আমি নরেন্দ্র মোদিকে তিরন্দাজি অথবা শুটিং প্রতিযোগিতায় নামার আহ্বান জানাচ্ছি। তা হলেই বোঝা যাবে কে বেশি ফিট।’
পাশাপাশি মাসুদের দাবি, পৃথিবী জুড়ে তার স্বাস্থ্য নিয়ে যে আলোচনা হচ্ছে তা আসলে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচার। তার কথায়, ‘গত ১৭ বছর ধরে অসুস্থতার জন্য জইশের কেউ হাসপাতালে যায়নি। কখনো কোনো চিকিৎসকেরও প্রয়োজন পড়েনি।’ নিজের ভালো স্বাস্থ্যের জন্য ‘কোরআন’ নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাকেই কারণ হিসেবে দেখিয়েছে সে। তার দাবি, এই কারণে মানসিক উত্তেজনা বা ডায়াবিটিস থেকেও সে সম্পূর্ণ মুক্ত।
সাপ্তাহিক পত্রিকাটিতে পুলওয়ামা আত্মঘাতী হামলা নিয়েও নিজের পুরনো অবস্থানে অনড় থাকার কথা জানিয়েছে জইশ-ই-মোহাম্মদ। জইশ প্রধান মাসুদের দাবি, ‘এই নাশকতা আসলে স্বাধীনতার যুদ্ধ। কাশ্মীরিদের হৃদয়ে আগুন জ্বেলে দিয়েছে পুলওয়ামার আত্মঘাতী যুবক আলি আহমদ দার। এই আগুন সহজে নিভবে না। তা ছড়িয়ে পড়বে সারা কাশ্মীরে।’