প্রতি সপ্তাহে যেমন করতেন, ১১ বছরের ছেলেকে নিয়ে ডিনস অ্যাভিনিউর আল নুর মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন ৩৯ বছর বয়সী রহিমি আহমদ।
রহিমি মসজিদের ভেতর চলে গেলেও বাইরে রয়ে গিয়েছিল তার ছেলে। সেখানেই সে খেলছিল অন্যদের সাথে। এ সময়ই মসজিদের ভেতর থেকে আওয়াজ আসতে থাকে বন্দুকের গোলাগুলির। অবস্থা দেখে মসজিদমুখী আরেক মুসল্লি ছেলেটির হাত ধরে সেখান থেকে নিয়ে অন্য একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন।
তখন থেকে আর কেউ রহিমির খবর দিতে পারে নি। তার স্ত্রী আজিলা উদ্বিগ্ন হয়ে তার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তিনি বলেন, আমি শুধু এতটুকু জানতে চাই যে, তিনি নিরাপদে আছেন। আমি প্রার্থনা করছি ও আশা করছি, তিনি আমাদের কল করবেন। রহিমির সাথে তার মোবাইল ফোনটি ছিল। সুতরাং আমি নিশ্চিত তিনি শীঘ্রই ফোন করবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমি জানি না, তার কী হয়েছে।
আজিলা জানান, রহিমি ছেলেকে সাথে নিয়ে একটার দিকে মসজিদে গিয়েছিলেন। কিন্তু যখন থেকেই তিনি মসজিদের ঘটনাটি শুনেন, তখন থেকে আজিলা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। পরে তার এক বন্ধুর কাছে জানতে পারেন যে, তার সন্তান নিরাপদে আছে। কিন্তু রহিমি ওই সময় মসজিদের ভিতরেই ছিল। ফলে গোলাগুলির মুখে হয়তো পড়েগিয়েছিলেন তিনি।
আজিলা বলেন, আমার ছেলেটি বাইরে খেলছিল। যখন গোলাগুলির এ ঘটনা ঘটল, তখন আমাদের এক বন্ধু তাকে সরিয়ে নিয়ে যায় এবং মসজিদের পাশে আরেকজনের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। কিন্তু ওই বন্ধুও রহিমির কোনো খবর জানেন না।
আজিলা জানান, রহিমি মূলত মালয়েশিয়ার পেনাঙের বাসিন্দা। তার পরিবার পাঁচ বছর ধরে ক্রাইস্টচার্চে বসবাস করছে। রহিমি ও আজিলা দম্পতির দুই সন্তান রয়েছে।
তিনি বলেন, এখন আমাদের সবাইকে ঘরের ভিতরেই থাকতে বলা হয়েছে। আমি আসলেই জানি না, কী ঘটেছে বা কী হয়েছে। আমি শুধু অপেক্ষা করছি ও প্রার্থনা করছি যে, আমি তার কাছ থেকে অথবা যে কারো কাছ থেকে এতটুকু শুনতে পারবো যে, তিনি ভালো আছেন।
এদিকে সেন্টারবুরি মালয়েশিয়ান সোসাইটির সভাপতি স্যাম ইয়াউ বলেন, তিনি রহিমির ব্যাপারে মালয়েশিয়ার হাই কমিশনারের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু তারাও রহিমির ব্যাপারে কোনো কিছু জানাতে পারেনি।
মালয়েশিয়ার পত্রিকা দ্য স্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মালয়েশিয় হাইকমিশনার নিশ্চিত করেছে, একজন মালয়েশিয় নাগরিক আহত হয়েছেন। অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে বলা হচ্ছে, আরেকজন মালয়েশিয় নাগরিক এ ঘটনায় নিহত হয়েছেন।
মালয়েশিয়ার হাই কমিশনার এক টুইটে জানিয়েছেন, হাইকমিশন এ ঘটনার প্রেক্ষিতে সর্বশেষ তথ্য পেতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। এ পর্যন্ত যা জানা গেছে, সে হিসেবে একজন মালয়েশিয় নাগরিকের আহত হওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। এবং সে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সূত্র : নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড