অনুশীলন শেষ করে পবিত্র জুমার নামাজ আদায় করতে হাগলি ওভাল স্টেডিয়াম সংলগ্ন মসজিদ আল নুরে যাচ্ছিলেন দলের খেলোয়াড়রা। পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টায় মসজিদে থাকার কথা ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের।
কিন্তু ম্যাচের আগের দিন আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে পাঁচ-ছয় মিনিট সময় বেশি ব্যয় করে ফেলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আর এই পাঁচ মিনিটই যেনো বাঁচিয়ে দিয়েছে পুরো বাংলাদেশ দলকে। কেননা পাঁচ মিনিট আগে সংবাদ সম্মেলন শেষ করলে হয়তো মসজিদে আগেই যাওয়া হতো।
কিন্তু সংবাদ সম্মেলনে বেশি সময় লেগে যাওয়ায় মসজিদে পৌঁছতে প্রায় ১টা ৪০ মিনিট হয়ে যায়। আর এতেই যেনো বেঁচে যান তামিম, মুশফিক, তাইজুল, মিরাজরা। নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ‘দেরি’ হয়ে যাওয়ায় বাস থেকে নেমেই তড়িঘড়ি করে মসজিদের পথে পা বাড়ান মুশফিক- তামিমরা। পথিমধ্যে তাদের আটকে দেন বাসের পাশেই গাড়িতে থাকা আহত এক নারী। তিনি মুশফিক-তামিমদের বারণ করেন সামনের দিকে যেতে।
ওই নারীই জানান, ওই মসজিদে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে আর আশপাশের অনেকেই গুলিবিদ্ধ। এমন দুঃসংবাদে ক্রিকেটাররা প্রথমে নিজেদের টিম বাসে অবস্থান নিলেও ওই জায়গায় কোনো নিরাপত্তা কর্মী বা নিউজিল্যান্ডের স্থানীয় কাউকে দেখতে পাননি।
তাই উপস্থিত বুদ্ধিতে বাস থেকে হাগলি পার্কের মধ্য দিয়ে আবার মাঠে ফিরে আসেন সবাই। প্রাণে বেঁচে যান বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা।
পরে স্টেডিয়ামের ড্রেসিংরুমে কিছুক্ষণ অবস্থান করে সবাই মিলে চলে যান টিম হোটেলে। সেখানে আগেই ছিলেন দলের কোচিং স্টাফরা।
এমন ভয়াবহ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ইতিমধ্যে তামিম ইকবাল নিজের টুইটার একাউন্টে লিখেছেন, ‘পুরো দল গোলাগুলির হাত থেকে বেঁচে গেলো। খুবই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা, সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’
বাংলাদেশ দলের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম তার টুইটে বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ্! ক্রাইস্টচার্চে হামলার ঘটনা থেকে আল্লাহ্ আজ আমাদের বাঁচিয়ে দিলেন। আমরা অনেক বেশি ভাগ্যবান। কখনোই এমন ঘটনার সম্মুখীন হতে চাই না। আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’
এ রকম কাপুরুষদের কোনো ধর্ম ও জাতি নেই: আজহার আলী
নিউজিল্যান্ডের মসজিদে ভয়াবহ হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে টুইট করেছেন পাকিস্তান জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক আজহার আলী।
টুইট বার্তায় তিনি বলেন, এ হামলায় যাদের পরিবারের মানুষ নিহত হয়েছেন তাঁদের কথা ভেবে আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এখানে খেলোয়াড় ও বুদ্ধিজীবীরাও আক্রান্ত হয়েছেন। তারপরও বাংলাদেশ দল নিরাপদে আছে তা শুনে স্বস্তিবোধ করছি। এরকম কাপুরুষদের কোনো ধর্ম ও জাতি নেই।
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে ভয়াবহ হামলায় প্রাণে বেঁচে গেছেন বাংলাদেশের জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। ওই মসজিদে বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা পবিত্র জুমা আদায় করার কথা ছিল। মসজিদের ভেতরে গুলির প্রচণ্ড আওয়াজ শুনে বাইরে থাকা ক্রিকেটাররা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে রক্ষা পান।
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলার ঘটনার পর বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা একটি পার্কের মধ্য থেকে হেঁটে নিরাপদ আশ্রয়ে যাচ্ছেন৷ এসময় তাদের নিরাপত্তা দিতে কোনও পুলিশ সদস্যকে দেখা যায়নি৷
মসজিদে সন্ত্রাসীর ওই এলোপাতারি গুলিতে ৪৯ জন নিহত হন। ভয়াবহ এ হামলায় সারা বিশ্বে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় বইছে।
সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের ক্রিকেটাররা নানাভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন এ ঘটনার।