বিপুল বাংলাদেশীসহ চার লক্ষাধিক অবৈধ অভিবাসীকে শর্তসাপেক্ষে গ্রিনকার্ড প্রদানের একটি বিল ১২ মার্চ মঙ্গলবার উঠেছে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে। ‘দ্য ড্রিম অ্যান্ড প্রমিজ অ্যাক্ট’ শিরোনামে এই বিলটি উপস্থাপন করেছেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির তিন কংগ্রেসওম্যান। তারা হলেন- নিউ ইয়র্কের নিদিয়া ভ্যালেস্কুয়েজ এবং ইয়েভেটি ডি ক্লার্ক ও ক্যালিফোর্নিয়ার লুসিলে য়বেল-এলার্ড। শিশুকালে মা-বাবার সাথে বেআইনি পথে যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর যারা বৈধতা পায়নি, যদিও আমেরিকার আলো-বাতাসেই তারা বড় হয়েছে এবং উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছে। এমন ৩৬ লাখের অধিক তরুণ-তরুণীকে ড্রিমার বলা হয়। সেই ড্রিমারদের বহিষ্কারের নির্দেশ প্রত্যাহার করেছিলেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। পরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এসে সেই প্রটেকশন অর্ডার উঠিয়ে নেয়ার বিশেষ আদেশ জারি করেন। সেই আদেশ বহাল হওয়ার আগেই উচ্চতর আদালতের স্থগিতাদেশ জারি হলেও সংশ্লিষ্টদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার অবসান ঘটেনি।
উত্থাপিত বিলে আরো তিন লক্ষাধিক অভিবাসী রয়েছেন সেন্ট্রাল আমেরিকা, আফ্রিকা এবং দক্ষিণ এশিয়ার নেপালের। এসব দেশে দাঙ্গা-হাঙ্গামা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরিপ্রেক্ষিতে লোকজন নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে বেআইনি পথে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দিয়েছেন কিন্তু বৈধতা পাননি। তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরৎ পাঠালে অমানবিক পরিস্থিতির মধ্যে নিপতিত হবেন আশঙ্কায় প্রেসিডেন্ট ওবামা টিপিএস প্রোগ্রাম ঘোষণা করেন। সেটিও উঠিয়ে নেয়ার নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন ট্রাম্প। সেই আদেশও ঠেকানো হয়েছে উচ্চ আদালতের মাধ্যমে।
এই বিল সম্পর্কে প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলসি বলেছেন, ডেমোক্র্যাটরা সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায় প্রতিনিধি পরিষদে তা পাস হলেও রিপাবলিকান শাসিত সিনেটে পাস হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তবে আমরা চাচ্ছি এর সমর্থনে ব্যাপক জনমত গড়তে, যার ঢেউ লাগবে সামনের বছরের জাতীয় নির্বাচনে।
কংগ্রেসের উভয় কক্ষ ডেমোক্র্যাটদের নিয়ন্ত্রণে এলে অবৈধ অভিবাসীদের দুশ্চিন্তার অবসানের পথ সুগম হবে বলে মনে করছেন ডেমোক্র্যাটরা। এর বাইরেও লক্ষাধিক বাংলাদেশীসহ প্রায় সোয়া কোটি বিদেশী রয়েছেন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে। এর মধ্যে যারা কোনো অপরাধে লিপ্ত নেই এবং যারা নিয়মিতভাবে কাজ করছেন ও ট্যাক্স দিচ্ছেন, তাদের গ্রিনকার্ড প্রদানের বিল এর আগে ডেমোক্র্যাট শাসিত প্রতিনিধি পরিষদে পাস হলেও রিপাবলিকানদের সমর্থন পায়নি।