গ্যাসের দাম বাড়ানোর গণশুনানির নামে সরকার প্রতারণা করছে জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, যারা ক্ষমতা দখল করেছে তারা আজকে দিশেহারা। তাদের অ্যাকশন যেগুলো দেখছেন-এগুলো হচ্ছে দিশেহারা অবস্থানের অ্যাকশন।
কারণ মানুষ যখন নিজের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলে তখন তার প্রতিদ্বন্দ্বীর সাথে সে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করে না, তাকে ধ্বংস করে দিতে চায়।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, উপজেলা পরিষদের প্রথম পর্ব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ক্ষমতাসীন দলের ভোট কারচুপির বিষয়টি তুলে ধরতে গিয়ে আজ বুধবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, কারণ সে রাজনৈতিকভাবে প্রকাশ করতে পারছে না বিধায় তাকে ধ্বংস করতে চায়।
এজন্য বেগম খালেদা জিয়াকে ধ্বংস করতে হবে, তারেক রহমান সাহেবকে ধ্বংস করতে হবে। কারণ প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টিকে থাকার কোনো সুযোগ নাই। তারা জনগণের ভোটে যখন নির্বাচিত হবে না তখন রাত্রে তাদের ব্যালট বাক্স ভর্তি করতে হবে, পরেরদিন তাদের পোলিং স্টেশন দখল করতে হবে এবং সেই কাজ করার জন্য তারা একটি প্রকল্প সৃষ্টি করেছে। সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলোতে আপনারা সেটা দেখেছেন।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ মিলনায়তনে বাংলাদেশ জাতীয় দলের উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১৩তম কারাবন্দি দিবস উপলক্ষ্যে এই আলোচনা সভা হয়। সংগঠনের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, জেবা আমিন খান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিএনপির সামনে আজকে তাদের টিকে থাকার সুযোগ নাই। আজকে আমরা অনেক বেশি শক্তিশালী। আমাদের নেতা-কর্মীদের ত্যাগ তিতীক্ষা তারা বার প্রমাণ করেছে এবং ইদানিং যেসব নির্বাচন হয়েছে সেখানেও তারা প্রমাণ করেছে।
তিনি বলেন, যখন একনায়কতন্ত্র তার চরম শীর্ষ পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছে, যেটা আমরা বাংলাদেশে দেখতে পারছি তখন মনে করবেন তার ভঙ্গুরতায় সবচাইতে বেশি। তার পতন ততই কাছে এসেছে, তার পতন অনিবার্য এবং অতিসত্বর তা হবেই। বর্তমান সংকটে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থেকে নাগরিক কর্তব্য জোরদার করার আহবানও জানান তিনি।
‘গ্যাসের দাম : গণশুণানীর নামে সরকার প্রতারণা করছে’ জানিয়ে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, গ্যাসের দাম বার বার বাড়াচ্ছে। গণশুণানী হচ্ছে- কত বড় একটা প্রতারণা দেখেন? গণশুণানীর নাম দিয়ে গ্যাসের দাম বাড়ানো হচ্ছে। এর থেকে বড় প্রতারণা কী হতে পারে? কত গুন বাড়াচ্ছে।
আমি সরকারি পরিসংখ্যান দেখে বলছি, গত ১০ বছরে বাংলাদেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে, মানুষের প্রকৃত আয় কমে গেছে। তার উপরে আপনি বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে, গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছেন। দরিদ্র মানুষ, নিম্ন আয়ের মানুষ তাদের জীবন-যাত্রার মান কোথায় গিয়ে দাঁড়াচ্ছে। সবকিছু উপেক্ষা করে যেহেতু তাদের জবাবদিহিতা নেই তারা কিন্তু প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, পরিসংখ্যান থেকে আমি বলছি, কয়েক শতাংশ মানুষের হাতে বাংলাদেশের মানুষের সমস্ত সম্পদ পুঞ্জিভুত হচ্ছে। এরা হাজার কোটি লক্ষ কোটি টাকার মানুষ হয়ে যাচ্ছে। এরা কারা আমরা সবাই জানি। এদের জন্য সরকারের সমস্ত নীতিমালা প্রণীত হচ্ছে। এদের সুবিধার্থে সরকার পরিচালিত হচ্ছে।
এই দেশে যে চক্র সৃষ্টি হয়েছে এই কয়েক শতাংশ ধনী লোক, কিছু সরকারি কর্মকর্তা-রাজনীতিবিদ এদের যে একটা ম্যাকসাস। এরাই কিন্তু ব্যবসা-বাণিজ্য করছে এরা, দেশও পরিচালনা করছে ওরা, দেশের সমস্ত নীতিমালা-সিদ্ধান্ত তারাই নিচ্ছে। দেশের মানুষের সাথে এর কোনো সম্পৃক্ততাই নেই। কারণ মানুষের তো মালিকানাই নাই। এই অবস্থায় গিয়ে আমরা যে পৌঁছেছি এটা হচ্ছে নিম্নগামী একটা যাত্রা। এটা কোথায় গিয়ে ক্রাস করবে আমরা কেউ জানি না।